• সংবর্ধনা / উদ্বোধন

    সুনামগঞ্জে কবি সুখেন্দু সেন এর সম্মাননায় হুইপ মিসবাহ্ এমপি

      প্রতিনিধি ৪ জুন ২০২২ , ৪:০৩:২৫ অনলাইন সংস্করণ

    আল-হেলালঃ সুনামগঞ্জে কবি সুখেন্দু সেন এর সম্মাননায় জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় হুইপ এডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ এমপি বলেছেন দেশের লেখক,সাহিত্যিক সাংবাদিকসহ সকল শ্রেণিপেশার প্রকৃত গুনীজনদের কে তাদের জীবদ্ধশায় মূল্যায়ন করার জন্য সরকারের প্রতি উদাত্ত আহবাণ জানিয়েছেন।

    যেকোন ওয়েবসাইট তৈরী করতে যোগাযোগ করুন।

    তিনি বলেছেন,একসময় যারা ক্রীড়াঙ্গনে ভালো ফুটবল খেলতেন,ছাত্র হিসেবে ভালো রিজাল্ট করতেন,সাহিত্য চর্চায় যারা অগ্রসর ছিলেন আমরা তাদেরকে নায়ক ভাবতাম। এখন যারা কালো টাকার মালিক,ক্যাডার সন্ত্রাসী লালন করেন তাদেরকে আমরা নায়ক এবং নেতা মনে করি।

    আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি এখন পাল্টে গেছে। আমরা মেধা ও প্রতিভার মূল্যায়ন ও বিকাশ না করে জিপিএ ৫ এর জন্য সন্তানদেরকে উদ্বুদ্ধ করছি। কিন্তু বিদেশে এখনও মানুষ বই হাতে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়।
    পার্কে ও লাইব্রেরীতে সর্বত্রই তারা ছুটে বেড়ায় জ্ঞানের অন্বেষণে। একসময় সুনামগঞ্জে
    বিকেল বেলা দৈনিক পত্রিকা বাজারে আসতো। সেই সময় ছাত্ররা নির্ধারিত
    পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি পত্রিকা ও বই পড়ায় আগ্রহী ছিল। এখন ফেইসবুকে পরনিন্দা ও
    গীবত চর্চা করা হয়। তাই সন্তানদেরকে, নতুন প্রজন্মকে বই ও পত্রিকা পড়ার প্রতি
    আরো বেশী আগ্রহী করে তুলতে হবে। তিনি বলেন,আমি রাজনীতির মঞ্চে বক্তব্য দেই।
    সাহিত্যের অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়া খুব কঠিন। কিন্তু সংবর্ধিত সুখেন্দু সেনদাকে নিয়ে
    বলা অত্যন্ত সহজ। তাই আমি এসেছি একজন গুণি লেখক,কবি,গবেষক হিসেবে আমার
    প্রিয় সুখেন্দু সেনদাকে সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে এই জন্য তাকে আমার শ্রদ্ধা কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানাতে। আমরা স্কুল জীবনে দাদাকে চিনতাম একজন ব্যাংকার হিসেবে।তিনি অবসর গ্রহণে আসার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখি শুরু করলেন। দাদার প্রথম যে বইটি বের হয়, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক। স্মরণার্থী শিবিরে মানুষের জীবনের দুঃখ দুর্দশার কথা তিনি তুলে ধরেছেন। পরবর্তীতে দাদার আরেকটি বই প্রকাশ পেয়েছে। তাঁর লেখা পড়তে খুব ভালো লাগে। একজন পাঠকের কাছে যে লেখা শুরু করলে শেষ না করা পর্যন্ত উঠা যায় না,সেটাই ভালো লেখা। তিনি পাঠক ধরে রাখতে পারেন। সুখেন্দু দা নিভৃতচারী প্রচারভিমুখ লেখক। তিনি মনের চাহিদার জন্য লেখেন। কোনো বিনিময়ের জন্য নয়। জীবদ্ধশায় তাকে মূল্যায়ন করে প্রবাসী সাংবাদিক রনেন্দ্র তালুকদার পিংকু ও জলকন্যা সাহিত্য পরিষদ একটি ভালো কাজ করেছেন। আমি তাদেরকে এ ধরনের মহৎ কাজ অব্যাহত রাখার জন্য অনুরোধ করছি এবং অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকেও। ৩রা জুন শুক্রবার রাত ১০টায় সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে লেখক কবি গবেষক সুখেন্দু সেন এর সম্মানার্থে জলকন্যা সাহিত্য পরিষদ আয়োজিত লেখক সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ এসব কথা বলেন।
    জলকন্যা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি কবি কোহিনূর বেগমের সভাপতিত্বে ও প্রভাষক মশিউর রহমানের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত, সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি লতিফুর রহমান রাজু,পৌর কাউন্সিলর সামিনা চৌধুরী মনি ও জেলা পরিষদের সদস্য সেলিনা আবেদীন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কবি রাকু রাজ চৌধুরী, কবি এসডি সুব্রত, অসীম সরকার, সমাজকর্মী ব্যাংকার সুজাদুল ইসলাম,ব্যাংকার আশরাফ হোসাইন লিটন,
    প্রভাষক মো. আতাউল করিম, প্রভাষক কবি ফজলুল হক দুলন, প্রভাষক দুলাল মিয়া,প্রভাষক সবিতা বীর ও লেখক মাসুদ আহমেদ প্রমুখ।
    মেয়র নাদের বখত বলেন, সুখেন্দু দা মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলিতে স্মরণার্থীদের কষ্ঠের কথা সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি কবিতা দিয়ে সমাজের কথা উপস্থাপন করেছেন। মেয়র বলেন, লেখালেখির মধ্যে অনেক অসচ্ছল লেখক আছেন, যারা বই প্রকাশ করতে পারে না। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি লাইব্রেরির মাধ্যমে চেষ্টা করবো অন্তত বছরে একটা বই প্রকাশ করতে। তিনি বলেন প্রতিটা মানুষের কাজের স্বীকৃতি তাকে আরো উৎসাহিত করে। সংবর্ধিত কবি লেখক সুখেন্দু সেন বলেন, আমি সম্মানের সাথে সম্মাননা গ্রহণ করছি।
    নি:স্বার্থভাবে সাহিত্যের কাজ করে যাচ্ছেন রনেন্দ্র তালুকদার পিংকু। আমি সংকুচিত হয়েও গৌরবের সাথে সম্মাননা গ্রহন করছি। পিংকুর আন্তরিকতাকে আমি সম্মাান জানাই। সে সুনামগঞ্জের জন্য অনেক কিছু করছে। নি:সন্দেহে এই সম্মাননা আমাকে আরও অনুপ্রাণিত করবে। আমাদের জল আছে জোছনা আছে। সবার সহযোগিতায় আমরা সুনামগঞ্জ কে জল জোছনার প্রাণের শহর,কবিতার শহর ও গান এবং আড্ডার শহর হিসেবে গড়ে তুলবো।
    অনুষ্ঠানে লেখক, কবি ও গবেষক সুখেন্দু সেনকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। এ মহতি অনুষ্ঠানটি শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে শুরু হয়ে রাত সাড়ে ১০টায় সম্পন্ন হয়।

    আরও খবর

    Sponsered content