প্রতিনিধি ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ২:২৪:৫৪ অনলাইন সংস্করণ
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ প্রকাশিত রিপোর্টে কৃত্রিমভাবে শেয়ার দর বাড়ানোর অভিযোগে গত নয় দিনে হু হু করে দরপতন ঘটেছে আদানিদের বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারে। গত নয় দিনে একটানা ধ্বস আদানি টোটাল গ্যাস, আদানি এন্টারপ্রাইজেসের মতো সংস্থাগুলোর শেয়ার দর।
২৪ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি শেষ এ নয় দিনের পরিসংখ্যান ঘাঁটলে দেখা যায়, শেয়ার বাজারে সবচেয়ে বেশি লোকসান হয়েছে আদানি টোটাল গ্যাস। তাদের শেয়ারে দরপতন ঘটেছে ৫১ ভাগ। এতে তাদের চার লাখ কোটি টাকার অধিক ক্ষতি হয়েছে।
দরপতনের তালিকায় দ্বিতীয় নম্বরে রয়েছে আদানি এন্টারপ্রাইজেস। শেষ নয় দিনে তাদের শেয়ারের দাম ৩৮ ভাগ কমেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় চার লাখ কোটি টাকা।
আদানি ট্রান্সমিশন তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে। গত নয় দিনে সংস্থাটির শেয়ারের দাম ৩৭ ভাগ কমেছে। তাদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় তিন লাখ কোটি টাকা।
তালিকায় এর পরেই আছে আদানি গ্রিন এনার্জি। এ সংস্থার শেয়ারের দাম গত নয় দিনে ৪০ ভাগ কমেছে। তাদের ক্ষতির পরিমাণও প্রায় তিন লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু ফেব্রুয়ারির প্রথম দিনেই সংস্থাটি হারিয়েছে প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা।
শেষ নয় দিনে আদানি পোর্টস অ্যান্ড সেজ-এর শেয়ারের দাম ৩৫ ভাগ কমেছে। এতে তাদের প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে।
আদানি পাওয়ার-এর ক্ষতির পরিমাণ এক লাখ কোটি টাকার কিছু বেশি। এ সংস্থার শেয়ারের দাম গত ৯ দিনে ২৩ ভাগ কমেছে।
তালিকায় একই স্থানে আছে অম্বুজা সিমেন্টস। ২৪ জানুয়ারির পর থেকে তাদের শেয়ারের দাম প্রায় ৩৩ ভাগ কমেছে। তাদেরও প্রায় এক লাখ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
আদানি উইলমার-এর শেয়ারের দাম গত নয় দিনে কমেছে ২৩ ভাগ। এতে তাদের ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে।
শেষ নয় দিনে এসিসি-এর শেয়ারের দাম ২১ ভাগ কমেছে। তাদের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা।
শেয়ারে ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে এনডিটিভিও। শেষ নয় দিনে তাদের শেয়ারের দাম ১৭ ভাগ কমেছে। এত কয়েক শ’ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে সংস্থাটির।
শেয়ার বাজারে এই বিপর্যয়ের ফলে রাতারাতি পরিবর্তন হয়েছে বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তিদের তালিকাও। গত সপ্তাহেও ওই তালিকায় গৌতম আদানি ছিলেন তৃতীয় স্থানে।
কিন্তু হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশের পরে তিনি ১৩ নম্বরে নেমে গিয়েছেন। হারিয়েছেন এশিয়ার ধনীতম ব্যক্তির তকমাও।
আদানিকে টপকে বিশ্বের ধনীতমদের তালিকায় নবম স্থানে উঠে এসেছেন আরো এক ভারতীয় ধনকুবের- মুকেশ অম্বানী। বর্তমানে দেশের সবচেয়ে ধনী শিল্পপতি তিনিই।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় বাজেট পেশের দিনেই নতুন শেয়ার ছাড়ার প্রক্রিয়া (এফপিও) স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আদানি গোষ্ঠী। তারা জানিয়েছে, ২০ হাজার কোটি টাকার যে এফপিও ছাড়ার ঘোষণা হয়েছিল, তা আপাতত কার্যকর হচ্ছে না।
ইতোমধ্যে আদানিদের ওই ঘোষিত এফপিও-তে যারা লগ্নি করেছেন, তাদের টাকা ফেরত দেয়া হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এর ফলে বাজেটে পেশের দিনেই দেশের অর্থনীতি কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা