প্রতিনিধি ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ , ১২:১৮:৫৩ অনলাইন সংস্করণ
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জ ২৮ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের তাহিরপুর উপজেলার লাউড়েরগড় সীমান্তে বিজিবির গোয়েন্দা সদস্যের প্রহারে
৩ নারী সদস্য আহত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আহত ৩ নারী হলেন, উপজেলার বাদাঘাট উত্তর ইউনিয়নের সাহিদাবাদ উত্তরপাড়া গ্রামের নুরুল হকের স্ত্রী রহিমা খাতুন (৩৫) একই গ্রামের ফুল মিয়ার স্ত্রী জাহেরা খাতুন (৩২) ও নুরুল হকের স্ত্রী চাঁনবানু (৩০)। গুরতর আহত রহিমা খাতুন (৩৫)কে বুধবার দুপুরে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অপর আহত দুই নারীকে স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটার দিকে সুনামগঞ্জ ২৮ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের বাদাঘাট উত্তর ইউনিয়নের লাউড়েরগড় সীমান্ত ফাঁড়িতে কর্মরত বিজিবির নিজস্ব গোয়েন্দা সদস্য (আর. ই. বি) নায়েক আমির হোসেনের নেতৃত্বে স্থানীয় বখাটে দশঘর গ্রামের হাফিজ উদ্দিনের ছেলে ইয়াসিন মিয়া, পুরানলাউড় গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ আলী, সাহিদাবাদ গ্রামের হারিছ উদ্দিনের ছেলে সুরুজ মিয়া সহ ৫/৬ জনকে নিয়ে সাহিদাবাদ উত্তরপাড়ায় চোরাই পথে আনা ভারতীয় কয়লা উদ্ধার করার জন্য প্রথমে গ্রামের ফুল মিয়ার বাড়িতে ঢুকে বাড়িতে অবৈধ কয়লা আছে বলে ঘর তল্লাশীর জন্য ঘরের দরজা খোলার কথা বলেন।
এসময় ফুল মিয়ার স্ত্রী জাহেরা খাতুন বলেন, বাড়িতে কোন পুরুষ লোক নেই এখন দরজা খোলা যাবেনা। একথা বলার পর দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে ফুল মিয়ার স্ত্রীকে মারপিট করেন তিনি। ফুল মিয়া জানিয়েছেন, তার বাড়িতে কোন কিছু না পেয়ে তার ঘরে থাকা নগদ ৪০ হাজার টাকা ও ১০ ভরি ওজনের রুপার গহনাসহ বিভিন্ন কাগজপত্র নিয়ে আসেন ঐ গোয়েন্দা সদস্য।
এরপর তিনি যান একই গ্রামের নুরুল হকের বাড়িতে সেখানে গিয়ে দরজা খোলার জন্য ডাক দেন এসময় নুরুল হকের স্ত্রী রহিমা খাতুন জানায় তাদের ঘরে নতুন শিশুর জন্ম হয়েছে দরজা খোলা যাবেনা। একথা বলার পর দরজা ভেঙে ঘরের ভিতর প্রবেশ করে রহিমাকেও মারধোর করেছেন ঐ গোয়েন্দা সদস্য বলে জানিয়েছেন রহিমা।
এরপর গোয়েন্দা সদস্য যান পাশর্^বর্তী নুরুল হকের বাড়ি সেখানে গিয়ে কোনকিছু নাপেয়ে নুরুল হকের স্ত্রী চাঁনবানুকে মারধোর করেন বলে জানিয়েছেন, চাঁনবানু। চাঁনবানুর বাড়ি থেকে আসার সময় নদী থেকে কুঁড়ানো দুই টুকরী কয়লাও নিয়ে আসেন তিনি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য মস্তুফা মিয়া জানিয়েছেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। ঘটনাটি অত্যান্ত দুঃখজনক এভাবে রাতের বেলায় কারো বাড়িতে প্রবেশ করে মারধোর করে টাকা পয়সা নিয়ে যাওয়া এটা ঠিক হয়নী। কারো বাড়িতে কোন অবৈধ মাল থাকলে স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে বাড়ি তল্লাশী করা উচিৎ ছিল।
এ ব্যাপারে বিজিবির গোয়েন্দা সদস্য (আর. আই. বি) নায়েক আমির হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা অভিযান পরিচালনা করে চোরাই পথে আনা ভারতীয় কয়লা উদ্ধার করেছি।
এ ব্যাপারে লাউড়েরগড় সীমান্ত ফাঁড়ির ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার মো. আমিনুল হক জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতে সাহিদাবাদ গ্রামের কয়েকটি বাড়ির পাশে বস্তাভর্তি লুকিয়ে রাখা পরিত্যাক্ত অবস্থায় ৭০ বস্তা মোট সাড়ে তিন হাজার কেজি ভারতীয় কয়লা উদ্ধার করেছি। অন্য কোন ঘটনা আমার জানা নেই।