প্রতিনিধি ১১ মে ২০২২ , ২:৪৩:০৪ অনলাইন সংস্করণ
আল-হেলাল,সুনামগঞ্জ : ইভটিজিং এর প্রতিবাদের জের ধরে সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ইউপি চেয়ারম্যান এর ভাই ভাতিজাদের হাতে প্রায় ১৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে শহীদুল (১৮) কে আশংকাজনক অবস্থায় সিলেটস্থ এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রত্যেক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের সংগ্রামপুর গ্রামের আব্দুল কাইয়্যুমের ছেলে বখাটে হাসান (২২) সম্প্রতি স্থানীয় হাজী মজিদ উল্লাহ পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন ছাত্রীকে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার পথে উত্যেক্ত করে যাচ্ছিলো। ছাত্রীর অভিভাবকরা বখাটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ঐ বখাটের আপন চাচা ও স্থানীয় ফতেহপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ এর কাছে বিচারপ্রার্থী হন। চেয়ারম্যান ঘটনাটি তাৎক্ষনিকভাবে নিস্পত্তি না করে দেখতেছি বলে কালবিলম্ব করায় গত ৮ মে রোববার বিকেলে ভিকটিমের বাড়ী দুলভারচর গ্রামে এসে ভিকটিম ছাত্রীর ছোট ভাই আবিদ (১৩) কে বেদম মারপিঠক্রমে আহত করে বখাটে হাসান। ভিকটিম ছাত্রীর পক্ষে শ্যামারকান্দি গ্রামের আত্মীয় স্বজনরা ঐ ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে রোববার বাদ মাগরিব চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ উত্তেজিতদের কে আবারও ঘটনাটি নিস্পত্তি করবেন বলে প্রতিশ্রæতি দেন। কিন্তু চেয়ারম্যান তার প্রতিশ্রæতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হওয়ায় এবং ঘটনাটি নিয়ে কোন ধরনের সালিশ বৈঠকে না বসায় বখাটে হাসান ও তার পিতা আব্দুল কাইয়্যুমসহ সংগ্রামপুর গ্রামের আত্মীয় স্বজনরা ৯ মে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় দুলভারচর পরগনার বাজারের কাছে ভিকটিম ছাত্রীর পিতা আজিজুর রহমানের দুলভারচর গ্রামের বাড়ীতে হামলা করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে আজিজুর রহমানের শ্যামারকান্দি গ্রামের আত্মীয় স্বজনরা তাদেরকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে সংগ্রামপুর গ্রামের চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ এর ভাই আব্দুল কাইয়্যুমসহ অপরাপর আত্মীয় স্বজনরা হাতে লোহার রড,দা লাটিসহ দেশীয় অস্ত্রাদি নিয়ে বেআইনী জনতাবদ্ধে মিলিত হয়ে দুলভারচর পরগনার বাজারে পূর্ব পরিকল্পিত হামলা করে শ্যামারকান্দি গ্রামের মৃত নুরুল ইসলাম চৌধুরীর পুত্র সাবেক ইউপি সদস্য মনসুর নূর চৌধুরী (৫০) ও তার ভাই আশিক নূর চৌধুরী (৪০),একই গ্রামের আব্দুল মন্নান চৌধুরীর পুত্র এরশাদ চৌধুরী (৩৮),নজির পাটানের পুত্র মকসিন (২০) কে গুরুতর আহত করে। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে পার্শ্ববর্তী ভাটিপাড়া গ্রামের মৃত রজব আলীর পুত্র শহীদুল (১৮) গুরুতর আহত হন। এছাড়াও চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ এর আত্মীয় স্বজনদের হাতে পার্শ্ববর্তী নিয়ামতপুর ও দুলভারচর গ্রামের আরো ১৫ জন লোক আহত হন। ঘটনার পরপরই আহতদেরকে জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। আহত আশিক নূর সাংবাদিকদের জানান,চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ কে ইভটিজিং এর ঘটনার কথা আমরা ভিকটিম পরিবারের পক্ষ থেকে অবগত করি। তিনি ঘটনাটি নিস্পত্তি না করায় তার উস্কানীতেই এই হামলার ঘটনা সংগঠিত হয়েছে। চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ বলেন,ঘটনার সময় আমি বিশ্বম্ভরপুরে এসআই আরপিনের সাথে বসা ছিলাম। ঘটনার সংবাদ জানতে পেরে আমিই পুলিশ প্রশাসনকে অবগত করে ঘটনাস্থলে প্রেরণ করি। ইভটিজিং এর ব্যাপারে আমাকে কেউ কোন কিছু জানায়নি এবং আমার কাছে কেউ বিচারপ্রার্থী হয়নি। অন্যদিকে ঘটনার সংবাদ পেয়ে বিশ্বম্ভরপুর থানার এসআই আরপিন ও বাচ্চুর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। বিশ্বম্ভরপুর থানার ওসি মোঃ ইকবাল হোসেন,ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,আমরা ঘটনার সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষনিকভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশ প্রেরণ না করলে হয়তো পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে পারতো। তিনি একপক্ষে ৮জন এবং অপরপক্ষে ২জন আহত হয়েছে উল্লেখ করে বলেন,চেয়ারম্যান যদি আমাদেরকে ইভটিজিং এর ঘটনার কথা তাৎক্ষনিকভাবে অবগত করতেন তাহলে ঐ ঘটনা সংগঠিত হতনা। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানান ওসি।