• সারাদেশ

    বিশ্বম্ভরপুরের মাছিমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের নিকট হতে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ

      প্রতিনিধি ২৩ জুন ২০২৩ , ১২:১৪:১৯ অনলাইন সংস্করণ

    সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের মাছিমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সরকারীভাবে শিক্ষক থাকার পরও অতিরিক্ত শিক্ষক রাখার কথা বলে শিক্ষকরা গরীব ছাত্রছাত্রীদের প্রতিজনের নিকট হতে মাসিক ৪০ টাকা করে চাঁদা বিষয়ে নির্বাহী অফিসার ও ধনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবরে আলাদাভাবে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

    বৃহস্পতিবার সকালে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ২৪জন অভিভাবক স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ধনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবরে আলাদাভাবে দেয়া হয়।

    এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশাসনের তরফ থেকে সোকজ করা হয়েছে এবং তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ ও দেয়া হয়েছে বলে জানা যায়।

    অভিযোগ সূত্রে জানা মাছিমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকরা অতিরিক্ত শিক্ষক হিসেবে স্থানীয় মাছিমপুরের জুয়েল মিয়াকে শিক্ষক হিসেবে মৌখিকভাবে রেখে ক্লাস পরিচালনা করার কারণে ছাত্রছাত্রীদের নিকট হতে প্রতিমাসে প্রতিজনের নিকট হতে ৪০ টাকা করে চাঁদা নিচ্ছেন। তারা কৃষক সমাজের স্বপ্লআয়ের মানুষ,কৃষিকাজ করে পরিবারের সদস্যদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করার পাশাপাশি ছেলেমেয়ের ভরসপোষন চালিয়ে যাওয়াই তাদের জন্য কষ্টদায়ক। এর মাঝে প্রতিমাসে যদি তাদের ছেলেমেয়ের পড়াশুনার জন্য আরো ৪০ টাকা করে দিতে হয় সেটা তাদের জন্য একটি বাড়তি চাপ বলে উল্লেখ করেন। এদিকে মাছিমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সময়মতো স্কুলে না আসায় ধনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিলন খান গত ২০জুন সকাল সাড়ে ৯টায় মাছিমপুর স্কুলে গিয়ে দেখতে পান ছাত্রছাত্রীরা সময়মতো স্কুলে আসলেও ক্লাসরুমে থালা লাগানোর কারণে শিক্ষার্থীরা বারান্দায় দাড়িঁয়ে রয়েছেন। অথচ সকাল ১০টার উপরে সোয়া ১০টা সাড়ে ১০টা বেজে গেলে ও স্কুলে শিক্ষকদের উপস্থিতি না দেখে চেয়ারম্যান নিজেই স্কুলের সামনে থেকে সরাসরি লাইভে আসেন এবং শিক্ষকদের সময়মতো স্কুলে না আসার কারণ জানতে চান । তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবীতে চেয়ারম্যান লাইভে এসে তিনি নিজে এবং ছাত্রছাত্রীদের উপস্থাপন করেন এবং উধর্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।

    এ ব্যাপারে অভিযোগকারী বিদ্যালয়ের অভিভাবক আব্দুল মালেক জানান,সরকারীভাবে স্কুলে শিক্ষক থাকার পর ও কেন অতিরিক্ত শিক্ষক রাখা হবে এমন অজুহাতে আমাদো ছাত্রছাত্রীদো নিকট হতে প্রতিমাসে ৪০ টাকা হাাে চাদাঁ নিচ্ছেন যা আমাদো মতো গরীব অভিভাবকদো পক্ষে কষ্টদায়ক হয়ে দাড়াঁয়। তিনি বলেন শিক্ষকরা সময়মতো স্কুলে না আসায় ক্লাসরুমে বন্ধ থাকার কারণে ছাত্রছাত্রীদের বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য তিনি প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেন।

    এ ব্যাপারে মাছিমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক শামছুন্নাহারের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ,শিক্ষার্থীদের নিকট হতে চাঁদা আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তবে প্রশাসনের তরফ থেকে তাদের সোকজ করার বিষয়টি স্বীকার করেন।

    এ ব্যাপারে ধনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিলন খাঁন জানান,আমি গত ২০ জুন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সোয়া ১০টা পর্যন্ত মাছিমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবস্থান করে দেখতে পাই বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষক না আসায় ক্লাসরুম বন্ধ থাকার ফলে শিক্ষার্থীরা বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। সরকার তাদের নিয়মিত বেতন ভাতা দিচ্ছেন কিন্তু শিক্ষকরা টাইমমতো স্কুলে আসবেন না এবং বিদ্যালয়ে ৫জন শিক্ষক থাকার পরও তারা অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ দিবেন এবং ছাত্রছাত্রীদের নিকট হতে প্রতিমাসে জনপ্রতি ৪০ টাকা করে চাঁদা নিবেন এটাতো হতে পারে না। তিনি এই কারণে লাইভে এসেছিলেন বলে জানান। তিনি বিষয়গুলো সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

    এ ব্যাপারে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম সরকার জানান,নীতিমালা অনুসারে প্রতিজন শিক্ষককে সকাল ৯টায় ক্লাসে যোগদান করতে হবে। তবে শিক্ষকরা সময়মতো স্কুলে না আসায় তাদেরকে সোকজ করা হয়েছে এবং কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। এই বিদ্যালয়ে তিনশত জনের উপরে শিক্ষার্থী রয়েছে। যদি কোন বিদ্যালয়ে শিক্ষকের তুলনায় ছাত্রছাত্রী সংখ্যা বেশী হয় সেক্ষেত্রে শিক্ষকরা মৌখিকভাবে অথবা চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ দিলেও ছাত্রছাত্রীদের নিকট হতে কোনভাবেই চাদাঁ নেওয়া যাবে না বলে জানান।

    এ ব্যাপারে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিউর রহিম জাদিদ অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,উপজেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে মাছিমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে সোকজ করা হয়েছে এবং ঈদের পরে চাদাঁ নেওয়ার বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ও তিনি জানান। ##

    সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
    ২২.০৬.২০২৩

    আরও খবর

    Sponsered content