প্রতিনিধি ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১ , ১:৪১:১০ অনলাইন সংস্করণ
হুমায়ূন কবীর ফরীদি, জগন্নাথপুর ( সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ জগন্নাথপুর এর সর্বত্র ১০/১২ বছর বয়সী শিশু শ্রমিক এর সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। অবাধে বিক্রি হচ্ছে শিশুশ্রম। যে বয়সে শিশুদের হাতে বইপত্র আর খেলার সামগ্রী থাকার কথা ঠিক এই বয়সে শিশুরা পরিবারের লোকজন এর মূখে একটু হাসি ফোটানোর লক্ষে টাকা রোজগার করতে লেগুনা -অটো টেম্পোতে টাকা লওয়ার কাজ করছে এবং ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা চালানো সহ বিভিন্ন রকমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক এর কাজ করছে। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক শিশুশ্রম নিষিদ্ধ থাকা সত্বেও এব্যাপরে স্থানীয় প্রশাসনের কোন প্রকার মাথা ব্যাথা নেই বললেই চলে। আজ ১০ ই সেপ্টেম্বর রোজ শুক্রবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় যানবাহন চলাচল এর উপযোগী প্রায় সবকটি সড়ক সহ জগন্নাথপুর পৌর শহর এলাকায় প্রায় চার/পাঁচ শতাধিক ১০/১২ বছর বয়সী শিশুরা শ্রমিক এর কাজ করছে। ওরা একেক জনে একেক রকম এর কাজ যেমন ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা চালাচ্ছে। লেগুনা অটো টেম্পো জাতীয় যানবাহনে বাদুড়ের মতো ঝুলে ঝুলে যাত্রী সাধারণ এর কাছ থেকে ভাড়া আদায় করছে। এমনকি চায়ের স্টল সহ বিভিন্ন রকমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক শিশুশ্রম নিষিদ্ধ থাকা সত্বেও স্থানীয় প্রশাসনের এর চোখ এর সামন দিয়ে শিশু শ্রমিকরা অবাধে অটোরিক্সা চালাচ্ছে। অটো টেম্পো গাড়ীতে ভাড়া আদায় করছে। অল্প বেতনে শিশু শ্রমিক খাটানো যায় বলেই অধিক মুনাফা লোভী অটোরিকশার মালিক ও লেগুনা অটো -টেম্পো চালকরা এমনকি চায়ের স্টল সহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এর মালিকেরা ওদের দিয়ে কাজ করাচ্ছে। যে বয়সে শিশুদের হাতে বইপত্র আর খেলার সামগ্রী থাকার কথা ঠিক এই বয়সে তারা অভাব অনটন এর সংসারে মাতা-পিতাকে কিছুটা হলেও সহযোগিতা করতে নানাবিধ কর্ম করছে। এ ব্যাপারে একান্ত আলাপকালে শিশু শ্রমিক ইমন বলে, আমরা গরীব ঘরে জন্ম নিয়েছি। ৭ জনের পরিবারে বাবাই একমাত্র কর্মজীবী ব্যক্তি। তিনি যা রোজী করেন তা দিয়ে সংসার চলে না। যার ফলে মা-বাবার অভাব অনটন এর সংসারে একটু হলেও সহযোগিতা করতে রোদ-বৃষ্টি আর ঝড়ে কাজ করতে হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে সে আরও বলে,অন্য শিশুদের মতো স্কুলে যেতে আমরাও মন চায়।স্কুলগামী সমবয়সীরা যখন ভাল কাপড় পড়ে বইখাতা নিয়ে আমার মনে খুব কষ্ট হয়। এই বলে মনকে শান্তনা দেই আমরা গরীব ঘরের সন্তান। ৬ বছর বয়সী বোনটি স্কুলে পড়ছে। আল্লাহ সহায় থাকলে বোনটিকে লেখা-পড়া করানোর ইচ্ছে আছে। এ ব্যাপার বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও শিক্ষানুরাগী মোঃ আব্দুস সালাম সহ একাধিক সচেতন নাগরিক বলেন, বেশি মুনাফা লাভের আশায় কিছু সংখ্যক লোক অল্প পারিশ্রমিকে শিশু শ্রমিক দিয়ে কাজ করাচ্ছে। আর হতদরিদ্র মাতাপিতা সংসারের অভাব অনটন তাড়াতে শিশুদের কাজে লাগিয়েছেন। জীবন জীবিকার তাগিদে শিশুরা যান্ত্রিক যানবাহনে ও হোটল রেস্তোরাঁ এবং ছোট ছোট চায়ের স্টলে শ্রমিক হিসাবে কাজ করছে। এই সকল শিশুশ্রম বন্ধ করার পাশাপাশি শিশু শ্রমিকদের স্কুলমূখী করার লক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন সচেতন নাগরিক সমাজ।