• আন্তর্জাতিক

    মোল্লা বারাদার আফগানিস্তানের নতুন সরকারের নেতৃত্ব দেবেন, তীব্র লড়াই চলছে পাঞ্জশিরে

      প্রতিনিধি ৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ , ৯:০৩:১৩ অনলাইন সংস্করণ

    ইনসেটে- তালেবান নেতা বারাদার ও পাঞ্জশির উপত্যকায় সংঘর্ষ - ছবি : সংগৃহীত

    তালেবানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা গনি বারাদার আফগানিস্তানের নতুন সরকারের নেতৃত্ব দেবেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই নতুন সরকারের ঘোষণা দেয়া হবে।

    নতুন সরকারে বারাদারের সাথে সরকারের সিনিয়র অবস্থানে আরো থাকবেন তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ছেলে মোহাম্মদ ইয়াকুব এবং শের মোহাম্মদদ আব্বাস স্ট্যানেকজাই।

    পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক তালেবানের এক শীর্ষ নেতা রয়টার্সকে বলেন, শীর্ষ সকল নেতা কাবুলে উপস্থিত হয়েছেন। এখানেই জুমার নামাজের পর নতুন সরকার ঘোষণা করার কথা রয়েছে।

    তালেবানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা হায়বাতুল্লাহ আখুন্দজাদা ইসলামের কাঠামোর আওতায় ধর্মীয় ও সরকারি ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকবেন।

    গত ১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করলেও এখন পর্যন্ত সরকার ঘোষণা করেনি তালেবান। তারা বলে আসছে, সরকার হবে অন্তর্ভুক্তমূলক।

    তীব্র লড়াই চলছে পাঞ্জশিরে

    আফগানিস্তানে তালেবানের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা একমাত্র ভূখণ্ড পাঞ্জশির উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নিতে অগ্রসর হয়েছে তালেবান যোদ্ধারা। শুক্রবার সকাল থেকেই পাঞ্জশিরের ওপর কামানের গোলাবর্ষণ তীব্র করেছে তালেবান যোদ্ধারা।আলজাজিরার প্রতিনিধি চার্লস স্ট্রেইটফোর্ড পাঞ্জশিরে প্রবেশের একমাত্র পথ গুলবাহার থেকে জানিয়েছেন, সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকেই স্থানীয় বেসামরিক বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

    তিনি বলেন, ‘যখন আমরা পৌঁছাই, এখানে তখন প্রচণ্ড ধোঁয়া ছিলো। শহরের ওপর প্রচণ্ডভাবে কামানের গোলাবর্ষণ করা হয়েছে। তালেবান এর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।’

    এর আগে গত ১৫ আগস্ট কাবুলে প্রবেশের মাধ্যমে প্রায় পুরো আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিলেও দেশটির ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে একমাত্র পাঞ্জশির তালেবানের নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে। রুশ আগ্রাসন প্রতিরোধ যুদ্ধের কিংবদন্তি যোদ্ধা আহমদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমদ মাসুদের নেতৃত্বে তালেবানবিরোধী বিদ্রোহী যোদ্ধারা এই উপত্যকায় অবস্থান নিয়েছে।

    এর আগে দুই পক্ষের মধ্যে শান্তিপূর্ণ মীমাংসার লক্ষ্যে আলোচনা শুরু হলেও মতানৈক্যের জেরে সংঘর্ষ শুরু হয়।

    ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে নাইন-ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার জেরে আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বে বহুজাতিক বাহিনী আগ্রাসন চালায়।

    দীর্ঘ দুই দশক আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বের বহুজাতিক বাহিনীর দখলের পর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাতারের দোহায় এক দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার করতে সম্মত হয় যুক্তরাষ্ট্র। এর বিপরীতে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অংশ নিতে তালেবান সম্মত হয়।

    চলতি বছরের মে মাসে সম্পূর্ণ সৈন্য প্রত্যাহারের কথা থাকলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এপ্রিলে এক ঘোষণায় ১১ সেপ্টেম্বরে নাইন-ইলেভেনের ২০তম বার্ষিকীতে সৈন্য প্রত্যাহার শেষ করার কথা জানান। পরে জুলাই সময়সীমা আরো কমিয়ে এনে ৩১ আগস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন তিনি।
    প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ঘোষণা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সোমবার রাতে আফগানিস্তান ছাড়ে মার্কিন বাহিনী।

    মার্কিনিদের সাথে চুক্তি অনুসারে ক্ষমতাসীন থাকা মার্কিন সমর্থনপুষ্ট আফগান সরকারের সমঝোতার জন্য তালেবান চেষ্টা করলেও দুই পক্ষের মধ্যে কোনো সমঝোতা হয়নি। তালেবানের অভিযোগ, আশরাফ গনির নেতৃত্বাধীন আফগান সরকার দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় তাদের আহ্বানে সাড়া দেয়নি।

    এর পরিপ্রেক্ষিতে মে মাসে বহুজাতিক বাহিনীর প্রত্যাহারের মধ্যেই পুরো দেশের নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালানো শুরু করে তালেবান।

    ৬ আগস্ট প্রথম প্রাদেশিক রাজধানী হিসেবে দক্ষিণাঞ্চলীয় নিমরোজ প্রদেশের রাজধানী যারানজ দখল করে তারা। যারানজ নিয়ন্ত্রণে নেয়ার ১০ দিনের মাথায় কেন্দ্রীয় রাজধানী কাবুলে পৌঁছে যায় তালেবান যোদ্ধারা। ক্ষমতাচ্যুৎ হওয়ার প্রায় ২০ বছর পর ১৫ আগস্ট কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান।

    সূত্র : আলজাজিরা

    আরও খবর

    Sponsered content