• লিড

    ভ্রাতৃত্বের বন্ধনঃ জগন্নাথপুরে বড় ভাইকে কিডনি দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করল ছোট ভাই

      প্রতিনিধি ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ , ৮:১১:৪৩ অনলাইন সংস্করণ

    হুমায়ূন কবীর ফরীদি, জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ কিডনি রোগাক্রান্ত বড় ভাই হাফিজ রুহুল আমীন (৩৯) কে একটি কিডনি দিয়ে ছোট ভাই অন্যন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। কিডনি দেয়ার সংবাদে এলাকায় জানানি হওয়ার পর এই ত্যাগ স্বীকারকে ইতিহাস উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক স্ট্যাটাসে অনেকেই লিখেছেন একেই ভ্রাত্ত্বিত্বের বন্ধন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও পরিবার সুত্রে জানাযায়, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার বালিশ্রী গ্রাম নিবাসী প্রয়াত মোঃ জহির আলীর তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলে সিহাব আহমেদ স্থায়ীভাবে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত। দ্বিতীয় ছেলে হাফিজ মোঃ রুহুল আমীন (৩৯) শিক্ষা জীবন শেষ করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি পরিবার এর কাজে নিয়োজিত ছিলেন। বিগত ২০২০ সালে হঠাৎ করে হাফিজ মোঃ রুহুল আমীন বুকে ব্যথা অনুভব করেন। তাৎক্ষণিকভাবে ডাক্তার এর শরণাপন্ন হয়ে বিভিন্ন টেষ্ট এর মাধ্যমে জানতে পারেন তিনি কিডনি রোগে আক্রান্ত। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে তিনি ধারাবাহিক ভাবে সিলেট ও ঢাকায় চিকিৎসা করিয়েও কোনো ফলাফল না পেয়ে গত ৬ মাস ধরে ঢাকাস্থ কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা করানোর পাশাপাশি কিডনির জন্য বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করেও কিডনি না পেয়ে অবশেষে হাফিজ মোঃ রুহুল আমীন এর আপন ছোট ভাই সোয়েব আহমদ(২৩) কিডনি দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে। অবশেষে পরিবার এর মতামতের ভিত্তিতে সোয়েব আহমদ এর একটি কিডনি এনে গত ১৫ ই সেপ্টেম্বর রোজ বুধবার বিকাল ৩ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত একটানা অপারেশন এর মাধ্যমে রুহুল আমীন এর শরীরে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। সফল অপারেশন এর মাধ্যমে বড় ভাই হাফিজ মোঃ রুহুল আমীন ও ছোট ভাই সোয়েব আহমদ সুস্থ আছেন। কিডনি দেয়ার সংবাদ এলাকায় জানাজানি হওয়ার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই ভাই এর প্রতি ভাই এর ভালবাসা নিয়ে ফেসবুকে নানা শ্রেনী পেশার লোকজন স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। কিডনি প্রতিস্থাপন এর সত্যতা নিশ্চিত করে হাফিজ মোঃ রুহুল আমীন এর ভগ্নিপতি কাজী আহমদ বলেন, ১৫ ই সেপ্টেম্বর বিকাল থেকে একটানা প্রায় ৪ ঘন্টা অপারেশন করে কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন চিকিৎসক। উভয় ভাই সুস্থ আছেন। এবিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনেকেই লিখেছেন, “ভাই বড় ধন রক্তের বাঁধন ” এই প্রবাদটি বাস্তবে প্রমান করে দিলে মায়ার ভাই সোয়েব। একেই বলে ভ্রাতৃত্ত্বর বন্ধন। শুধু জানতাম বড় ভাইরা বট বৃক্ষ হয়ে ছোট ভাইদের ছায়া দিয়ে যায়। কিন্তু আজ তুমি তুমার জীবন ভাজি রেখে বটবৃক্ষের ছায়ার মতো প্রিয় ভাই শুয়েব তুমার একটি কিডনি দিয়ে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখে নিলে।তা আজীবন বিরল হয়ে থাকবে। আমরা দোয়া করি তুমার মতো ভাই প্রতিটি পরিবারে জন্ম হউক। তুমার প্রতি অনেক অনেক দোয়া ও শুভকামনা মাযার ভাই শুয়েব। ভাই শুয়েবের একটি কিডনি দানে আজ শুয়েবের বড় ভাইয়ের অপারেশন হয়েছে। তারা দুই ভাই আলহামদুলিল্লাহ সুস্থ আছেন। তাদের জন্য সবাই দোয়া করবেন। আল্লাহ যেনো তাদেরকে তারাতারি সুস্থ করেন। আমীন।

    আরও খবর

    Sponsered content