• অনিয়ম / দুর্নীতি

    ঠাকুরগাঁওয়ের অনির্দিষ্টকালের জন্য হোটেল রেস্তোরা ও বেকারি বন্ধ ঘোষণা বিপাকে বহিরাগত ও রোজাদাররা

      প্রতিনিধি ১৩ এপ্রিল ২০২২ , ৭:০৯:০৬ অনলাইন সংস্করণ

    ঠাকুরগাঁও থেকে মাহমুদ আহসান হাবিব॥ ঠাকুরগাঁওয়ের অনির্দিষ্টকালের জন্য হোটেল রেস্তোরা ও বেকারি বন্ধ ঘোষণা বিপাকে বহিরাগত ও রোজাদাররা। সম্প্রতি ঠাকুরগাঁও শহরে দুটি হোটেলে ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে দুই ম্যানেজারকে এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়ার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য হোটেল-রেস্তোরা বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। একইসাথে জেলার বেকারিগুলোতে শ্রমীক না থাকার শঙ্কায় বেকারিসহ বিভিন্ন খাবারের প্রতিষ্ঠানও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালিকেরা। গত মঙ্গলবার রাতে এক জরুরি সভায় একাত্ম হয়ে এ সিদ্ধান্ত দেন বাংলাদেশ রেস্তোরা মালিক সমিতি ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার সভাপতি অতুল কুমার পাল এবং জেলা হোটেল ও বেকারি শ্রমীক ইউনিয়নের সভাপতি জয়নাল আবেদিন। অপরদিকে জেলাজুড়ে চলমান হোটেল-রেস্তোরা-বেকারির শ্রমীক ও মালিকদের ডাকা ধর্মঘটে বিপাকে পরেছে আবাসিক হোটেলে থাকা রোজদাররা সহ ব্যবসায়িক বা অন্য কাজে আসা বহিরাগত এবং হাসপাতালে থাকা রোগীর স্বজনরা। ব্যবসাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে বাইরের জেলা থেকে মানুষেরা আসে ঠাকুরগাঁও জেলায়। এদের মধ্যে রোজাদারদের বড় অংশই সেহেরীর জন্যে হোটেলে উপরে নির্ভর করে। এছাড়াও শহরস্থ অনেক স্থায়ী অস্থায়ী বসবাসকারীরা সেহেরির জন্যে হোটেল বা রেস্তোর উপরে নির্ভর করে। তবে আগেরদিন রাতে হঠাৎ হোটেল শ্রমীক ও মালিকদের ডাকা ধর্মঘটের কারনে বিপাকে পরেছে এসকল মানুষ। অসুস্থ মাকে নিয়ে পাশের উপজেলা থেকে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা মহিদুল জানান, হাসপাতালে কোনো ক্যান্টিন নেই। এখানে সেহেরির সময় খাবারো দেয়না। রোগী নিয়ে হাসপাতালে অবস্থান করা আমার মতো প্রায় ৪শ স্বজন সেহেরীর জন্যে হোটেলের উপরে নির্ভরশীল। ধর্মঘটের কারনে কেউ সেহেরী খেতে পারিনি। বগুড়া ও রাজশাহী থেকে আসা কাঁচামাল ব্যবসায়ী রাজ্জাক,কাশেম,ফিরোজ জানান, সেহেরির সময় অনেক খোঁজাখোঁজি করেছি। তবে কোনো হোটেল খোলা পাইনি। ব্যবসার কাজে আসা কাঁচামাল আড়তের সবাই একই ভোগান্তিতে পরেছে। এর আগে, গত মঙ্গলবার বিকেলে নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩’ এর অধীন ‘বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত’ পরিচালনা করেন ঠাকুরগাঁও চীফ জুডিশিয়ালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলাম। উক্ত আইনের তফসিল এ বর্নিত ৩৪ ধারায় অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় শহরের চৌরাস্তার গাওসিয়া হোটেল ও রোজ হোটেল এর ম্যানেজার -দ্বয়ের প্রত্যেককে তিন লাখ টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে এক বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড আরোপ করা হয়। দুইটি হোটেলে ৩ লক্ষ করে ৬ লক্ষটাকা জরিমানা করে। এই সময় রোজ হোটেলের ম্যানেজার রুবেল হোসেন ও গাওসিয়া হোটেলের ম্যানেজারকে আটক করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দুই হোটেলের শ্রমিক সহ জেলার শতাধিক হোটেল শ্রমিক জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করে ও চৌরাস্তা, ট্রাফিক মোড়ে ইফতারি খাবার ফেলে প্রতিবাদ করেন। সে সময় শ্রমীক হেনস্থার প্রতিবাদ জানিয়ে আটক শ্রমীকের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত কর্ম বিরতি ঘোষনা করে হোটেল শ্রমীকরা। বাংলাদেশ রেস্তোরা মালিক সমিতি ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার সভাপতি অতুল কুমার পাল বলেন, নিরাপদ খাদ্য আইনে তুচ্ছ ভুলের কারনে হোটেল রোজ ও গাওসিয়াকে তিন লাখ করে ছয় লাখ টাকা জরিমানা করেছে। এ সময় রোজ হোটেলের ম্যানেজার ও গাওসিয়ার ম্যানেজারকে ভ্রাম্যমানে ১ বছর করে সাজা দেয়া হয়। এ কারনে কর্ম বিরতি দিয়েছে শ্রমিকরা। তারা হোটেলে না আসলে হোটেল খোলা রাখা বন্ধ রাখা সমান কথা৷ আমরা তাদের সিদ্ধান্তে একাত্মতা প্রকাশ করছি। সেই সাথে অতিরিক্ত জরিমানা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আমরাও হোটেল না খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ঠাকুরগাঁও চীফ জুডিশিয়ালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলাম জানান, এখন থেকে নিয়মিতভাবে ঠাকুরগাঁওয়ে ‘বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত’ পরিচালনা করা হবে

    আরও খবর

    Sponsered content