• সুনামগঞ্জ

    প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন দিরাই শিক্ষা অফিসার রাজ্জাক ও শিক্ষিকা সেলিনা আক্তার

      প্রতিনিধি ১১ আগস্ট ২০২২ , ৩:৩১:৩০ অনলাইন সংস্করণ

    আবু খালেদ, বিশেষ প্রতিনিধি: গত শনিবার ৬ আগস্ট, ২০২২ খ্রিঃ তারিখে পাঠক প্রিয় দৈনিক ভাটি বাংলা ডটকম এ- দিরাইয়ে লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহনের অভিযোগ সুনামগঞ্জের ডিপিও ও দিরাই শিক্ষা অফিসার রাজ্জাকের বিরুদ্ধে শীর্ষক প্রকাশিত সংবাদের পৃথকভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছেন দিরাই উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুর রাজ্জাক ও পশ্চিম শরীফপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়য়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা সেলিনা আক্তার।

    আজ পৃথক এক প্রতিবাদ লিপিতে দিরাই শিক্ষা অফিসার আব্দুর রাজ্জাক বলেন আমাকে জড়িয়ে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা বদলিকৃত শিক্ষকের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ, সম্পূর্ণ অনুমান নির্ভর ও অসত্য।

    প্রথমতঃ আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক গত ৩১ জুলাই ৭৩৯ (০৮) নং স্মারকে দিরাই পৌরসভার রাধানগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চলতি দায়িত্বরত প্রধান শিক্ষক আভারানী সরকার কে সুজানগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবং দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম শরীফপুর সরকারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চলতি দায়িত্বরত প্রধান শিক্ষক রায়হানা সিদ্দিকাকে মকসদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংশোধিত পদায়নকৃত বিদ্যালয়ে বিধি মোতাবেক যোগদানের জন্য আদেশ দেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্যার।

    দ্বিতীয়তঃ পশ্চিম শরীফপুর সরকারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক সেলিনা আক্তার ইতিপূর্বে প্রায় ১৫ বছর অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন এবং জাতীয় করণের সময় উনি প্রধান শিক্ষক পদ থেকে বাদ পড়ায় এ বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন, বর্তমানে উক্ত মামলা বিচারাধীন এবং মামলার তারিখ সন্নিকটে তাই ঘুষের বিনিময়ে উনাকে প্রধান শিক্ষক করার চেষ্টা অনুমান নির্ভর ও কল্পনাপ্রসূত তা আদৌ সত্য নয়।

    তৃতীয়তঃ গত ৩রা আগস্ট বুধবার বিকেল ৪টার সময় আমার কার্যালয়ে শরিফপুর গ্রামের বিশিষ্ট মুরব্বী সাদেকুর রহমান চৌধুরী ছায়াদ মিয়া কে সিলেট থেকে ঢেকে আনিনি বরং চলতি দায়িত্বরত প্রধান শিক্ষক রায়হানা সিদ্দিকাকে বদলি আদেশ দেওয়ায় উনি ক্ষুদ্ধ হয়ে বারবার আমাকে ফোনে বিরক্ত করছিলেন এবং বদলি আদেশ প্রত্যাহারে চাপ প্রয়োগ করছিলেন। উনি নিজেই আমার কার্যালয়ে এসেছিলেন। আমি আশাকরি সবাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে বস্তুনিষ্ঠ ও সঠিক তথ্য প্রচার করবেন।

    শিক্ষিকা সেলিনা আক্তার প্রতিবাদ লিপিতে বলেন- আমি ১৯৯৭ সাল থেকে অত্র বিদ্যালয়য়ের প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান করে ২০১২ সাল পর্যন্ত যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করি এবং নিয়মানুযায়ী প্রধান শিক্ষকের পদের বিপরীতে মাসে ৫০ টাকা করে সরকারি কষাগারে জমা করি কিন্তু বিদ্যালয় জাতীয় করণের সময় অদৃশ্য কারণে আমাকে প্রধান শিক্ষক পদ থেকে বাদ দেওয়া হয়। আমি অনেক দৌড়াদৌড়ি করেও সমাধান না পেয়ে- মহামান্য হাইকোর্টের রীট পিটিশন নং ৩৮৯৫/২০১৬ দায়ের করি।
    মহামান্য হাইকোর্ট ৩৮৯৫/২০১৬ নং রীট পিটিশন মামলায় প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মোকদ্দমা দায়েরের অনুমতি দিয়ে রীট পিটিশনটি খারিজ করেন।

    পরে আমরা সংক্ষুব্ধরা প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল-১ ঢাকায় ২৮৮/২০২০ নং এ.টি মামলা দায়ের করি।
    এবং কনটেম্পট অব কোর্ট মামলা নং ৫২২/২০১৮ এর বিধান বলে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকদের জায়গায় নিয়োগকৃত চলতি দায়িত্বের প্রধান শিক্ষক পদে স্থগিতাদেশ আসে, কিন্তু তৎকালীন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার পঞ্চানন বালা কোর্টের আদেশ অমান্য করে চলতি দায়িত্বের প্রধান শিক্ষকদের স্ব-স্থানে ও স্ব-পদে বহাল রাখায় আমরা রীট পিটিশন দায়েরকারীগণ সাবেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার পঞ্চানন বালা এর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা ৫২২/২০১৮ দায়ের করি। এবং প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে দায়েরকৃত এ.টি ২৮৮/২০ নং মামলাটিও এখনও স্ব স্ব আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
    আগামী ২৯ আগস্ট প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলাটির শুনানীর তারিখ রয়েছে এমতাবস্থায় টাকা দিয়ে এবং আমার আত্মীয়ের পা সালাম করে প্রধান শিক্ষকের পদে পদায়নের আবদার করার খবর অসত্য ও বানোয়াট এবং বদলি শিক্ষিকার কল্পনা প্রসূত।

    সেলিনা বলেন- সাবেক সভাপতি উনি আমার মুরুব্বী, সম্পর্কে আমার মামা হয়। উনি এমন কথা বলেছেন তা আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। কারন বিষয়টি পুরপুরি অসত্য।
    আপনারা অনুসন্ধানে জানতে পারবেন চলতি দায়িত্বের শিক্ষকদের নিয়োগের সময় দিরাই উপজেলায় প্রধান শিক্ষকের পদ শূণ্য ছিল ৬৩ টি এরমধ্যে পদায়ন করা হয়েছিল ৩৭ টি পদে এ হিসাবে ২৬ টি প্রধান শিক্ষকের পদ শূণ্য ছিল। সেসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদায়ন না করে বিচারাধীন থাকা বিরোধপূর্ণ বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও চলতি দায়িত্বে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে জটিলতা তৈরি করা হয়েছিল। 
    ৭ টি বিদ্যালয়ে দুজন করে প্রধান শিক্ষক ছিলেন!
    পূর্ব চন্ডিপুর, পশ্চিম শরীফপুর, রাধানগর, ভাটিধল, পিতাম্বরপুর, ধাপকাই ও নতুন কর্ণগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালযয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের পূর্ণাঙ্গ প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বিগত ২৬/৬/২০১৮ ইং তারিখে সাবেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার পঞ্চানন বালা ও সাবেক দিরাই উপজেলা শিক্ষা অফিসার এস এম আব্দুল হালিমের যোগসাজশে অনৈতিক আর্থিক সুবিধা হাসিলের জন্য প্রধান শিক্ষক (চলতি দায়িত্ব) নিয়োগ দেয়া হয়েছিল এসব বিদ্যালয়ে তাই একই বিদ্যালয়ের চলতি ও ভারপ্রাপ্ত দুইজন করে প্রধান শিক্ষক রয়েছেন!
    একদিকে চলতি দায়িত্বের প্রধান শিক্ষকরা পাঠদান না করেও তখন বসেবসে বেতন ভাতা তুলছে দুই বছর ধরে, অপর দিকে অনেক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক সংকটে পাঠদান ব্যহত হচ্ছিল।

    এ বিষয়ে পশ্চিম শরীফপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সহ-সভাপতি এবং গ্রামের কয়েকজন মুরব্বী মুঠোফোনে দৈনিক ভাটি বাংলা ডটকমকে জানান একই বিদ্যালয়ে একজন চলতি দায়িত্বের ও অপরজন ভারপ্রাপ্ত থাকায় লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছিল। প্রধান শিক্ষককে একই পদে অন্যত্র বদলি করায় উনার অসুবিধা হওয়ার কথা না, আর অপরদিকে আমাদের বিদ্যালয়য়ে শিক্ষকের রেষারেষি এখন বন্ধ হয়ে সঠিক লেখাপড়ার পরিবেশ ফিরে আসবে বলে আমরা আনন্দিত এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাই।

    আরও খবর

    Sponsered content