প্রতিনিধি ২৩ মে ২০২৩ , ৩:৩৯:০২ অনলাইন সংস্করণ
আল-হেলাল,সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জের প্রবাসি অধ্যুষিত জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ উপনির্বাচন আগামী ২৫মে। মোট ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতায় থাকলেও মাঠে নেই জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতাউর রহমান। নির্বাচনের আর মাত্র ৩ দিন বাকী। কিন্তু এখন পর্যন্ত নির্বাচন জমে উঠেনি। জানা গেছে, সাধারণ মানুষের মাঝে ভোট নিয়ে তেমন একটা আগ্রহ নেই বললেই চলে। প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা চলছে ঢিমেতালে। প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা জগন্নাথপুরের নির্বাচন সবসময় উৎসব মুখর হয়ে থাকে।
এ সময় পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে প্রবাসীরা দেশে আসেন। কিন্তু এবারের নির্বাচনে তেমন পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ এলাকা পৌরসভার ভোটারদের সাথে আলাপ করে এসব চিত্র পাওয়া গেছে। ভোটারদের মনে হতাশার সুর। নির্বাচন করে কি লাভ ? যদি পছন্দের প্রার্থীকে দিয়ে নির্বাচিত করতে না পারি ? ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী নুরুল ইসলাম দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ব্যস্থ সময় অতিক্রম করছেন। ধীরে ধীরে তাদের কার্যক্রম বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম মাঠে জনমত তৈরি করেছেন। প্রচার প্রচারণায়ও রয়েছেন অনেকটা এগিয়ে।
তবে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন জেলা নেতৃবৃন্দকে নিয়ে গণ সংযোগ করে দলীয় প্রার্থীর বিজয় অনেকটাই নিশ্চিত করে দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আওয়ামীলীগ নেতা লিটন তালুকদার বলেন, বরাবরের মতো এই উপ-নির্বাচনকে উপভোগ করতে এবং নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে আমরা লন্ডন আমেরিকা থেকে অনেক প্রবাসীরা দেশে এসে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে গণ সংযোগ অব্যাহত রেখেছি। তিনি বলেন সকল প্রার্থীদের মধ্যে সিনিয়র এবং গ্রহনযোগ্য প্রার্থী হিসেবে নৌকার প্রার্থী নুরুল ইসলামের জয়লাভ করার সম্ভাবনাই বেশী।
আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হারুনুর রশীদ আনারস প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। তার নিজ ইউনিয়ন ছিলাউড়া হলদীপুরের ২ বারের সাবেক চেয়ারম্যান হিসেবে ভালো অবস্থান তৈরি করতে পেরেছেন।
র্শ্ববর্তী ইউনিয়নগুলোতেও তার অবস্থান গড়ে উঠেছে। জয়ের ব্যাপারে তিনি নিজেও আশাবাদী। এছাড়া সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদের ঘনিষ্ট রাজনৈতিক সহকর্মী হিসেবে সামাদ আজাদপ্রিয় ভোটার সমর্থকরা তাকে নিয়ে আলাদা বাজিমাত ঘটাতে তৎপর বলে জানান তার সমর্থকরা।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের প্রার্থী যুক্তরাজ্য প্রবাসী মাওলানা আব্দুল কাইয়ূম কামালী নির্বাচনী মাঠে নতুন মুখ। তার পক্ষে সার্বক্ষণিক মাঠে রয়েছেন সাবেক এমপি এডভোকেট মাওলানা শাহীনূর পাশা চৌধুরীসহ তাঁর দলের জেলা নেতৃবৃন্দ।
শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করতে পারে খেজুর গাছের প্রার্থী মাওলানা কামালী এমনটাই মনে করছেন সাবেক এমপি এডভোকেট মাওলানা শাহীনূর পাশা চৌধুরী।
স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ তালহা আলম গত বছর খেজুর গাছ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতায় অবতীর্ণ হয়ে চমক সৃষ্টি করেন। তিনি জনগনের ভোটে নির্বাচিত বলে অনেকেই জানেন। জনগনের সাথে ছায়া উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে সারাক্ষণ নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। গত নির্বাচন থেকেই মাঠ ছাড়েননি তিনি। বন্যা দুর্যোগে মানুষের পাশে ছিলেন সারাক্ষণ। বিভিন্ন এলাকায় গণ সংযোগে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন এবারও। রাতে ভোট না হয়ে দিনে ভোট হলে তিনি বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন বলে জানান সিলেট জেলা জমিয়ত নেতা আব্দুল মুকিত চৌধুরী।
এছাড়া খেলাফত মজলিস, বিএনপি ও জমিয়তের নেতাকর্মীরা ছাড়াও ক্ষমতাসীন ব্যক্তিদের সহানুভূতি রয়েছে তার পক্ষে। গতবারের খেজুর গাছের চাইতে এবার কাপপিরিছ নিয়ে আরো বেশি ভোট পাওয়ার প্রত্যাশা করেন তার সমর্থকরা। অধিকাংশ ভোটাররা বলছেন, ৪ প্রার্থীর মধ্যে সবাই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। তবে সকল দলমতের ভোটারের পছন্দের প্রার্থী হিসেবে চমক দেখাতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ তালহা আলম। জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ উপনির্বাচনে কে বিজয়ী হবেন ? মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কারা থাকবেন সেটি জানার জন্য শেষ রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক অবাধ সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চান জগন্নাথপুর উপজেলাবাসী।