প্রতিনিধি ৪ ডিসেম্বর ২০২১ , ৫:৩৬:১০ অনলাইন সংস্করণ
সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা: দীন দুনিয়ার মালিক তুমি দ্বীলকি দয়া হয়না, প্রেমের মরা জলে ডুবেনাসহ প্রায় ৬ হাজার গানের রচয়িতা গানের সম্রাট কামাল পাশার (কামাল উদ্দিন) ১২০ তম জন্মবার্ষিকী ৬ ডিসেম্বর। এ উপলক্ষ্যে ৬ ডিসেম্বর সোমবার দিনভর সুনামগঞ্জ জেলা সদরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ ঢাকা-সিলেট ও দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামে বাউল কামাল পাশা সংস্কৃতি সংসদের উদ্যোগে পৃথক পৃথক আলোচনা সভা ও কামালগীতি পরিবেশনের আয়োজন করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে বাউল কামাল পাশা সংস্কৃতি সংসদের উপদেষ্ঠা ২০২০ইং সনে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত সুধী অধ্যাপক ডাঃ উবায়দুল কবীর চৌধুরী বলেন,১৯৫২ সালের ২৭ ফেব্রæয়ারি ঢাকায় ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে ও ভাষা আন্দোলনের সমর্থনে তদানীন্তন সুনামগঞ্জ মহকুমার দিরাই থানার রাজানগর উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায়,“শেখ মুজিব কারাগারে আন্দোলন কেউ নাহি ছাড়ে সত্যাগ্রহে এক কাতারে সামনে আছেন সামাদ ভাই/ঢাকার বুকে গুলি কেন নুরুল আমিন জবাব চাই শীর্ষক দেশাত্ববোধক গান পরিবেশনের মাধ্যমে বাউল কামাল পাশা প্রমাণ করে গেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে দেশে সর্বপ্রথম সংগীত রচয়িতা গীতিকার ও সুরকার হচ্ছেন তিনি। এছাড়া ১৯৫৬ থেকে ৭৩ইং সন পর্যন্ত সুনামগঞ্জ ও দিরাই থানা সদরে বঙ্গবন্ধুর সভামঞ্চে একাধিকবার সঙ্গীত পরিবেশন করে কিংবদন্তী হয়ে আছেন সুনামগঞ্জের এই সংগীতগুরু। মুজিববর্ষে মহান এই সংগীত সাধক কে মরণোত্তর স্বীকৃতি প্রদানের জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জ জেলার পাঁচ প্রধান লোককবির মধ্যমণি ও বাংলাদেশের মরমী সংস্কৃতির উজ্জল নক্ষত্র বাউল কামাল পাশা সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামে ১৯০১ সালের ৬ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮৫ সালের ৩রা মে মোতাবেক ২০ বৈশাখ মৃত্যুবরন করেন। শুধু গান রচনাই নয় ঐতিহাসিক নানকার আন্দোলন,৪৭ এর গণভোট আন্দোলন,৫২ এর ভাষা আন্দোলন,৫৪‘র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন ও ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহনের পাশাপাশি এই শিল্পী স্বাধীকার স্বাধীনতা ও স্বায়ত্বশাসনের পক্ষে গণসঙ্গীত পরিবেশন করেন। বাউল কামাল পাশা স্মৃতি সংসদের সংগ্রহে এই প্রয়াত লোককবির প্রায় ১১০০ গান রয়েছে। বাউল শাহ আব্দুল করিম ও দূর্বীণ শাহের অগ্রজ এই লোকশিল্পী কে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পরপর ৪ বার এবং একুশে পদকে ভূষিত করার জন্য জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে ৮ বার প্রস্তাবনা প্রেরন করা হলেও আজও এই শিল্পী পাননি রাষ্ট্রীয় কোন স্বীকৃতি। মহান এই সঙ্গীত সাধকের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিভিন্ন আসরে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া কামালগীতি পরিবেশন ও উদ্ধারসহ প্রত্যেকটি কর্মসুচিতে উপস্থিত থাকার জন্য দেশের সকল সংস্কৃতিসেবীদের প্রতি উদাত্ত আহবাণ জানিয়েছেন বাউল কামাল পাশা সংস্কৃতি সংসদ সুনামগঞ্জ এর সভাপতি মহিবুর রহমান,সাধারন সম্পাদক সাংবাদিক বাউল আল-হেলাল এবং কামাল পাশা স্মৃতি সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বাউল সাহেব উদ্দিন ও সাধারন সম্পাদক শিল্পী আবুল কাশেম চৌধুরী।