প্রতিনিধি ১৬ আগস্ট ২০২২ , ৯:৫২:২০ অনলাইন সংস্করণ
মাফরোজা সিদ্দিকা বুশরা,সুনামগঞ্জ: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে গানে গানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও তাঁর শহীদ পরিবারকে স্মরণ করেন সুনামগঞ্জের বাউল শিল্পীরা। বাউল গানে বঙ্গবন্ধু শীর্ষক এ মহতি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে জেলার পঞ্চরতœ বাউলের মধ্যমণি গানের স¤্রাট বাউল কামাল পাশা (কামাল উদ্দিন), প্রবীণ গীতিকার মক্রম আলী শাহ ও প্রবাসী দেলোয়ার হোসেনসহ ২০ জন গীতিকারের ২৫টি গান পরিবেশন করা হয়। মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) সকাল ১১টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমীর হাছনরাজা মিলণায়তনে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর উদ্যোগে এ অনুষ্ঠান শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলে। সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য রাখেন জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সাধারন সম্পাদক এডিশনাল পিপি এডভোকেট শামছুল আবেদীন। জেলা কালচারাল অফিসার আহমেদ মঞ্জুরুল হক চৌধুরী পাভেলের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় শিল্পকলা একাডেমীর যুগ্ম সাধারন সম্পাদক এডভোকেট দেবদাস চৌধুরী রঞ্জন,জেলা বাউল সমিতির সভাপতি বাউল শাহজাহান সিরাজ,বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি গীতিকার আল-হেলাল ও প্রবীণ গীতিকার মনির উদ্দিন নুরীসহ বিভিন্ন সাংস্কৃৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা এতে বক্তব্য রাখেন।
দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মরণে লেখা বাউল গান পরিবেশন করেন বাউল আনিছ মিয়া,বাউল সিরাজ উদ্দিন, বাউল মনির উদ্দিন নুরী,বাউল শাহজাহান সিরাজ,বাউল জুবায়ের বখত সেবুল,বাউল রসিদ উদ্দিন সরকার,বাউল ফুল মিয়া,বাউল হীরামোহন দাস, বাউল আল-হেলাল,বাউল আমজাদ পাশা,বাউল শুকুর আলী,বাউল ফারুক মিয়া,বাউল বাবুল শাহ,বাউল বাবুলাল সরকার, বাউল আনোয়ার হোসেন,বাউল সুফিয়া আনাছ, বাউল শিপ্রারানী মন্ডল,বাউল ক্বারী আমিরুল ইসলাম,জহিরুল ইসলাম সোহেল ও বাউল ফারজানা আক্তার আশাসহ স্থানীয় বাউল শিল্পীবৃন্দ।
আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন,জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে দেশের সর্বপ্রথম সংগীত রচয়িতা বাউল শিল্পী হচ্ছেন হাওর পাড়ের পালাগানের স¤্রাট বাউল কামাল পাশা (কামাল উদ্দিন)। সুনামগঞ্জ জেলার ৫ প্রধান লোককবির মধ্যমণি এই বাউল কবি ১৯৫২ সালের ২৭ ফেব্রæয়ারি তদানীন্তন সুনামগঞ্জ মহকুমার দিরাই থানার রাজানগর হাইস্কুল মাঠে ঢাকায় ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত একটি প্রতিবাদ সভায় “ঢাকার বুকে গুলি কেন নুরুল আমিন জবাব চাই/উর্দ্দূ প্রেমে মন মজাইয়া মারলো কত শহীদ ভাই। শেখ মুজিব কারাগারে আন্দোলন কেউ নাহি ছাড়ে/সত্যাগ্রহে এক কাতারে সামনে আছেন সামাদ ভাই” শীর্ষক দেশাত্ববোধক গানটি পরিবেশন করেছিলেন। ১৯৪৭ সাল থেকে ৫২ সাল পর্যন্ত সাবেক মন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ,এডভোকেট সুনাওর আলী ও ডাঃ হারিছ উদ্দিনসহ সুনামগঞ্জী ছাত্ররা রাজধানী ঢাকায় ম্যাচে থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেলে পড়াশুনা করতেন। ঐ সময় ফরিদপুর,গোপালগঞ্জ,কেরানীগঞ্জ ও মানিকগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পালাগানে যেতেন বাউল কামাল পাশা। থাকতেন ছাত্রদের ম্যাচে। সুনামগঞ্জী ছাত্ররা সেই সময় বাউল কামাল পাশাকে দিয়ে ভাষা আন্দোলনের সমর্থনে গান রচনা ও পরিবেশন করাতেন। ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছর পর ১৬ আগস্ট মঙ্গলবার জাতির জনকের ৪৭ তম শাহাদৎবার্ষিকী উপলক্ষ্যে গানে গানে বঙ্গবন্ধু অনুষ্ঠানে আমরা সেই বিখ্যাত গানটি উপস্থাপন করলাম। বক্তারা আরো বলেন,সুনামগঞ্জের বাউল শিল্পীদের মধ্যে বাউল কামাল পাশা,বাউল শাহ আব্দুল করিম ও দূর্বিণ শাহ এই ৩ বাউল শিল্পী বঙ্গবন্ধুর জীবদ্ধশায় হাওরাঞ্চলের অনেক প্রোগ্রামে বঙ্গবন্ধুর সভামঞ্চে আওয়ামীলীগ,নৌকা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেক মূল্যবান গান পরিবেশন করেছেন।