• সুনামগঞ্জ

    সাংবাদিক শাহীনের মামলা এফআইআর হওয়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে আফতাব বাহিনী

      প্রতিনিধি ২৩ অক্টোবর ২০২২ , ২:১২:০৩ অনলাইন সংস্করণ

    সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সাংবাদিক শাহীনের উপর হামলা,লুটতরাজ ও তাদের মালিকানাধীন ভৈরবী ঘাটে চাঁদাবাজীর ঘটনায় আফতাব উদ্দিন ও তার বাহিনীর লোকজনের উপর দায়েরকৃত মামলাটি এফআইআর হওয়ায় আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সন্ত্রাসী আফতাব বাহিনী।

    বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) বিকেল ৩টার পর পাটানপাড়া বাজারস্থ ভৈরবীঘাটে এসে আফতাব উদ্দিন ও তার বাহিনীর লোকজন শাহীনের দায়েরকৃত মামলায় কেউ যাতে পুলিশের কাছে স্বাক্ষী না দেয় এবং মামলার মানীত সাক্ষীরা যাতে আদালতে গিয়ে কেউ কিছু দেখেনি বা জানেনা বলে মিথ্যা স্বীকারোক্তি প্রদান করে সেজন্য হুমকি দেয়।

    মামলার সাক্ষী মতলব আলী,আব্দুল কাইয়ূম ও আব্দুল কাদির এই ৩ ব্যক্তিকে রোববার (২৩ অক্টোবর) আদালতে এনে এফিডেভিট করানোর অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আফতাব উদ্দিন। স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা,বীর মুক্তিযোদ্ধা,ইউপি সদস্য,চাচাতো ভাইসহ পাটানপাড়া গ্রামের প্রত্যেকটি নাগরিককে উদ্দেশ্যে করে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করে এমনকি দুএকজনকে মারতেও উদ্যত হয় সে। ঘটনার কথা তাৎক্ষনিকভাবে জেলা পুলিশ সুপার,তাহিরপুর থানার ওসিসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনকে তাৎক্ষনিকভাবে মোবাইল ফোনে অবগত করেন ভূক্তভোগীরা। পরে পাটানপাড়া গ্রামের কয়েকজন লোককে বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিব নিজ বাড়ীতে ঢেকে নিয়ে শাহীন ও হুমায়ূনকে একঘরে করে রাখার জন্য সিদ্বান্ত দেয়। শুক্রবার দিন শাহীন ও হুমায়ূনকে পঞ্চায়েতের মাধ্যমে লোক ঝড়ো করে হামলা,ঘরবাড়ী ছাড়া করানো,বাড়ীঘরের সমস্ত সম্পদ লুটতরাজ এবং গরু বাছুর জোরপূর্বক ছিনতাই করার কথা ঘোষণা করে। অন্যদিকে মামলার আসামী হয়ে চাঁদাবাজ রিপন ভৈরবীঘাটে চাঁদা উত্তোলন থেকে বিরত থেকে পাটানপাড়া বাজারের মৃত গুলফর মিয়ার ছেলে আলাইউনকে চাঁদা উত্তোলনের দায়িত্ব প্রদান করে।

    তারা প্রতি সপ্তাহের ২টি হাটবার অর্থাৎ রবিবার ও বৃহস্পতিবার পাটানপাড়া বাজারের ভৈরবীঘাটে ব্যবসায়ীদের মালামাল পরিবহনের জন্য আগত বিভিন্ন ভ্যান গাড়ী,পিকআপ ও অটো রিক্সার চালকদের কাছ থেকে প্রশাসনের বিধিনিষেধ অমান্য করে বিনা রসিদে প্রতি হাটবারে ৮ হাজার টাকা হিসেবে গত ২৪ জুলাই থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২০টি হাটবারে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করেছে। গত ২রা অক্টোবর রবিবার থেকে ২০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অক্টোবর মাসের ৬টি হাটবারে আরো ৪৮ হাজার টাকা চাঁদা উত্তোলন করে আলাইউন। বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী চাঁদা উত্তোলনে আলাইউনকে দেখেন স্থানীয় লোকজন। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার চাঁদা উত্তোলনের দায়ে রিপনকে ৩ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেছেন। এবং ভবিষ্যতে কেউ চাঁদা আদায় করবেনা বলে রিপন মুছলেকা দিয়ে আসার পরও প্রকাশ্য দিবালোকে কেন চাঁদা উত্তোলন করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে আলাইউন বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এ প্রতিবেদককে বলেন,গত ২৫ দিন আগে আমি নিজে স্বশরীরে থানায় ওসি সাহেবের কাছে গিয়ে আমার কাগজপত্র দেখিয়ে কালেকশনের অনুমতি নিয়ে এসেছি। এছাড়া রিপন শিপন আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে টাকা উত্তোলনের জন্য। প্রতি হাটবারে আমি ৩ হাজার করে টাকা উত্তোলন করে যাচ্ছি। বৃহস্পতিবার আমি ঘাটে বসে কোন টাকা উত্তোলন করিনি। শুধুমাত্র ভৈরবীঘাট থেকে ১৯টি গাড়ী ও ৭টি অটো মালামাল নিয়ে গেছে তার হিসাব খাতায় লিখে রেখেছি।

    চাঁদা উত্তোলনকারী আলাইউন আফতাব উদ্দিনের মামা সম্পর্কীয় ঘনিষ্ট আত্মীয় বলে এ প্রতিবেদকের কাছে স্বীকার করেন। উল্লেখ্য সুনামগঞ্জের বিজ্ঞ আমল গ্রহনকারী জুডিসিয়েল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারকের নির্দেশে,গত ১৩/১০/২০২২ইং তারিখে সাংবাদিক শাহীনের দায়েরকৃত ২২৬নং পিটিশন মামলাটিকে তাহিরপুর থানার নিয়মিত মামলা নং ৯ তাং ১৯/১০/২০২২ইং হিসেবে এফআইআর করা হয়। এদিকে থানায় মামলা এফআইআরের খবর পেয়ে সন্ত্রাসী আফতাব উদ্দিন (৪০),জিন্নাহ (৩৫),মানিক (৩২),রিপন (৩৫) ও শিপন (৩২) সহ সকল সন্ধিগ্ধ আসামীরা আরো বেপরোয়া হয়ে শাহীন ও তার ভাইকে খুন করার নেশায় মরিয়া হয়ে উঠেছে। মামলার বাদী সাংবাদিক শাহীন দৈনিক খবরপত্র পত্রিকার সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি ও সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সদস্য।

    আরও খবর

    Sponsered content