• অনিয়ম / দুর্নীতি

    শাল্লার মোহন মিয়ার জাল সনদে চাকুরীঃ একের পর এক তদন্তের নির্দেশ, নিরপেক্ষতা নিয়ে সংশয়

      প্রতিনিধি ১৬ ডিসেম্বর ২০২১ , ৬:০৩:৫৪ অনলাইন সংস্করণ

    স্টাফ রিপোর্টারঃ সুনামগঞ্জের শাল্লার সাব-রেজিস্টার অফিসের অফিস সহায়ক বহুল আলোচিত মোহন মিয়ার জাল সনদে চাকুরী ও অবৈধ সম্পদ অর্জন নিয়ে একের পর এক তদন্তের নির্দেশ ও বাস্তবায়নে তদন্তকারীদের নিরপেক্ষতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন দরখাস্তকারী সহ ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ।
    মোহন মিয়ার বিরুদ্ধে জেলা রেজিস্টার, জেলা প্রশাসক ও দুদক সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রণালয়েও অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রতিবাদী যুবক সোহেল আহমেদ।
    অপর দিকে লাটিয়াল বাহিনী ও অবৈধ প্রভাব দেখিয়েও অভিযোগকারীকে আটকাতে না পেরে অটেল টাকা ছড়িয়ে তদন্ত প্রভাবিত করাসহ সাংবাদিক ও অফিসার কিনে নেওয়ার কথা প্রকাশ্যে বলে বেড়ানো অভিযুক্ত মোহন মিয়া একের পর এক কৌশল করে মরিয়া হয়ে বাঁচতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আসছে তদন্তের পর তদন্তের নির্দেশ কিন্তু অভিযোগকারীসহ এলাকাবাসীর নিরপেক্ষ তদন্ত নিয়ে রয়েছে সংশয়!
    কারণ প্রথম তদন্তের দায়িত্বে থাকা শাল্লা সাব-রেজিস্টার আব্দুল বাতেন ও জেলা থেকে আগত রেজিস্টার অফিসের কর্মচারী ও অভিযুক্ত মোহন মিয়া মিলে তদন্তের নামে মহা জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

    সেদিন জাল সনদের অন্যতম স্বাক্ষী শাল্লা হাসিমিয়া মাদ্রাসার সাবেক সুপার আব্দুল কুদ্দুস অনুপস্থিত থাকলেও উনার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে উপস্থিত দেখিয়ে তদন্ত শুনানি শুরু করলে অভিযোগকারী সোহেল আহমেদ আপত্তি তুলেন, যিনি শাল্লা আসেননি তিনি কিভাবে স্বাক্ষর করেন?
    এ নিয়ে বাক-বিতণ্ডার পরে জালিয়াতির প্রমাণ লুপাট করতে মোহন মিয়া ও রেজিস্টার অফিসের কম্পিউটার ম্যান সাব-রেজিস্টার বাতেন এর সামনে প্রকাশ্যে রেজিউলোশন খাতা ছিঁড়ে পেলেন। এছাড়াও জেলা রেজিস্টার মফিজুল ইসলাম নিজ স্বাক্ষরিত নির্দেশনা বলেছিলেন ২২ নভেম্বর বিকেল ৪-৪৫ মিনিটের সময় সুনামগঞ্জ সদর সাব-রেজিস্টার অফিসের রেকর্ড রুমে যোগদান না করলে আপনা আপনি কর্মমুক্ত বলিয়া গণ্য হবে অথচ মোহন মিয়া এইদিন শাল্লা সন্ধ্যা সাড়ে ৬ ঘটিকা পর্যন্ত শাল্লার ঘুঙ্গিয়ারগাও সদরে পুরাতন কর্মস্থলেই ছিলো! সে সদর কর্মস্থলে এইদিন যোগদান করেনি এবং চাকুরীও বহাল তবিয়তে আছে!

    সাব-রেজিস্টার ও জেলা রেজিস্টার অফিসের আচরণ মোহন মিয়ার পক্ষে ও নিরপেক্ষ তদন্তের অন্তরায় হওয়ায় অভিযোগকারী জেলা প্রশাসন সহ অন্যান্য দপ্তরেও মোহন মিয়ার জাল সনদে চাকুরী ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করেছেন।
    ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নির্দেশনা এসেছে স্মারক নং-০৫-৪৬-৯০০০-০১৬-৬৮-০০১-১৯-১৩৩৫/১(৯) জেলা রেজিষ্টার, সাব রেজিস্টার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার ভূমি, জেলা শিক্ষা অফিসার, সহকারী কমিশনার গোপনীয় শাখা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও শাল্লা হাসিমিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা সুপার সহ সংশ্লিষ্ট একাধিক দপ্তরেকে অভিযোগ তদন্ত করে বিহিত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্যে।
    সর্বশেষ গত ৬ ডিসেম্বর পুলিশ সুপার সুনামগঞ্জের জেলা বিশেষ শাখা থেকে (স্মারক নং-৪৬৫) শাল্লা থানা অফিসার ইন চার্জ বরাবরে নির্দেশনা এসছে মোহন মিয়ার জাল সনদে চাকুরী ও সামান্য কর্মচারী থেকে ৪ বছরে অবৈধভাবে কোটি টাকার উপরে ভূসম্পত্তি অর্জন ও স্ত্রী সহ নিজ নামে লক্ষ লক্ষ টাকার ব্যাংক ব্যাল্যান্স এবং শাল্লা সাব রেজিস্টার অফিসের সেবা প্রার্থী সাধারণ জনগণের সাথে দুর্ব্যবহার, ঘুষ বানিজ্যের বিষয়ে সঠিক তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য।
    একাধিক আলাকাবাসী জানিয়েছেন শাল্লা থানার ওসির সাথে অভিযুক্ত মোহন মিয়ার ভালো সম্পর্ক রয়েছে তাই শাল্লা সাব-রেজিস্ট্রার বাতেন মিয়ার পক্ষপাত মূলক তদন্তের মতো নিরপেক্ষ তদন্তের বিষয়ে আমরা সংশয়ে রয়েছি।
    প্রসঙ্গতঃ শাল্লা উপজেলার ঘুঙ্গিয়ারগাঁও সদরে অবস্থিত উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মচারী শাল্লা ইউনিয়নের কান্দিগাঁওয়ের বাসিন্দা ভূমিহীন দিনমজুর হানিফ মিয়ার পুত্র অফিস সহায়ক মোহন মিয়ার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জন (মাত্র ৪ বছরের চাকুরী জীবনে কোটি টাকার উপরে জায়গায় জমি ও প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ব্যাংক ব্যালেন্স) সহ অবৈধভাবে জাল সনদ সৃজন করে ৮ম শ্রেণি পাশের সার্টিফিকেট দিয়ে চাকুরী গ্রহণ, বেপরোয়া কথাবার্তা ও রূঢ় আচরণ এবং ঘুষ বানিজ্য সহ কাজ করতে আসা সেবা প্রার্থীদের হয়রানির অভিযোগে এনে বিগত ০৭ নভেম্বর ২০২১ খ্রিঃ তারিখে শাল্লা ইউনিয়নের কান্দিগাঁওয়ের বাসিন্দা মোঃ আব্দুল মালেকের পুত্র মোঃ সোহেল আহমেদ জেলা সাব-রেজিস্ট্রার সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফরে অভিযোগ দায়ের করেন।

    আরও খবর

    Sponsered content