সিলেটে ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিরন মাহমুদ নিপুর ‘স্প্রকেট ‘অস্ত্রধারীদের হাতে ছাত্রলীগ কর্মী আরিফ আহমদ (১৯) হত্যার আসামিদের গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও রাস্তায় বসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন এলাকাবাসী।
শনিবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে সিলেট নগরীর বালুচর পয়েন্টে নিহত এলাকাবাসীর আয়োজনে মানববন্ধন হয়। পরে আরিফের মা আঁখি বেগম সড়কে অবস্থান করেন। এর আগে আরিফ হত্যাস্থল টিবিগেট এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল হয়।
সড়কে প্রায় আধা কিলোমিটার আরিফের মায়ের অবস্থানকালে এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেন। এ সময় সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা অবস্থান কর্মসূচি শেষ করেন।
অবস্থান চলাকালে আরিফের মা আঁখি বেগম কান্নাকাটি করেন। তিনি বিলাপ করে ছেলে হত্যাকারীদের বিচারের আর্তি জানান। তার সঙ্গে এলাকাবাসীও একাত্ম হয়ে সড়কে অবস্থান নেন। আঁখি বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ছেলে খুন হওয়ার ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত প্রধান আসামি ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ছেলের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করা না হলে তিনি এলাকাবাসীদের নিয়ে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দেন।
গত সোমবার (২০ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে নগরের বালুচর টিবিগেট এলাকায় আরিফ আহমদকে (১৯) কুপিয়ে হত্যা করে ফেলে যায় প্রতিপক্ষের কর্মীরা।
তাকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাত একটার দিকে আরিফ মারা যান। আারিফ টিলাগড় এলাকার স্টেইট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলামের অনুসারী ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে পরিচিত।
বালুচর এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সিসিকের ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিরন মাহমুদ নিপুর পক্ষের সঙ্গে আরিফের বিরোধ ছিল। নতুন অস্ত্র ‘স্প্রকেট’ (চাকতির মতো) নিয়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের পক্ষে মহড়ার প্রতিবাদ করায় আরিফকে হত্যা করা হয় বলে তার মা আঁখি বেগমসহ পরিবারের সদস্যরা দাবি করছেন।

এ ঘটনায় বুধবার নিহত আরিফের মা আঁখি বেগম বাদী হয়ে সিলেটের শাহপরান থানায় মামলা করেন। মামলায় সিলেট সিটি করপোরেশনের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হিরণ মাহমুদ নিপুসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়।
পুলিশ ঘটনার পরদিন নগরীতে অভিযান চালিয়ে দুজনকে আটক করে। পরে দায়েরকৃত মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। কিন্তু প্রধান আসামিসহ অন্যান্য আসামি কাউকে গ্রেপ্তার হয়নি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুজিত চক্রবর্তী জানান, এজহারভুক্ত সব আসামিই গা-ঢাকা দিয়েছে।
আসামিদের অবস্থান জানতে গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।