প্রতিনিধি ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ , ৭:৩৩:৩৮ অনলাইন সংস্করণ
শফিকুল ইসলাম স্বাধীন বিশেষ প্রতিনিধিঃ কাশ্মীরের সৌন্দর্য বিশ্বের সব পর্যটককেই মুগ্ধ করে। সেখানকার অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য সবাইকে আকর্ষিত করে। তবে চাইলেও অনেকেই যেতে পারেন না কাশ্মীরে। তারা কিন্তু সহজেই ঘুরে আসতে পারেন ‘বাংলার কাশ্মীর’ থেকে। নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন! ভাবছেন, দেশের মধ্যে আবার বাংলার কাশ্মীর কোথায়। সুনামগঞ্জ তাহিরপুর উপজেলার সেই বারেক টিলা,রূপের নদী যাদুকাটা,ধুধু বালুচর,যেমন লাল শাড়িতে সাজিয়ে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী জয়নাল আবদীন শিমুল বাগান, নীলাদ্রি শহীদ সিরাজ লেক,লাল ঘাটের,ঝর্ণা ও টাংগার হাওর। বিপুল সম্ভাবনা আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ডালা সাজিয়ে আছে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব দিগন্তে অবস্থিত ভাটির জনপদ। সৌন্দর্যের ষোলোকলায় পরিপূর্ণ এক লীলাভূমি যাদুকাটা নদী। দেশের এ প্রান্তিক জনপদে প্রকৃতি যেন অকৃপণ হাতে বিলিয়ে দিয়েছে অফুরন্ত সম্পদ, সম্ভাবনা আর অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্য। নীল আকাশে সাদা মেঘের খেলা। কখনো জমাট আবার কখনো হালকা বাতাসে দলছুট হয়ে পাগলা ঘোড়ার মত উত্তরে দাঁড়ানো আকাশে ছোঁয়া বিশাল মেঘালয়ের খাসিয়া পাহাড়ে গিয়ে আছড়ে পড়ছে। বারেক টিলা পূর্বপাশে রূপের নদী যাদুকাটা নদী’র মাঝখানে রয়েছে ধুধু বালুচর যাদুকাটা নদী’র পূর্বপাড়ে রয়েছেন জিন্দা অলি হযরত আরফিন শাহ আস্তানা। বারেক টিলার উপর থেকে দক্ষিণ দিকে তাকালেই দেখা মিলবে জয়নাল আবদিন ঐতিহ্যবাহী শিমুল বাগান এবং বাগান থেকে আধা কিলোমিটার দক্ষিনে গেলে দেখা মিলবে মিলবে সনাতন ধর্মের শ্রী শ্রী চৈতন্যর তীর্থস্থান। অপরদিকে নীল রঙের সবুজ ঘাসের নীল পানির খেলা মেতে উঠেছে নীলাদ্রি শহীদ সিরাজ লেক। বারেক টিলা থেকে এক কিলোমিটার পশ্চিমে গেলে দেখা মিলবে নীলাদ্রি শহীদ সিরাজ লেক। এই লেকটি দেখলে মনে হয় বাংলার কাশ্মীর এই নিলাদ্রী লেক। এই লেকটিকে বর্তমানে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সিরাজের নামে নামকরণ করা হয়েছে। তাই শহীদ সিরাজ লেকও বলে থাকেন। স্থানীয় লোকজন এই জায়গাটাকে বলে ‘খোয়ারী’ অথবা ‘কেয়ারি’। ১৯৪০ সাল থেকে এই জায়গায় চুনাপাথর উত্তোলন শুরু হয়। ১৯৪৭ এর পরে বন্ধ হয়ে বেশ কয়েক বছর অচল পড়ে থাকে নিলাদ্রী। ১৯৬০ সালে জরিপ চালিয়ে দেখা যায় যে এখানে প্রায় ৩৭০ একর জায়গাজুড়ে চুনাপাথরের খনি আছে। সেখানে এখনও পাড়ে আছে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সেই সময়ের অবশিষ্ট যন্ত্রাংশের দেখা মেলে আবার গুলোকে স্থানীয় লোকজন বিভিন্ন নামে প্রকাশ করেন কেউ কেউ বলে ঢ্যাগ লাইন আবার মিনি রেল এখনো কিছু কিছু জায়গায় দেখা যায় মাটির সাথে মিশে যাচ্ছে সেই মিনি রেল লাইন। নিলাদ্রী লেকের ওপারেই রয়েছে ভারতের মেঘালয় পাহাড়। দেখে মনে হয় যেন হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যাবে। পাহাড় ঘেঁষে আছে নীল রঙ্গের লেকের পানি এথে ছোট ছোট নৌকায় করে ঘুরে বেড়ানো যায়। তবে নিলাদ্রী লেক অত্যন্ত গভীর প্রায় অর্ধশতাধিক এরও বেশি ফুট গভীর তাই সাঁতার না জানলে নৌকায় না উঠাই ভালো। লেক’তে অল্প কতটুকু পশ্চিমে গেলে লালঘাট নামক স্থান সেই অপূর্ব ঝর্ণাটি দেখা মিলবে দেখলে মনে হবে এখান থেকে ফিরে না আসি। সুতরাং এটা হলো ভারত সীমান্ত এখানে গেলে যেকোনো সময় সীমান্ত রক্ষীর হামলার শিকার হতে পারেন এবং বিজিবি বা স্থানীয় লোকজনের পরামর্শ এবং কথা বলে যাওয়াটা ভালো হবে। এসব দেখে চলে গেলে হবে না আসুন অথিতি পাখির গান শুনে যাওয়া যাক নীলাদ্রি লেক থেকে হেমন্তকালে মোটরসাইকেল ও বর্ষাকালে নৌকা যোগে ভ্রমণ করা যায় সেই টাংগার হাওয় অতিথি পাখির গান আর মাছের খেলায় মেতে উঠেছে টাংগর হাওর হিজল করচ গাছ। শুধু ঢাকা নয় সড়কপথে দেশের যেকো জায়গা থেকে সবার আগে সুনামগঞ্জ আসতে হবে এবং সুনামগঞ্জ আব্দুল জহুর সেতুর উপর থেকে মোটরসাইকেল অথবা সিএনজি যোগে আসা যায়। জেনে নেন সুনামগঞ্জ,জেলার,দর্শনীয়,বেশ কিছু স্থান। ১। টাঙ্গুয়ার হাওর ( তাহিরপুর) ২। ডলুরা শহীদদের সমাধি ( সদর) ৩। গৌরারং জমিদার বাড়ি ( সদর) ৪। বাউল শাহ আব্দুল করিমের বাড়ি ( দিরাই ) ৫। জাদুকাটা নদী ( তাহিরপুর ) ৬। বারেকের টিলা ( তাহিরপুর) ৭। শহীদ সিরাজ লেক ( তাহিরপুর) ৮। পাগলা জামে মসজিদ ( শান্তিগঞ্জ) ৯। হাসন রাজার বাড়ি ( সদর) ১০। জগন্নাথ জিউর আখড়া ( সদর) ১১। পাইল গাঁও জমিদার বাড়ি ( জগন্নাথপুর) ১২। সুনামগঞ্জ ঐতিহ্য জাদুঘর ( সদর) ১৩। জয়নাল আবেদীন শিমুল বাগান ( তাহিরপুর) ১৪। নারায়নতলা বর্ডার হাট (সদর) ১৫। লাউড়েরগড় প্রাচীন স্থাপত্য ( তাহিরপুর) ১৬। ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরি ( ছাতক) ১৭। খাসিয়ামারা নদীর উপর রাবার ড্যাম ( দোয়ারাবাজার) ১৮। দোহালিয়া জমিদার বাড়ি ( দোয়ারাবাজার) ১৯। রাধারমণ দত্তের জন্মস্থান ( জগন্নাথপুর) ২০। সুখাইর জমিদার বাড়ি ( ধর্মপাশা) ২১। শ্রী অদ্বৈত মহাপ্রভুর মন্দির ( তাহিরপুর) ২২। বাঁশতলা হকনগর, মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি ( দোয়ারাবাজার) ২৩। শাহ আরেফিনের (র.) এর আস্তানা ( তাহিরপুর) ২৪। রিভার ভিউ, ( সদর) ২৫। করচ বাগান, ( জামালগঞ্জ) ২৬। লালঘাট, টাকেরঘাট, ( তাহিরপুর) ২৭।চেংবিল (বিশ্বম্ভরপুর) ২৮।পাহাড় বিলাস বিনোদন পার্ক (বিশ্বম্ভরপুর) ২৯। হাওর বিলাস (বিশ্বম্ভরপুর)