প্রতিনিধি ২৪ আগস্ট ২০২১ , ৭:৪৫:৩৬ অনলাইন সংস্করণ
বিশেষ প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদটি দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে।এমতাবস্থায় বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকদের মধ্যে জৈষ্ঠ্যতা ডিঙ্গিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক সিলেট কর্তৃক জুনিয় র শিক্ষক জামাল উদ্দিনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়ায় শিক্ষকদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। অভিযোগ ওঠেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক জুনিয়র শিক্ষক জামাল উদ্দিনের নিকট থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে লকডাউন চলাকালে তিনি এ কাজটি করেছেন। বিদ্যালয়ে ৯ জন শিক্ষকের মধ্যে বর্তমানে ৫ জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন।বিদ্যালয়ে ১জন অফিস সহকারী,২জন এএলএসএস ও ১জন দপ্তরী পদ দীর্ঘদিন ধরে খালি রয়েছে। কর্মরত ৫জন সহকারী শিক্ষকের মধ্যে ২০২১ সালের ১৫ জুলাই প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী সিনিয়র শিক্ষক জাহিদুল কামাল এর ক্রমিক নম্বর হচ্ছে ৫৩০৬ অপরদিকে সিনিয়র শিক্ষক জামাল উদ্দিনের ক্রমিক নম্বর হচ্ছে ৫৩৭৩। চাকুরীর যোগদানের ক্ষেত্রেও সিনিয়র শিক্ষক জাহিদুল কামাল এর যোগদানের তারিখ ১.৩.২০০৯ ইংরেজী। অপরদিকে সিনিয়র শিক্ষক জামাল উদ্দিনের যোগদানের তারিখ হচ্ছে ১৫.২.২০১০ইংরেজী। সিনিয়র শিক্ষক জামাল উদ্দিন জেলার জগন্নাথপুর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তাহিরপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে লকডাউন চলাকালীন সময়ে বিগত ২৯.৪.২০২১ ইং তারিখে যোগদান করেন। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এনায়েত হোসেন রনি বলেন, সিনিয়র শিক্ষক জামাল উদ্দিন তাহিরপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে ২৯.৪.২০২১ইং তারিখে যোগদানের পর ঐ দিনই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর কবীর মহোদয় আমাকে ফোন করে মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন সিনিয়র শিক্ষক জামাল উদ্দিনকে দায়িত্ব হস্থান্তর করার জন্য। সে মোতাবেক আমি জামাল উদ্দিনকে দায়িত্ব হস্থান্তর করেছি। আর্থিক ক্ষমতার বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক সিলেট মহোদয় মহাপরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকা বরাবর পত্র প্রেরণ করলে বিগত ৩১.৪.২০২১ ইং তারিখে ই-মেইল যোগে আর্থিক ক্ষমতার দায়িত্ব পান জামাল উদ্দিন। ভাটির জনপদ সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চল তাহিরপুরে ১৯৫০ সালে উপজেলা সদরে এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্টিত হয়। প্রতিষ্টার পর ১৯৫৪ সালে নিম্ন মাধ্যমিক এবং ১৯৬০ সালে মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসাবে স্বীকৃতি পায়। ১৯৮৭ সালের ২৭ আগষ্ট তাহিরপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় হিসাবে স্বীকৃতি পায়। জানা যায়,সরকারীকরনের পূর্বে বিদ্যালয়টিতে ১৩ জন শিক্ষক ও ৫০০জন ছাত্র-ছাত্রী থাকলেও সরকারীকরনের পর থেকেই বিদ্যালয়টিতে চলছে শিক্ষক সংকট।বিদ্যালয়টি সরকারী করনের ৩৪ বছর পরও কোন দিনই পূরন হয়নি প্রধান শিক্ষকের পদ।প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ বর্তমানেও শূন্য। ধর্মীয় শিক্ষক নুরুল ইসলাম সিলেট আলিয়া মাদ্রাসায় দীর্ঘদিন ধরে প্রেষনে কর্মরত রয়েছেন। সিনিয়র শিক্ষক জামাল উদ্দিন বলেন, সিনিয়র শিক্ষক জাহিদুল কামাল সরকারী গেজেট ও যোগদানে আমার থেকে সিনিয়র। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক সিলেট মহোদয় আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন তাই আমি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। তাহাকে গেজেট অনুযায়ী দায়িত্ব হস্থান্তরের কথা বললে তিনি আমাকে অন্যত্র বদলী হয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তাব দেন । সিনিয়র শিক্ষক জাহিদুল কামাল বলেন, বর্তমানে তাহিরপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫ জন শিক্ষকের মধ্যে সরকারী গেজেট অনুযায়ী তিনি সবার সিনিয়র। একজন জুনিয়রকে ভারপা্রপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব প্রদান করায় তিনি বিব্রতবোধ করছেন। এ ব্যাপারে মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সিলেট এর উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর কবীর বলেন,জাহিদুল কামাল ভারপ্রাপ্ত প্রধন শিক্ষকের দায়িত্ব নিতে ইচ্ছা পোষন না করায় জামাল উদ্দিনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।