• সুনামগঞ্জ

    ছাতকে হতদরিদ্র পরিবারের বসতঘর ভাংছুর, লুটপাট ও জবরদখলের অভিযোগ

      প্রতিনিধি ১৫ জানুয়ারি ২০২২ , ৮:০৮:২৭ অনলাইন সংস্করণ

    সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের ছাতকে এক নীরিহ পরিবারের বসতঘর ভাংছুর করে লুটপাট ও জবর দখলের অভিযোগ উঠেছে আজ শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে থানা পুলিশ।
    জানা যায়, ছাতক পৌরসভা এলাকার চরেরবন্দ গ্রামের মৃত. আলমাছ আলীর ছেলে মো. বুরহান উদ্দিন গং মন্ডলিভোগ মৌজাস্থিত জে.এল. নং ২১৭, এস এ খতিয়ান ৪৩, দাগ নং ২৭৭ ইহাতে ০২ শতাংশ ভূমি একই গ্রামের তাদের নানী মৃত. নুর মিয়ার স্ত্রী ছৈয়দুন নেছার কাছ থেকে ক্রয় করেন। এই ভূমি ক্রয়সংক্রান্ত একটি বায়নাপত্রও সম্পাদন করা হয়। এর পর উক্ত ভূমিতে তারা বাড়ী ঘর নির্মাণ করে ভোগদখল করে আসছেন। এরিই মধ্যে মো. বুরহান উদ্দিন গংদের নানী ছৈয়দুন নেছা মারা যান। যার ফলে রেজিষ্ট্রি দলিল সম্পাদন করা সম্ভব হয়নি।
    ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ তাদের মামা আক্তার হোসেন গংদের কাছে এই জায়গা রেজিষ্ট্রি করে দেওয়ার কথা বললে তারা নানা টালবাহানা করতে থাকেন। একসময় তারা জানতে পারেন খরিদা ভূমি সরকারের ভিপি সম্পদের তালিকা ভুক্ত রয়েছে। তাৎক্ষনিক ভাবে তারা ছাতক ভূমি অফিসে বন্দোবস্ত প্রাপ্তির জন্য আবেদন করেন। এছাড়াও ছাতক পৌরসভার হোল্ডিং কর নিয়মিত দিয়ে আসছেন তারা। এ বিষয়ে একাধিকবার সালিস বৈঠক অনুষ্টিত হলেও প্রতিপক্ষের লোকজন এর কিছুই তোয়াক্কা করছেন না।

    ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ গত ৩০ নভেম্বর ২০২১ ইং তারিখে তাদের মারপিট ও লুটপাট করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করা হয়। প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের বসতঘর ভাংছুর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা করা হয়। এর পর গত ৬ জানুয়ারী ২০২২ ইং তারিখে সকাল সাড়ে ১০ ঘটিকার দিকে প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের বসত বাড়ীতে এসে বসত ঘরে হামলা, প্রাণনাশের হুমকিসহ বসত ভিটা হতে উচ্ছেদ করার জন্য বসত ঘর ভেঙ্গে ফেলা হয়। ঘরের টিন, কাঠ, বাঁশ ও কাপড়-চোপড়, আসবাবপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়। সর্বশেষ গত শুক্রবার দুপুর ১২ ঘটিকার সময় তাদের বাড়িতে এসে ছাউনি বিহীন বসত ঘর ভাঙতে শুরু করে প্রতিপক্ষের লোকজন। তাদের বাধার কারনে ভাঙতে না পেরে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যায় তারা।


    এ বিষয়ে ভুুক্তভোগী আমিনা বেগম বলেন, আমার স্বামী মৃত. আলমাছ আলী সেই আমার মা মৃত. ছৈয়দুন নেছার কাছ থেকে ০২ শতাংশ ভূমি ৩০ হাজার টাকায় ক্রয় করেন। আমার মায়ের মৃত্যুর পর আমার ভাইয়েরা ভূমি বিক্রির কথা অস্বীকার করছে। আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া অব্যাহত রেখেছে।
    ভুুক্তভোগী মো. বুরহান উদ্দিনের বলেন, প্রতিপক্ষের লোকজনের অত্যাচারে আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। এ ঘটনায় ছাতক থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করি।
    চরেরবন্দ গ্রামের মুরব্বি, ব্যাবসায়ী সুজন মিয়া ও ছাতক পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সফিক আলি বলেন, উভয় পক্ষের মধ্যে জায়গা সংক্রান্ত ও ফৌজদারী বিষয় রয়েছে। স্থানীয় মুরব্বিয়ানদের উপস্থিতিতে এক সালিশ বৈঠকে বিষয়টি আপোষ মিমাংসা করা হয়েছে। পক্ষ টাকাও দিয়েছে।

    সাবেক কাউন্সিলর নওশাদ মিয়ার কাছে এই টাকা রয়েছে। তিনি আজ-কাল বলে মিমাংশিত বিষয়টি গোলাটে করছেন।


    এ ব্যাপারে সাবেক কাউন্সিলর নওশাদ মিয়ার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আশা করি আগামীকাল (রবিবার) লেনদেন শেষ হবে। কিছু টাকা জমা হয়েছে ও বাকি টাকা চেকের মাধ্যমে আসবে।
    এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আক্তার হোসেনের সঙ্গে মুটোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের মাধ্যমে বিষয়টি সালিশ মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়েছে। টাকাও মধ্যস্থতাকারীর কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্ত পক্ষ টাকা পায়নি। আজ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মধ্যস্থতাকারী বলেছেন আগামীকাল (রবিবার) তাদেরকে টাকা দিবেন।
    এ ব্যাপারে ছাতক থানার এএসআই সোহেল ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মামা ভাগীনার মধ্যে মিমাংশিত একটি বিষয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অন্য কিছু জানার থাকলে তাদের কাছ থেকে জানতে পারেন।
    এ ব্যাপারে ছাতক থানার ওসি মিজানুর রহমান অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

    আরও খবর

    Sponsered content