• রাজনীতি

    সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ১১ ফেব্রুয়ারি : কারা হচ্ছেন সভাপতি সম্পাদক

      প্রতিনিধি ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ২:৪৪:৩৭ অনলাইন সংস্করণ

    আল-হেলাল,সুনামগঞ্জ : স্বাধীনতা,স্বায়ত্বশাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দলের নাম বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। প্রথমে আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে এ দলটির যাত্রা শুরু হলে তখন থেকেই মহকুমা শহর সুনামগঞ্জে এ দলের রাজনৈতিক কর্মকান্ড শুরু হয়।

    জগন্নাথপুরের আছাফুর রাজা চৌধুরী সভাপতি ও আকমল আলী মোক্তার সাধারন সম্পাদক হয়ে এ দলটির প্রথম কমিটি গঠন করেন। ৫৪ সালের নির্বাচনে গণতন্ত্রী দল,কৃষক প্রজা পার্টির সমন্বয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হলে সুনামগঞ্জে আওয়ামী মুসলিম লীগের ত্যাগী নেতারা মহকুমা জুড়ে নৌকার প্রার্থীদের বিজয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৫৬ সালে দেওয়ান আনোয়ার রাজা চৌধুরী সভাপতি ও সাংবাদিক মুহাম্মদ আবদুল হাই সাধারন সম্পাদক এর নেতৃত্বাধীন মহকুমা আওয়ামীলীগের প্রথম কোন কার্যকরী কমিটির নেতৃত্বে সুনামগঞ্জে সরকারী সফর করেন তৎকালীন দুর্নীতি দমন মন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান।

    https://outsourcingsylhet.net/যেকোন ওয়েবসাইট তৈরী করতে যোগাযোগ করুন।

    কিন্তু ১৯৫৮ সাল থেকে ৬৮ সাল পর্যন্ত পাক সামরিক জান্তার আমলে এ জনপদে জাতির নেতা শেখ মুজিবুর রহমান নামটি জনপ্রিয় হলেও আওয়ামীলীগের প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো বলতে কিছুই ছিলনা। আকমল আলী মোক্তার ও মুহাম্মদ আব্দুল হাই এই ২ নেতাকেই ঐ সময় আওয়ামীলীগের নামে স্বল্প পরিসরে রাজনৈতিক প্রচারাভিযানে দেখা যেত। ১৯৬৯ সালে স্বৈরাচার আইয়ূব বিরোধী গণ অভ্যুত্থানের ঢেউ এসে সুনামগঞ্জের রাজপথ উত্তপ্ত হয়। ৬ দফা আন্দোলনের উপর ভিত্তি করে কমিউনিস্ট ও গণতন্ত্রী দলের নেতারা ক্রমশ আওয়ামীলীগের পতাকাতলে সমবেত হতে থাকেন। ঐ সময় পাক প্রেসিডেন্ট আয়ূব খানের বিরুদ্ধে বাউল কামাল পাশার গান “ও পচা জারমুনি ৬ দফার বাতাসে তুমি টিকবায়নি” ও “আওয়ামীলীগ নাম নিয়া জাগো এগিয়া,জাগো জাগো বাঙ্গালী ভাই মুজিব বাতায়া” গানগুলো আওয়ামীলীগ ও বঙ্গবন্ধুর পক্ষে মারাত্মক আবেদন সৃষ্টি করে জনমতকে স্বাধীকারের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ করে।

    ৭০ এর নির্বাচনকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধু যখন সপ্তাহব্যাপী সারা ভাটিঅঞ্চল সফর করেন তখনই ভাটির জনপদের প্রতিটি ঘরে ঘরে আওয়ামীলীগের দূর্গ গড়ে উঠে। ইতিপূর্বেই মন্ত্রী অক্ষয় কুমার দাশ,এমএনএ আব্দুস সামাদ আজাদ,এমএনএ দেওয়ান ওবায়দুর রেজা চৌধুরী, এমএনএ আব্দুল হক, এমপিএ আব্দুল হেকিম চৌধুরী,আব্দুর রইছ,সামসু মিয়া চৌধুরী ও আব্দুজ জহুর ছাড়াও সৈয়দ দেলোয়ার হোসেন,আব্দুল আহাদ চৌধুরী তারা মিয়া,হোসেন বখত,আলফাত উদ্দিন আহমদ মোক্তার,আফাজ মিয়া, আব্দুল বারী,এডভোকেট খলিলুর রহমান,কাজী বশির উদ্দিন নানু মোক্তারসহ আরো অনেক কৃতি সন্তানেরা সুনামগঞ্জের মাটিতে বঙ্গবন্ধুর জীবদ্ধশায় এ দলটির প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো গড়ে তুলেন।

    সংস্কৃতিবান্ধব এ দলটির অগ্রযাত্রায় ১৯৭৩ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জ স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধুর সংবর্ধনা সমাবেশে ও একই বছরের ৩রা মার্চ দিরাই উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নৌকা প্রতীকে এমপি পদপ্রার্থী সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদের নির্বাচনী সমাবেশে বাউল শিল্পী কামাল পাশা (কামাল উদ্দিন) বঙ্গবন্ধুকে স্বাগত জানান স্থানীয় কয়েকজন নেতার নাম নিয়ে তাৎক্ষনিকভাবে পরিবেশিত একটি গানে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রায় অর্ধ শতাধিক গানের মধ্যে কামাল পাশার ৩৪ নং গানটি হলো,

    “ধন্য নেতা শেখ মুজিবুর বাঙ্গালীর নয়নমনি
    ধন্য নেতা সামাদ আজাদ কর্ণেল ওসমানী।।
    ধন্য দেওয়ান ফরিদ গাজী আরো কর্ণেল ওসমানী।।

    বাউল শিল্পী কামাল পাশা (কামাল উদ্দিন)

    ভদ্র নেতা দেওয়ান ওবায়দুর রেজা,সুনামগঞ্জে ছিল যাদের অনেকও প্রজা
    লোকটা হলেন সরল সোজা,জ্ঞানেতে অনেক গুনী।।

    হোসেন বখত নামে আরেকজন,দুঃখ ব্যাথা দূর হয়ে যায় শুনিলে বচন
    রইছ মিয়া উকিল অতি বিচক্ষন,আব্দুল হকের কথা ভুলিনি।।

    সাংবাদিক আব্দুল হাই প্রেমিক মহাজন,মিনিষ্টার অক্ষয় বাবুর ক্ষয় নাইরে কখন
    বরুন রায়ের মধুর বচন,শুনলে যায় পেরেশানী।।

    আব্দুল হেকিম-আব্দুজ জহুর মানিকও রতন,
    সামসু মিয়া আর দুখু সেন অতি সুদর্শন।
    গুলজার আহমদ পরশ রতন, (মঞ্চেই) ঝড়ান তাঁর চোখের পানি।।

    আব্দুল বারী সাবের বাংলায় প্রথম হইলো গঠন,
    আকমল আলী মোক্তার তথায় থাকতেন সর্বক্ষণ।
    দল গড়িয়া মনের মতোন, কামালের যায় জুয়ানী।।

    (অসমাপ্ত)”

    আরও খবর

    Sponsered content