প্রতিনিধি ৯ ডিসেম্বর ২০২২ , ১২:৪৮:৩১ অনলাইন সংস্করণ
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি অশান্তি, বিশৃঙ্খলা ও সংঘাতের উসকানি দিচ্ছে। সাম্প্র্রদায়িক ও জঙ্গিবাদী শক্তি ও জঙ্গিদের মাঠে নামিয়ে বিএনপি তাদের লাশ ফেলার দুরভিসন্ধি কার্যকর করেছে।
বিএনপির ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের প্রতি সজাগ থাকতে দলীয় নেতাকর্মীদের পাড়া-মহল্লায় পাহারা দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, আক্রমণ হলে সমুচিত জবাব দিতে হবে। বৃহস্পতিবার এক যৌথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সম্পাদক এবং ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সূচনা বক্তব্যে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, রাস্তা বন্ধ করে জনগণকে কষ্ট দিয়ে সমাবেশ করা-এটা আর হতে দেওয়া হবে না। আমরাও করব না।
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সমাবেশ আমরা মহানগর নাট্যমঞ্চে করব। আমরা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করব না। তাদের কি দুরভিসন্ধি? তারা রাস্তায় জনসমাবেশ করতে চায় কেন? আগুন নিয়ে খেলা করবে? ভাঙচুর করবে? এসব দুরভিসন্ধি আমরা বুঝে গেছি।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, সব জেলা-উপজেলা, মহানগর, থানা, পৌরসভা, ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সতর্ক পাহারায় থাকবেন। আক্রমণ আমরা করব না, আক্রমণের উসকানি দিলে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, বিজয়ের মাসে আমরা সাম্প্রদায়িক শক্তির কাছে দেশ তুলে দিতে পারি না। এটা আমাদের শপথ। অকারণে আক্রমণ আমরা করতে যাব না। শান্ত থেকে ঠান্ডা মাথায় মোকাবিলা করতে হবে। আমাদের যেন কোনো দুর্নাম না হয়।
গণমাধ্যমের ভূমিকার কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, অনেকেই নিরপেক্ষতার কথা বলেন, বস্তুনিষ্ঠতার কথা বলেন, পুলিশ মার খেয়ে রাস্তায় পড়ে আছে, কেউ ছবি দিলেন না। বিআরটিসি বাস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, কেউ পত্রিকায় ছবি দিলেন না। সরকারি গাড়ি পুড়িয়ে ফেলল, সেই ছবি কেউ দিলেন না। কেন এমনটা করা হচ্ছে? মিডিয়ার একটা অংশ কেন পক্ষ নিচ্ছে? পক্ষপাতিত্ব করছে? এটা আমার অভিযোগ।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার এত উন্নয়ন, সব রেকর্ড ছাড়িয়ে উন্নয়ন করেছেন। কিন্তু বিএনপি চোখে দেখে না। বিএনপি না দেখলেও মিডিয়ার তো দেখার কথা। আমরা সত্যকে তুলে ধরার কথা বলছি।
বিদেশের উদ্বেগের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিদেশিরা আমাদের বন্ধু, উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এটা এক পেশে, উচিত নয়। তিনি বলেন, আমরা আপনাদের বন্ধু, আমাদের সঙ্গে শত্রুতা করবেন না। জনতা কার সঙ্গে সেটা যদি গণজমায়েত হয়ে থাকে তাহলে যশোর, চট্টগ্রাম কক্সবাজারের সমাবেশ দেখুন, বুঝতে পারবেন। জনগণ কি চায় বুঝতে পারবেন। পরে যৌথ সভায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য দেন।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর তার নির্দেশনা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে ওবায়দুল কাদের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বিজয়ের মাস শুরু হয়েছে। সারা দেশে আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনগুলো নিজ নিজ কর্মসূচি নেবেন। মাঠে থাকবেন। সতর্ক থাকবেন।
বিজয়ের মাসে নাশকতার বিরুদ্ধে খেলা হবে : কুমিল্লা ব্যুরো জানায়, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ডিসেম্বর বিজয়ের মাস। বিজয়ের মাসে নাশকতার বিরুদ্ধে খেলা হবে। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে খেলা হবে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে খেলা হবে, ভোট চুরির বিরুদ্ধে খেলা হবে, ভুয়া ভোটার তালিকার বিরুদ্ধে খেলা হবে। তিনি বলেন, বিএনপির দুরভিসন্ধি আমরা বুঝে গেছি। নাশকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। কুমিল্লার মানুষকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম।
প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, সাবেক মন্ত্রী মুজিবুল হক মুজিব, নাসিমুল আলম নজরুল এমপি, আবুল হাশেম খান এমপি বক্তব্য দেন। লালমাই উপজেলার বাগমারা হাইস্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে নেতাকর্মীদের ঢল নামে।
সূত্রঃ যুগান্তর