প্রতিনিধি ২২ মার্চ ২০২২ , ১:২১:২২ অনলাইন সংস্করণ
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ হাওরের জেলা সুনামগঞ্জের বোরো ফসল রক্ষার জন্য প্রতিবছর সরকার শতকোটি টাকার উপরে বরাদ্দ দিয়ে থাকেন। এজন্য জেলার প্রতিটি উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় প্রতিটি জায়গাতে প্রকৃত কৃষকদের পিআইসি কমিটিতে অর্ন্তভুক্ত করে গঠন করে দেয়া হয়। এই বাধেঁর কাজগুলো সঠিক সময়ে টেকসই বাধঁ নির্মাণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক একটা নীতিমালা প্রণয়ন করে সময়সীমা নির্ধারন করে দেয়া হয়। যেমনটি গেল বছরের ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে কাজ শুরু করে ২৮ ফেব্রæয়ারীর মধ্য বাধেঁর কাজ সম্পূর্ণভাবে শেষ করার কথা থাকলেও গতকাল বরিবার পর্যন্ত বিভিন্ন হাওরে ঘুরে দেখা যায কোথাও কোথাও এখনো পুরোপুরি বাধেঁর কাজ শেষ হয়নি। ফলে কৃষকরা তাদের কষ্টার্জিত সোনালী ফসল নিয়ে থাকেন দুচিন্তায়।
তবে কোন কোন বাধ ঘুরে দেখা যায সময় সীমার মধ্যে বাধেঁর কাজ শেষ হলেও পিআইসির সদ্যসরা শতভাগ বিলের মধ্যে এখনো মাত্র দুটি বিলে ৪০ ভাগ বিল পেয়েছেন। এখনো বাকি রয়ে গেছে ৬০ ভাগ বিলের টাকা।
গতকাল সরেজমিনে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বীরাগাওঁ ইউনিয়নের খাই-হাওরে বেশ কয়েকটি বাধঁ পরিদশর্নে গিয়ে দেখা যায় ১৮ নং,১৯ ও ২০ নং বাধেঁর কাজ পুরোপুরি শেষ করেছেন এবং বাধেঁর সাইডে দিয়ে দুর্বরা ঘাস লাগানোর কাজ ও শেষ। এ সময় বাদেঁর পাশে গিয়ে দেখা হয় ১৯ নং পিআইসির সভাপতি নুরুল হোসেন ও সাধারন সম্পাদক নজীর হোসেনের সাথে এবং কথা হয় বাধেঁর অগ্রগতি নিয়ে। এই বাধেঁর কাজের পরিমান হলো দৈর্ঘ্য হলো ৪৬৫ মিটার লম্বা আর বরাদ্দ হলো ২১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা,তারা কাজ শেষ করেছেন ২৮ ফেব্রæয়ারীর মধ্যে। কিন্তু প্রথম বিল পেয়েছেন ২৫ ভাগ আর দ্বিতীয় বিলটি পেয়েছেন প্রায় ১৪ ভাগ। এই বাধেঁর কাজ সরকারের নির্ধারিত সময়ম সীমার মধ্যে শেষ করতে আশপাশের লোকজনের নিকট হতে চুড়াসুদে টাকা এনেছেন। কিন্তু বাধেঁর সম্পূর্ণ কাজ শেষ করার প্রায় একমাস পেরিয়ে গেলেও তৃতীয় এবং শেষ বিলটি কবে পাবেন সেই দুচিন্তায় দিন কাটছে তাদের। পাশে বাধেঁ গিয়ে দেখা হয় ২০নং পিআইসি কমিটির সভাপতি ও পশ্চিম বীরগাঁও ইউপি সদস্য মো.এমরান হোসেনের সাথে। তার বাধেঁর দৈর্ঘ্য ৪৯৫ মিটার বরাদ্দ ২০ লাখ ১১ হাজার টাকা। পাশে ১৮ নং পিআইসি কমিটির সভাপতি মো. হিরন মিয়ার সাথে। তার বাধেঁর দৈর্ঘ্য ২৪০ মিটার আর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২২ লাখ ৬৯ হাজার টাকা।
ইউপি সদস্য ও ২০ নং পিআইসি কমিটির সভাপতি মো. এমরান হোসেন ও ১৮ নং পিআইসির সভাপতি মো. হিরণ মিয়া দুজনেরই খুব আক্ষেপ করে বলেন সাংবাদিক সাবরা আমরা এখানে পাশাপাশি যে কয়টি পিআইসি রয়েছে এখানে পাশ থেকে যে মাটি কেটে এনে বাধঁ নির্মাণ করা হবে সেই মাটি পাওয়া যায়নি। ফলে অনেক দূর থেকে টলি গাড়ি দিয়ে মাটি আনতে হয়েছে। তারা আরো বলেন,যেহেতু প্রথম পিআইসি কমিটির সভাপতি হলাম তাই সরকারের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাধেঁর কাজ সম্পন্ন করতে রোকজনের নিকট দ্বার দেনা করে এমনকি চড়া চক্রবর্তী সুদেও আমাদেরকে টাকা এনে বাধেঁর কাজ সম্পন্ন করতে হয়েছে। আমরা পাওনাদারদেরকে বলেছিলাম মার্চ মাসের প্রথমদিকে তাদের টাকা পরিশোধ করে দিব। কিন্তু দুঃখের বিষয় সময়সীমার মধ্য বাধেঁর কাজ শেষ করলে ও এখন পর্যন্তু দুটি একটা ২৫ভাগ আর দ্বিতীয়টা ১৪ ভাগ বিল পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে দেওয়া হয়েছে। বাকি সম্পূর্ণ বিলগুলো না পাওয়াতে পাওনাদারদের কত ধরনের যেকথা শুনতে হয় তা কেবল আমরা ভুক্তভোগীরা জানি। দ্রæত গতিতে যাদের পুরোপুরি বাধেঁর কাজ শেষ হয়েছে তাদের পুরো বিল পরিশোধের জন্য সরকার ও স্থানীয় কৃর্তপক্ষের নিকট জোর দাবী জানান।
এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডে সহকারী প্রকৌশলী(এসও) মাহবুব আলম জানান, অল অভার শান্তিগঞ্জ উপজেলার কাউয়াজুরী ও খাই হাওর সহ সবকটি হাওরে এখনো পুরোপুরি বাধেঁর কাজ শেষ না হলেও অধিকাংশ বাধেঁর বাজ দুর্বা লাগানোসহ শেস হয়েছে। যে কয়টি বাধেঁর কাজ অসম্পূর্ণ রয়েছে সেগুলো দু’চারদিনের মধ্যে শেস হয়ে যাবে বলেও তিনি জানান। আর আগামী রমজান শুরুর আগেই তৃতীয় বিলটি পিআইসিদের নিকট দেয়া হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।