প্রতিনিধি ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ২:১৭:০২ অনলাইন সংস্করণ
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: ছাগলের ধান খাওয়া নিয়ে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের ইসলামপুর উত্তর হাটির একদল মাদকসেবী সন্ত্রাসীরা দাড়াঁলো অস্ত্র নিয়ে এক কৃষকের বসতঘরে ঢুকে হামলা চালিয়ে কুপিয়ে ও পিঠিয়ে এক কৃষক দম্পতি ও শ্বশুরসহ ৩জনকে গুরুতর আহত করার ঘটনা ঘটেছে। গত ২৬ আগষ্ট দুপুরে এ হামলার ঘটনাটি ঘটে।
আহতরা হলেন মো. আব্দুল্লাহ মিয়া(৩৫),তার স্ত্রী মুন্নি আক্তার(২৫) ও আব্দুল্লাহ”র শ্বশুর মো. ফরিদ মিয়া(৭০)। আহত আব্দুল্লাহ হলেন একই উপজেলার পাশর্^বর্তী সুরমা ইউনিয়নের হালুয়ারঘাট গ্রামের সুলতান মিয়ার ছেলে। তাদের চিৎকার শুনে স্বজনরাসহ আব্দুল্লাহ”র বৃদ্ধা শ^শুর ফরিদ মিয়া (৭০) ঘটনাস্থলে আসলে হামলাকারীরা তাকে ও টেনেহেচঁড়ে মাটিতে ফেলে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। পরে অন্যান্য স্বজনরা এসে আহতদের তাৎক্ষনিক উদ্ধার সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে এনে প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। আহত আব্দুল্লাহ”র শরীরের বিভিন্নস্থানে এবং বাম কানে দাড়াঁলো অস্ত্র দা দিয়ে কোপ দিলে কানে প্রচন্ড আঘাতপ্রাপ্ত হন। এছাড়াও লাঠিসোটা দিয়ে আব্দুল্লাহ,তার স্ত্রী মুন্নি আক্তার ও শ্বশুর ফরিদ মিয়ার শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাত করে রক্তাক্ত করে। তাৎক্ষনিক আহত আব্দুল্লাহ মিয়া ও তার স্ত্রীকে নিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে আসার পথে হামলাকারীরা বাধার সৃষ্টি করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,আহত কৃষক আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে বিবাহ করার সুবাদে তিনি দীর্ঘদিন ধরে তার স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে ইসলামপুর গ্রামে বসবাস করে আসছিলেন। ঘটনার দিন গত ২৬ আগষ্ট দুপুরে কৃষক আব্দুল্লাহ মিয়ার বাড়ির পাশে রোপনকৃত আমন রকম ভূমিতে পাশের বাড়ির শিশু মিয়ার দুটি ছাগল এসে ধান খাচ্ছিল দেখে আব্দুল্লাহ এই দুটি ছাগলকে ধরে তার বাড়িতে নিয়ে আসেন। খবর পেয়ে শিশু মিয়া,তার স্ত্রী স্বপনেহের বেগম ও তাদের তার দুই ছেলে চিহিৃত মাদক বিক্রেতা ও সেবনকারী রমজান মিয়া, আলামিন দেশীয় দাড়াঁলো অস্ত্র দা,লাঠিসোটা নিয়ে আব্দুল্লাহ”র বাড়িতে এসে ছাগল ধরে নিয়ে আসার কারণ জানতে চান। আব্দুল্লাহ তার রোপনকৃত আমন জমির ধান ছাগল খেয়েছে বলার সাথে সাথে শিশু মিয়া ও তার মাদকসেবী ছেলেরা আব্দুল্লাহ”র বসত ঘরে ঢুকে আব্দুল্লাহ মিয়া ও তার স্ত্রীর উপর অতর্কিতে হামলা চালিয়ে তাদেরকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে।
এ সময় আব্দুল্লাহ”র ন্ত্রীর কানে আট আনা ওজনের স্বর্ণের কানের দোল (যার আনুমানিক বাজার মূল্যে ৫০ হাজার টাকা) ও নগদ ২০হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং হামলাকারীরা যাওয়ার সময় বলে যায় বেশী বাড়াবাড়ি করলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি ও দেয় তারা। এদিকে হামলাকারেিদও উপর একাধিক মামলা ও রয়েছে বলে জানা যায়।
এ ঘটনায় সোমবার(২৮শে আগষ্ট) বিকেলে আহত আব্দুল্লাহ বাদি হয়ে হামলাকারী ইসলামপুর উত্তর হাটি গ্রামের শিশু মিয়ার দুই ছেলে চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারী রমজান মিয়া,আলামিন এবং মৃত লিল মাষ্ঠারের ছেলে শিশু মিয়াকে আসামী করে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার পর পরই আহতরা বিষয়টি স্থানীয় ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বিল্লাল হোসেনকে অবহিত করা হয়।
এ ব্যাপারে আহত আব্দুল্লাহ জানান,আমি একজন গরীব কৃষক হিসেবে ৪ কেদার আমন জমি চাষাবাদ করি। কিন্তু হামলাকারীদের ২টি ছাগল প্রতিদিনই আমার রোপা আমন জমির ধান খায়। ঘটনার দিন আমি দুটি ছাগলকে ধান ক্ষেতে দেখে ধরে নিয়ে আসলেই শিশু মিয়া,স্ত্রী স্বপনেহার বেগম ও তাদের তার দুই মাদক বিক্রেতা ছেলে রমজান মিয়া,আলামিন দাড়াঁলো অস্ত্র দা ও লাঠিসোটা নিয়ে আমার বসতবাড়িতে ঢুকে আমাকে দা দিয়ে কুপিয়ে বাম কানে রক্তাক্ত ছাড়াও আমার ন্ত্রী ও শ^শুরকে লাঠিসোটা দিয়ে আঘাত করে। পরে আমার স্ত্রীর কানে থাকা আটআনা ওজনের সোনার দোল ও নগদ ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমরা বেশী বাড়াবাড়ি করলে নাকি আমাকে হত্যার হুুমকি ও দিয়ে যায়। তিনি বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পুলিশ প্রশাসনের নিকট দাবী জানান।
এ ব্যাপারে হামলাকারী আলামিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে ফোনটি বন্ধ থাকায় বক্তব্যে জানা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বিল্লাল হোসেন হামলার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,আমি এখনো হামলাকারীদের সাথে যোগাযোগ করিনি,তবে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিয়ে একসাথে বসে শেষ করার আশ^াস প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।