• বিনোদন

    সুনামগঞ্জে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত গান পরিবেশনের মাধ্যমে বাউল কামাল পাশার ১২০তম জন্মবার্ষিকী পালিত

      প্রতিনিধি ৬ ডিসেম্বর ২০২১ , ৯:০৩:২৯ অনলাইন সংস্করণ

    সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা:
    আলোচনা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর উপর রচিত অর্ধ শতাধিক গান পরিবেশনের মাধ্যমে সুনামগঞ্জে গানের সম্রাট বাউল কামাল পাশার (কামাল উদ্দিন) ১২০ তম জন্মবার্ষিকী পালিত হয়েছে। ৬ ডিসেম্বর সোমবার বিকেলে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সুনামগঞ্জ জেলা ইউনিট কমান্ড কার্যালয়ে এ উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি লতিফুর রহমান রাজু। বাউল কামাল পাশা সংস্কৃতি সংসদ এর প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক সাংবাদিক বাউল আল-হেলালের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদর উপজেলা কমান্ড এর সাবেক কমান্ডার আব্দুল মজিদ,সাবেক কমান্ডার রেনু মিয়া,আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী জাহান,জেলা বাউল কল্যাণ সমিতির সভাপতি গীতিকার শাহজাহান সিরাজ,বুলচান্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফারুক আহমদ,সাংবাদিক আশিকুর রহমান পীর,সুরমা তরঙ্গ শিল্পী পরিষদের সাধারন সম্পাদক গীতিকার নির্মল কর জনি,সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অনুদানপ্রাপ্ত সংস্কৃতিসেবী আব্দুল রব আব্দুল্লাহ, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান জহীর আহমদ সোহেল, মোঃ নাছির উদ্দিন ও সংস্কৃতিসেবী পীর মোবারক হোসেনসহ স্থানীয় সংস্কৃতিসেবীরা।
    আলোচনার পাশাপাশি,কামালগীতি পরিবেশন করেন জ্ঞানের সাগর দূর্বিণ শাহ এর শীষ্য প্রবীণ বাউল তছকীর আলী,জেলা বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি বাউল শাহজাহান সিরাজ,গীতিকার বাউল আল-হেলাল,বাউল মজনু পাশার শিষ্য বাউল আমজাদ পাশা,বাউল গোলাপ মিয়া,গীতিকার নির্মল কর জনি, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মোবারক হোসেন,শফিকুল ইসলাম শিস্তার মিয়া ও ক্বারী আমিরুল ইসলাম প্রমুখ।
    সভায় বক্তারা বলেন,১৯৫২ সালের ২৭ ফেব্রæয়ারি ঢাকায় ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে ও ভাষা আন্দোলনের সমর্থনে তদানীন্তন সুনামগঞ্জ মহকুমার দিরাই থানার রাজানগর উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায়,“শেখ মুজিব কারাগারে আন্দোলন কেউ নাহি ছাড়ে সত্যাগ্রহে এক কাতারে সামনে আছেন সামাদ ভাই/ঢাকার বুকে গুলি কেন নুরুল আমিন জবাব চাই” শীর্ষক দেশাত্ববোধক গান পরিবেশনের মাধ্যমে বাউল কামাল পাশা প্রমাণ করে গেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে দেশে সর্বপ্রথম গীতিকার ও সুরকার হচ্ছেন তিনি। এছাড়া ১৯৫৬ থেকে ৭৩ইং সন পর্যন্ত সুনামগঞ্জ ও দিরাই থানা সদরে বঙ্গবন্ধুর সভামঞ্চে একাধিকবার সঙ্গীত পরিবেশন করে কিংবদন্তী হয়ে আছেন সুনামগঞ্জের এই সংগীতগুরু। মুজিববর্ষে মহান এই সংগীত সাধক কে মরণোত্তর স্বীকৃতি প্রদানের জন্য তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
    উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জ জেলার পাঁচ প্রধান লোককবির মধ্যমণি বাউল কামাল পাশা সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামে ১৯০১ সালের ৬ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮৫ সালের ৩রা মে মোতাবেক ২০ বৈশাখ মৃত্যুবরন করেন। শুধু গান রচনাই নয় ঐতিহাসিক নানকার আন্দোলন,৪৭ এর গণভোট আন্দোলন,৫২ এর ভাষা আন্দোলন,৫৪‘র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন ও ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহনের পাশাপাশি এই শিল্পী স্বাধীকার স্বাধীনতা ও স্বায়ত্বশাসনের পক্ষে গণসঙ্গীত পরিবেশন করেন। বাউল কামাল পাশা স্মৃতি সংসদের সংগ্রহে এই প্রয়াত লোককবির প্রায় ১১০০ গান রয়েছে। বাউল শাহ আব্দুল করিম ও দূর্বীণ শাহের অগ্রজ এই লোকশিল্পী কে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পরপর ৪ বার এবং একুশে পদকে ভূষিত করার জন্য জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে ৮ বার প্রস্তাবনা প্রেরন করা হলেও আজও এই শিল্পী পাননি রাষ্ট্রীয় কোন স্বীকৃতি।

    আরও খবর

    Sponsered content