আঙ্কারার আনুষ্ঠানিক অনুরোধে জাতিসংঘ সম্মত হওয়ায় এখন থেকে তুরস্ক বিশ্বসংস্থায় ইংরেজি ধাঁচের নাম টার্কি-র বদলে ‘তুর্কিয়ে’ নামে পরিচিত হবে।
দেশের নাম কিছুটা পরিবর্তন করতে গত বছরের শেষের দিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান একটি ‘রিব্র্যান্ডিং’ প্রচারণা শুরু করেন। এর অংশ হিসেবে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থাকে তাদের খাতাপত্রে দেশটির নাম পরিবর্তন করতে বলা হবে।
রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান গত ডিসেম্বরে বলেন, ‘তুর্কি জনগণের সংস্কৃতি, সভ্যতা এবং মূল্যবোধের সেরা উপস্থাপনা এবং অভিব্যক্তি হয় তুর্কিয়ে নামের মাধ্যমে।
জাতিসংঘ বলেছে, এই সপ্তাহে তুরস্কের অনুরোধ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা এই পরিবর্তন করেছে।
বেশিরভাগ তুর্কি এরই মধ্যে তাদের দেশকে তুর্কিয়ে নামে চেনে। তবে তুরস্কের ইংরেজি রূপ টার্কি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এমনকি দেশের ভেতরে জনগণের মধ্যেও।
রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান টিআরটি গত বছর সরকারি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই পরিবর্তনটি করতে তৎপর হয়ে পড়ে। তাদের বক্তব্য- নাম বদলানোর অন্যতম কারণ হচ্ছে পাশ্চাত্যের বড়দিন, নববর্ষ বা থ্যাঙ্কসগিভিং উৎসবে যে টার্কি পাখি খাওয়া হয় তার সঙ্গে নাম ও বানানটির মিল রয়েছে। ইংরেজি অভিধানে টার্কির শব্দার্থ হিসেবে পাখির নাম ছাড়াও ‘এমন কিছু যা বাজেভাবে ব্যর্থ হয়’ বা ‘ বোকা ব্যক্তি’ লেখা হয়েছে।
সরকারের এই পদক্ষেপে অনলাইনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তারা এটিকে সমর্থন করছেন। তবে অন্যরা বলছেন যে এটি জনগণের মন ঘোরানোর ব্যর্থ কায়দা। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে আগামী বছর নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
কোনো দেশের নাম পরিবর্তন করা অবশ্য অস্বাভাবিক নয়। ২০২০ সালে নেদারল্যান্ডস ‘রিব্র্যান্ডিং’ পদক্ষেপে কাগজপত্র থেকে বহুল পরিচিত ‘হল্যান্ড’কে আনুষ্ঠানিকভাবে বাদ দেয়। তার আগে গ্রিসের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধের কারণে ম্যাসিডোনিয়া তার নাম পরিবর্তন করে উত্তর মেসিডোনিয়া রাখে। সোয়াজিল্যান্ড ২০১৮ সালে হয়ে যায় এসোয়াতিনি।
ইতিহাসে আরও পেছনে গেলে- ইরানকে একসময় পারস্য বলা হত, সিয়াম এখন থাইল্যান্ড, রোডেশিয়ার নাম হয়েছে জিম্বাবুয়ে আর শ্রীলঙ্কার নাম ছিল সিলোন। সূত্র: বিবিসি