প্রতিনিধি ১৫ আগস্ট ২০২২ , ৪:৪৮:০৫ অনলাইন সংস্করণ
দেশের আইন শৃংখলা বাহিনীর উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিরোধীরা আন্দোলন করুক, আন্দোলনকারী কাউকে যেন গ্রেফতার করা না। বিএনপির চলমান আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরো বলেন, আমাদের বিরোধীরা (বিএনপি) একটা সুযোগ পাচ্ছে। তারা আন্দোলন করছে। সেটা করুক আমি তো চাচ্ছি। আমি নির্দেশ দিয়েছি, তারা আন্দোলন করছে, করতে দাও। খবরদার কাউকে যেন গ্রেফতার করা না হয়। তারা প্রধানমন্ত্রীর অফিসও ঘেরাও দেবে, আমি বলেছি হ্যাঁ আসতে দেব। কেননা আমরা যে আন্তরিকতার সঙ্গে চেষ্টা করছি দেশের কাজ করতে দেশের মানুষতো সেটা জানে। গতকাল রোববার আওয়ামী লীগের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বিএনপির আন্দোলনের সফলতা নিয়ে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, আন্দোলন করে তারা কতটুকু সফল হবে, সেটা জানি না। কিন্তু যেটা করছে তাতে দেশের জন্য আরো ক্ষতি হবে। আমরা সেটা সামাল দিতে পারবো, সেই বিশ্বাস আমার আছে।
শেখ হাসিনা বলেন, চলমান সংকটে আমরা শুধু ভুক্তভোগী না, সারা বিশ্বের মানুষই ভুক্তভোগী। দেশের মানুষের যে কষ্ট হচ্ছে সেটা আমরা উপলব্ধি করতে পারছি। সেই কষ্ট লাঘবের জন্য আরো কী কী করা যায়, তার জন্য প্রতিনিয়ত আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা মানুষের কষ্টটা যে বুঝি না, তা না।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আগেও বলেছি, আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে রাশিয়াকে শায়েস্তা করার জন্য। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, শায়েস্তা হচ্ছে সাধারণ মানুষ। শুধু আমরা নই, ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াসহ প্রত্যেকটা মহাদেশের মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জিনিসের ওপর প্রভাব পড়েছে।
জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ^ বাজারে জ¦ালানি তেলের দাম কমার সাথে সাথে দেশেও সমন্বয় করা হবে। দেশের কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন শুরু হলে বিদ্যুতের এই সমস্যা অনেকটাই দূর হয়ে যাবে। তিনি উৎপাদন বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, করোনা যেতে না যেতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে নিষেধাজ্ঞা এবং পাল্টা নিষেধাজ্ঞা জনজীবনে সর্বনাশ ডেকে আনছে, যার ভুক্তভোগী হচ্ছে সারা বিশ্বের সাধারণ জনগণ। আমেরিকা স্যাংকশন দিল রাশিয়াকে শায়েস্তা করার জন্য, কী দেখা যাচ্ছে যে শায়েস্তা হচ্ছে সাধারণ মানুষ। শুধু আমাদের দেশ বলে নয়, ইউরোপের দেশগুলো এমনকি আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া প্রত্যেকটি মহাদেশের মানুষেরই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সব জিনিসের ওপরই এর একটা প্রভাব পড়েছে।
দেশে কিছু জিনিসের দাম অপ্রয়োজনে বাড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর আমাদের কিছু লোক তো থাকেই অপ্রয়োজনেও জিনিসের দাম বাড়িয়ে দেয় ওই ছুতা ধরে, সেটাই হচ্ছে কিছু কিছু। না হলে এত দাম তো বাড়ার কথা নয়। একটা শ্রেণী যেন রয়ে গেছে এদেশে, যারা এদেশের মানুষের কোন কল্যাণ হোক সেটা চায়না। অর্থাৎ স্বাধীনতা অর্থবহ হোক, স্বাধীনতার সুফল বাংলার প্রত্যেক ঘরে পৌঁছাক, এখানেই একটা বাধা দেয়া প্রচেষ্টা আমরা সবসময় দেখি।
শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগকে আরো শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, যে কোন দুর্যোগ-দুর্বিপাক যাই আসুক আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সবসময় সজাগ থাকেন এবং মানুষের পাশে গিয়ে সকলের আগে দাঁড়ান। কাজেই সেই সংগঠনকে সুসংহত করাটাই আমাদের লক্ষ্য।
ইনকিলাব থেকে নেয়াঃ