• করোনা ভাইরাস নিউজ

    শাল্লায় সরকারি ত্রাণ বিতরণে মানা হচ্ছেনা স্বাস্থ্যবিধি– করোনা সংক্রমণের আশংকা !

      প্রতিনিধি ৮ জুলাই ২০২১ , ৩:৫২:৪৪ অনলাইন সংস্করণ

    অলি আহমদ, শাল্লা প্রতিনিধিঃ বৈশ্বিক করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় দেশ যখন স্থবির, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার বদ্ধ পরিকর, সারা দেশ লক-ডাউন এমন অবস্থায় সুনামগঞ্জের

    শাল্লা উপজেলার ১নং আটগাঁও ইউনিয়নে সরকারি ত্রাণ বিতরণে স্বাস্থ্যবিধি অবজ্ঞার অভিযোগ উঠেছে। তবে ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম আজাদ এ অভিযোগপ্রত্যাখান করছেন।
    গত বুধবার ৭জুলাই দুপুর ১২টায় উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়নের দাউদপুর সরকারি
    প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের মধ্যে করোনা পরিস্থিতির ভয়াল ও কঠোর লক ডাউন চলাকালীন সময়ে স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে ও সামাজিক নিরাপদ দূরত্ব অবমাননা করে সরকারি ত্রাণ হিসেবে ৫শ” টাকা করে বিতরণ করা হয়।
    উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ ত্রাণের টাকা বিতরণে কোনোরূপ জনসমাগম করা যাবে না।  প্রতিটি ইউনিয়নের ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এ ত্রাণের টাকা পৌঁছে দিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কিন্তু
    উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বার সুবিধাভোগীদের একত্রিত করে জনসমাগম সৃষ্টি করেন। এ নিয়ে সচেতন মহলে বইছে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়।
    ঘটনাস্থলের ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, ত্রাণ সুবিধাভোগীদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধির নেই কোনো বালাই। কারোর মূখে নেই মাস্ক। মানা হয়নি সামাজিক নিরাপদ দূরত্ব। একে অন্যের সাথে গিজিগিজি অবস্থা। এ অবস্থায় এলাকার সচেতন
    অনেকেই বলছেন, বর্তমান করোনার ভয়াল পরিস্থিতিতে এরূপ জনসমাগমে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় করোনার সংক্রমণ আরো বাড়তে পারে।
    এ ব্যাপারে আটগাঁও ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মামুন আল কাওছারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, যেখানে সরকার করোনা মোকাবেলা ও নিয়ন্ত্রণে সারা দেশে কঠোর লক ডাউন করেছেন, পাশাপাশি সরকারি সকল বিভাগকে করোনা বিস্তার রোধে জনসচেতনতা বাড়াতে ও বিভিন্ন রকমের জনসমাগম এড়াতে নির্দেশনা দিয়েছেন, সেখানে ওইদিন আমাদের ইউপি চেয়ারম্যান অর্থাৎ একটি ইউনিয়নের কর্ণধার হয়ে যেভাবে প্রায় ৪/৫শ’ লোককে স্বাস্থ্যবিধির কোনোরূপ তোয়াক্কা না করে সমবেত করে ত্রাণ বিতরণ করেছেন, সেটা আমাদের কাম্য নয়। এতে এলাকায় করোনা পরিস্থিতি মারাত্মকভাবে সংক্রমিত হতে পারে। আমি বলবো ইউপি চেয়ারম্যান এব্যাপারে সচেতন হবেন।
    ত্রাণ বিতরণের দায়িত্বে থাকা একজন তদারকি কর্মকর্তা ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান আমাকে ত্রাণ বিতরণে থাকতে বলেছেন। আমি গিয়েছি। যেহেতু ঘর
    নির্মাণে সংশ্লিষ্ট এলাকায় আমি তদারকি কর্মকর্তা ছিলাম। আমি নিজে অবশ্যি যথাযথভাবেই স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করেছি। তবে সুবিধাভোগীদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক নিরাপদ দূরত্ব বজায় না থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যানই বলতে পারবেন।
    অপর এক ট্যাগ অফিসার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের উপজেলা একাডেমিক
    সুপারভাইজার কালীপদ দাসের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা সকলেই নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি।
    এবিষয়ে আটগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম আজাদের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি এপ্রতিবেদককে বলেন, সরকারি অনুদান বা রিলিফ বিতরণে গণজমায়েত কোনো বিষয় না। তা করা যায়। আগত সুবিধাভোগীদের মধ্যে কোনোরূপ সামাজিক নিরাপদ দূরত্ব বজায় না থাকা ও স্বাস্থ্য বিধি কেনো মানা হচ্ছে না জানতে চাইলে
    তিনি হাতে সময় নেই বলে ফোনটি কেটে দেন।
    বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শেখ মোঃ ফজলুল করিম সর্দারের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, উপজেলা প্রশাসন থেকে ত্রাণ বিতরণে সকল ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বরগণকে সুবিধাভোগীদের বাড়ি বাড়ি ত্রাণ
    পৌঁছে দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আজ আমি, ইউএনও স্যার ও বাহাড়া ইউপি’র মেম্বার নরেশ অধিকারী বাহাড়া ইউপি’র ভেড়াডহর গ্রামের সুবিধাভোগীদের বাড়ি বাড়ি ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছি। আমরা সার্বিক ভাবে সকল
    গণজমায়েত এড়িয়ে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সরকারি দায়িত্ব পালন করছি। তিনি আরো বলেন, যদি আটগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান ত্রাণ বিতরণে স্বাস্থ্যবিধি অবমাননা করে থাকেন তাহলে আমি বলবো তিনি অন্যায় করেছেন।
    এব্যাপারে কথা বলতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আল মুক্তাদির হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি চেয়ারম্যান সাহেবকে আবারো নির্দেশ দিয়ে দিচ্ছি, তিনি যেনো ভবিষ্যতে এরূপ কাজ না করেন। তিনি আরো বলেন, করোনা বিস্তার রোধে আমাদের সকলকেই সচেতন থাকতে হবে, আবশ্যিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি
    মানা সহ সকল কাজে সামাজিক নিরাপদ দূরত্ব আমাদের বজায় রাখতে হবে।

    আরও খবর

    Sponsered content