প্রতিনিধি ১৩ এপ্রিল ২০২২ , ৭:১৬:৪০ অনলাইন সংস্করণ
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: মায়ের কাছ থেকে সন্তানকে আলাদাঃ রায়ে ক্ষুদ্ধ দিরাইর মিতালী রানী দাসের রিভিশন মোকদ্দমা দায়ের। ঘটনার বিবরণে জানা যায়- বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত দিরাই,সুনামগঞ্জ এর বিবিধ-৯৩/২০১৯ইং (দিরাই), অভিযোগ ঃ-ফৌঃ কাঃ বিঃ ১০০ধারার মোকদ্দমায় বিজ্ঞ বিচারক কর্তৃক প্রদত্ত বিগত ৩১/১২/২০১৯ইং তারিখে যে বিতর্কিত আদেশ প্রদান করেছেন তৎ বিরুদ্ধে প্রার্থীপক্ষ সংক্ষুদ্ধ, মর্মাহত,অসন্তোষ্ট ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে ন্যায় বিচারের প্রার্থনায় সন্তানকে কাছে পাওয়ার আশায় অসহায় মা মিতালী রানী দাস, বাদী হয়ে দিরাই থানাধীন তাড়ল ইউনিয়নের ভাঙ্গাডহর গ্রামের বাসিন্দা স্বামী সমীরন চন্দ্র দাস(৩৫), ২য় স্ত্রী মাধবী দাস(২৫)কে আসামী করে সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ফৌজদারী রিভিশন মোকদ্দমা নং-১২৩/২০২১ইং দায়ের করেন। মোকদ্দমা সুত্রে জানা যায়, মিতালী রানী দাস দিরাই থানাধীন করিমপুর ইউনিয়নের পুরাতন কর্ণগাওঁ গ্রামের লব নারায়ন দাসের মেয়ে। বিগত ৫/৮/২০১১ইং তারিখে সনাতন ধর্মের বিধান মোতাবেক ভাঙ্গাডহর গ্রামের সমীরন চন্দ্র দাসের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর ২০১৬ সালে স্বামী সমিরন চন্দ্র দাস দিরাই উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের উত্তর রনারচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এই শিক্ষক পেশ্য়া যোগদানের পর সিলেটে তার আপন বড়ভাই সজ্ঞিত দাসের বাসায় কর্মরত কাজের মেয়ে মাধবী রানী দাসের সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়ানোর পর তার স্ত্রী মিতালী রানী দাসের সাথে খারাপ আচরণ শুরু করেন এবং এই বিষয়টি জানতে পেরে মিতালী স্বামী সমিরণ দাসকে বাধ্ ানিষেধ করলে তিনি মিতালীর উপর চালান অত্যাচার নির্যাতনের স্টীম রোলার। এভাবে কাজের মেয়ের সাথে চলতে থাকে সমিরনের অবৈধ প্রনয় ও শারীরিক মেলামেশা। বিবাহের পর তাদের দাম্পত্য জীবনে সমীরন চন্দ্র দাসের ঔরষে মিতালী রানী দাসের গর্ভে একটি পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহন করে। সন্তানের নাম স্বাগত দাস ওরফে সদ্য দাস বর্তমান বয়স ১০ বছর। জানা যায় বিবাহের পর থেকে মিতালী রানী দাসের স্বামী সমীরন চন্দ্র দাস বিভিন্ন সময় মিতালী রানী দাসের পিত্রালয় থেকে দুই লক্ষ্য টাকা যৌতুক এনে দেওয়ার জন্য মিতালীর উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে মিতালী রানী দাসের উপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। শিশু সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে মিতালী রানী দাস স্বামীর অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করে সংসার পরিচালনা করতে থাকে। স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে অবশেষে বিষয়টি মিতালী রানী দাস তার বাবা ও ভাইয়ের কাছে জানালে মিতালীর সুখের কথা চিন্তা করে জমি বিক্রি করে যৌতুক লোভী স্বামীকে নগদ এক লক্ষ টাকা দিয়ে বাকী এক লক্ষ টাকা দিতে পারবেনা বলে অপরাগতা প্রকাশ করে মিতালী রানীর বাবা ও ভাই এবং মিতালীর উপর কোন ধরনের অত্যাচার না করার জন্য অনুরোধ করেন তারা। এক লক্ষ টাকা পেয়ে যৌতুক লোভী স্বামী সমীরন চন্দ্র দাস কিছু দিন সুন্দর ভাবে সংসার পরিচালনা করে আবার যৌতুকের জন্য স্ত্রী মিতালী রানী দাসের উপর অমানসিক ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করতে থাকে। এক পর্যায়ে মিতালীর অবুঝ শিশু সন্তানকে আটকে রেখে মিতালী রানীকে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে তার পিত্রালয়ে পাঠিয়ে দেয় যৌতুকলোভী স্বামী সমীরন চন্দ্র দাস। ঘটনার কিছুদিন পর প্রথম স্ত্রী মিতালী রানী দাস পিত্রালয়ে থাকা অবস্থায় তার অনুমতি না নিয়েই নারী লোভী লম্পট যৌতুক লোভী স্বামী সমীরন চন্দ্র দাস অন্যত্র মাধবী রানী দাস নামে এক কাজের মেয়েকে বিবাহ করেন । একদিকে সন্তানহারা অন্যদিকে স্বামীর সংসার ভেঙ্গে যাওয়া সব মিলিয়ে পিত্রালয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন অসহায় মিতালী রানী দাস। ন্যায় বিচারের জন্য আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরে সেখানেও ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হলেন মিতালী রানী দাস। বিজ্ঞ আদালত মায়ের বুক খালি করে শিশু সন্তানকে (স্বামী) পিতার হাতে তুলে দেওয়া হলো। সেখানে সৎ মা এবং যৌতুক লোভী পিতার কাছে কতটুকু নিরাপদে থাকবে শিশুটি সেই প্রশ্ন থেকেই যায়? অবশেষে শিশু সন্তানকে মায়ের বুকে ফিরিয়ে আনতে এবং কাছে পাওয়ার আশায় গত ৩১/১২/২০১৯ইং তারিখে বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত দিরাই, সুনামগঞ্জ এর বিতর্কিত ও বেআইনী আদেশ সংশোধন এবং যৌতুক লোভী স্বামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ফৌজদারী রিভিশন মোকদ্দমা নং ১২৩/২০২১ইং দায়ের করেন তিনি। কিন্তু বিজ্ঞ আদালত থেকে এখন পর্যন্ত ন্যায় বিচারের কোন আশা না পেয়ে অসহায় মিতালী রানী দাস তার শিশু সন্তানকে ফিরে পেতে আদালত পাড়ায় দিনের পর দিন ঘুরছেন। অসহায় মিতালী কি তার শিশু সন্তানকে ফিরে পাবেন ? আদালত কি মায়ের বুকে তার সন্তানকে ফিরিয়ে দিবেন? নাকি ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হবেন মিতালীর মত অসহায় নারীরা, আর সমাজে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াবে যৌতুকলোভী নারীলোভী স্বামী সমিরন ? কবে মিতালীর মত অসহায় নারীরা আদালতে ন্যায় বিচার পাবে? সেই আশায় চোখের পানি ঝরে আদালতের দিকে তাকিয়ে হাজারো মিতালীরা কাদঁলে ও আশার বানী নীরবেই কাদেঁ। মিতালীসহ হাজারো নারী কি যৌতুকলোভী স্বামীর অত্যাচার নির্যাতন ও স্বামী সন্তানের অধিকার থেকে চিরদিন বঞ্চিত থাকবে কবে দেশে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে? সেই প্রত্যাশায় প্রহর গুনছে অসহায় মিতালী ও তার পরিবারের লোকেরা। এ ব্যাপারে মামলার বাদি মিতালী রানী দাস কান্নাজড়িত কণ্ঠে তার একমাত্র অবুঝ ছেলে সন্তানকে ফিরিয়ে দিতে সরকার প্রধান শেখ হাসিনা ও স্তানীয় প্রশাসনের উধর্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানান। এ ব্যাপারে মামলা বিবাদি সমিরণ দাসের সাথে তার স্ত্রী মামলার বাদি মিতালী রানী দাসের বিরোধের কারণ এবং সন্তান ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি জানান,বিয়ের পর থেকেই মিতালীর সাথে আমার বনিবনা হচ্ছিল । এ কারণেই ২০১৯ সালে আমার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করলে আদালতের বিচারক সন্তানটিকে আমার কাছে থাকার অনুমতি প্রদান করেন বলেই ছেলেকে আমাকে কাছে রেখেছি।