প্রতিনিধি ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ১:২৪:৪৭ অনলাইন সংস্করণ
আল-হেলাল,সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : অবশেষে সুনামগঞ্জের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক ডাঃ মোঃ আনিসুর রহমান, হিসাব রক্ষক মোঃ ছমিরুল ইসলাম ও ষ্টোরকিপার মোঃ সুলেমান আহমদ এর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
গত ১২/১২/২০২২ইং তারিখে সুনামগঞ্জ পৌরসভার বাধনপাড়া নিবাসী মেসার্স শামীমা এন্টারপ্রাইজ এর প্রোপাইটর মোঃ সাজিদুর রহমান,ভূয়া প্রশাসনিক অনুমোদন নিয়ে চিকিৎসা ও শৈল চিকিৎসা সরঞ্জামাদি (এমএসআর) সরবরাহের অসদুদ্দেশ্যে কার্যাদেশ হাতিয়ে নিয়ে ভূয়া বিল পরিশোধের অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে অভিযোগটি দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে মহাপরিচালক এর পক্ষে পরিচালক (অর্থ) ডাঃ ফরিদা ইয়াসমিন ৩ (তিন) সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটিতে ময়মনসিংহ বিভাগের বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক কে সভাপতি,সিলেট জেলা সিভিল সার্জনকে সদস্য ও সুনামগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জনকে সদস্য সচিব করা হয়। এ তথ্য গত ১৪/২/২০২৩ইং স্বা:অধি:হিসাব/কমিটি গঠন/২০২২-২০২৩/১৫৭০ নং স্মারকাদেশ সংবলিত অফিস আদেশপত্রে জানা যায়।
অভিযোগে প্রকাশ,স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৫/১২/২০২২ইং তারিখের ১১০২ নং প্রকৃত স্মারকাদেশ বলে কার্যাদেশপ্রাপ্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বিল পরিশোধের জন্য অধিদপ্তরের পরিচালক (অর্থ) ডাঃ মোহাম্মদ আনিসুল ইসলাম মিঞা স্বাক্ষরিত প্রশাসনিক অনুমোদনপত্র ইস্যু করা হয়। ইস্যুকৃত উক্ত সঠিক ও মূল পত্রটি তত্ত¡াবধায়ক ডাঃ মোঃ আনিসুর রহমানের কার্যালয়ে মেইলযোগে আসার পূর্বেই গত ৩/১১/২০২২ইং ২০২২-২০২৩/৬৮৭ নং স্মারকে ভূয়া প্রশাসনিক অনুমোদনপত্র প্রস্তুত করে হিসাবরক্ষক মো. ছমিরুল ইসলাম ও ষ্টোরকিপার মো. সুলেমান আহমদ একে অপরের যোগসাজশে পরিকল্পিত জালিয়াতি প্রতারনার উদ্দেশ্যে নিজেদের সরবরাহকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদান করত: ৪ কোটি ৬ লাখ ৫৫ হাজার টাকার বিল পরিশোধ করে।
বিল আদায়ের লক্ষ্যে সুনামগঞ্জ জেলা হিসাব রক্ষন অফিসেও প্রদান করে কথিত জাল ও ভূয়া প্রশাসনিক অনুমোদনপত্র। বিনিময়ে তত্ত¡াবধায়ক ডাঃ আনিসুর রহমান ও নিজেদের নামে মোটা অংকের পার্সেন্টিজ পকেটস্থ করে। নিজেদের স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি এ চক্রটি জেলা হিসাব রক্ষন অফিসকেও জাল কাগজপত্র দ্বারা প্রতারিত করে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে ৪ কোটি ৬ লাখ ৫৫ হাজার টাকা বিলের চেক হাতিয়ে নেয়। কিন্তু বিল পরিশোধের দৃশ্যমান দুর্নীতির এ চিত্রটি তখন পর্যন্ত কারো নজরে আসেনি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৫/১২/২০২২ইং তারিখের ১১০২ নং প্রকৃত স্মারকপত্রটি সঠিক বলে প্রতীয়মান হওয়ায় বঞ্চিত ও প্রতারিত ঠিকাদার সাজিদুর রহমান বাধ্য হয়ে কর্তৃপক্ষের নজরে প্রকৃত সত্যটি তুলে ধরে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করেন।
গোপনসূত্রে জানা যায়,স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতাভূক্ত সিলেট বিভাগীয় পরিচালক এর পদটি অবসরজনিত কারণে গত ডিসেম্বর মাসে শূন্য হওয়ায় এ পদে প্রমোশন নিয়ে স্থলাভিষিক্ত হওয়ার অভিপ্রায়ে বর্তমান তত্ত¡াবধায়ক ডাঃ মোঃ আনিসুর রহমান উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন নিবেদন করেন। কিন্তু বিলম্ব হলে পার্সেন্টিজের ভাগের টাকা থেকে বঞ্চিত হবেন বলে তরিগড়ি করে নভেম্বর মাসেই ভূয়া প্রশাসনিক অনুমোদনপত্র প্রস্তুত করত: সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠাণকে বিল পরিশোধের মাধ্যমে ঘুষের টাকা ভাগাভাগি করেন তারা। বিলের জন্য ইস্যুকৃত পৃথক দুটি প্রশাসনিক অনুমোদনপত্রের মধ্যে কোনটি সঠিক এবং কোনটি জাল তা ইতিমধ্যেই সুস্পষ্ট হয়েছে। যা সঠিক তদন্ত হলে আসল বিষয়টি বেরিয়ে আসবেই। কিন্তু উর্ধতন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সেদিকে দৃষ্টি এখন সকলের।
Notifications