প্রতিনিধি ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ১:০৫:১৩ অনলাইন সংস্করণ
মাফরোজা সিদ্দিকা বুশরা,সুনামগঞ্জ: বাউল গান,আলোচনা সভা এবং দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের মধ্যে দিয়ে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের ঠাকুরভোক গ্রামে মরমী সাধক বাউল মজনু পাশা স্মরণে বার্ষিক ওরস মোবারক সম্পন্ন ও ৮ম মৃত্যবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
২০ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাত ৯ টা থেকে পরদিন ২১ ফেব্রয়ারী বুধবার ভোর পর্যন্ত বিস্তারিত কর্মসুচি পালনের মধ্যে দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে এই ওরস মোবারক সম্পন্ন হয়।
এ উপলক্ষে সংস্কৃতিসেবী নূর মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বাউল কামাল পাশা স্মৃতি সংসদ এর প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক সাংবাদিক আল-হেলাল। এসময় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বিপ্লব জালালী,মানিক মিয়া,শাহনুর মিয়া,আজিজ নূর ও আবুল হাসান সহ গ্রামের গন্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে রাতব্যাপী অনুষ্ঠানে বাউল গান পরিবেশন করেন বাউল হুমায়ূন কবীল,বাউল আমজাদ পাশা,সাংবাদিক বাউল আল-হেলাল,গীতিকার নির্মল কর জনি,বাউল তোতা মিয়া,বাউল হাফছা খাতুন, তানিয়া সরকার,বাউল সোহেনা আক্তার,বাউল তোফায়েল আহমদ,বাউল ফারুক পাশা,বাউল আছমত আলী,বাউল সফাজ্জল কবির,বাউল আজিদ নূর,বাউল মতিন পাশা,বাউল মজম্মিল পাশা, বাউল হানিফ উদ্দিন পাশা,বাউল বুরহান পাশা,বাউল আখলাক আম্বিয়া,বাউল লুৎফুর রহমান,শিল্পী সুজন মিয়া,শিল্পী হুমায়ূন কবীর সুমন,তামিম আহমদ,জাকারিয়া,জামিল পাশা,নৃপেশ চন্দ্র চৌধুরী ও প্রয়াত বাউল মজনু পাশার পুত্র বাউল মিনার পাশাসহ স্থানীয় শিল্পীবৃন্দ। যন্ত্রশিল্পী হিসেবে বাঁশীতে রবিন আহমেদ,ঢুলিতে নুরুল আমিন, কিবোর্ডে সাজু দাস,প্যাডে এনামুল কবির ও মন্দিরাতে আকমল হোসেন সহযোগীতা করেন।
উল্লেখ্য মরমী সাধক বাউল মজনু পাশা ২০১৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি মোতাবেক ৭ ফাল্গুন মৃত্যুবরন করেন। জীবদ্ধশায় তিনি ছিলেন সুনামগঞ্জের পঞ্চরত্ন বাউলের মধ্যমণি গানের সম্রাট বাউল কামাল পাশার সুযোগ্য শিষ্য,পালা গানের বিখ্যাত গায়ক ও বিশিষ্ট গীতিকার সুরকার। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাঁর শতাধিক শিষ্য রয়েছে। তার রচিত গান “পিঞ্জুর ছেড়ে সোনার পাখি একদিন উড়িয়া যাইবে” এবং “বনের কোকিলরে আর ডাকিসনা ওরে কোকিল আমার নাম ধরিয়া”ইত্যাদি গানগুলো জনপ্রিয় সঙ্গীত হিসেবে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন আসরে গীত হচ্ছে। মৃত্যুর পর মহান এই লোকশিল্পীকে দাফন করা হয় তাঁর পারিবারিক কবরস্থানে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার কবরস্থানটিকে মাজারে উন্নীত করা সম্ভব হয়নি।
পরিবারের লোকজন ও ঠাকুরভোক গ্রামবাসী বাউল মজনু পাশার গান ও মাজার সংরক্ষণে এগিয়ে আসার জন্য সরকারের প্রতি আহবাণ জানিয়েছেন।