প্রতিনিধি ৬ জুলাই ২০২১ , ৬:৫৪:২১ অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ অনুসন্ধানমূলক জাতীয় সাপ্তাহিক পত্রিকা অগ্রযাত্রা’র অপরাধ অনুসন্ধান বিভাগ অগ্রযাত্রা-এন্টি ক্রাইম ইউনিটের তৎপরতায় তক্ষক পাচারকারী চক্রের ৪ জনকে আটক করেছে র্যাব-১১। তক্ষক পাচারকারী ঐ চক্রটি তক্ষক বিক্রির নাম করে ক্রেতাদের তক্ষক দেখিয়ে অস্ত্রের মুখে নগদ টাকা ছিনিয়ে নিতো। প্রায় ২ সপ্তাহ যাবত অগ্রযাত্রার এন্টি ক্রাইম ইউনিটের সাংবাদিকরা ভৈরবে ঐ চক্রটির সন্ধান পায়। এবং ছদ্মবেশে তাদের সাথে তক্ষক কেনার ব্যাপারে কথাবার্তা চালাতে থাকে৷ এক পর্যায়ে একটি তক্ষক বিক্রির ব্যাপারে চক্রটি অগ্রযাত্রার ছদ্মবেশী সাংবাদিকদের নরসিংদীর আরশিনগরের একটি ঠিকানায় আসতে বলে। আগে থেকেই অগ্রযাত্রা’র অনুসন্ধানে প্রাপ্ত সকল তথ্য র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব-১১ কে জানানো হয় অগ্রযাত্রা’র এন্টি ক্রাইম ইউনিট এর পক্ষ থেকে। এরই প্রেক্ষিতে ৬ জুন দুপুরে অগ্রযাত্রা’র দেয়া তথ্যানুযায়ী আরশিনগরের একটি বাড়ি থেকে একটি তক্ষকসহ চক্রটির মোট ৪ জনকে আটক করতে সক্ষম হয় র্যাব-১১ নরসিংদী ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল। আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
মূলত তক্ষক একটি নিরীহ প্রাণী। কিন্ত এটি দিয়ে মহামূল্যবান ঔষধ তৈরি হয় এমন গুজব ছড়িয়ে এই প্রাণীকে ঘিরে সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে প্রতারকদের জাল। আদৌতে এই তক্ষক দিয়ে কোন ঔষধ তৈরি হয় কিনা তা এখনো নিশ্চিত নয় বিশেষজ্ঞরা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এটি সরিসৃপ জাতীয় প্রাণি। এরা নিশাচর। গাছের গর্তে বাস করে। বিভিন্ন পোকামাকড়, পাখির ডিম খেয়ে এরা বেঁচে থাকে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আলীম বলেন, ‘সাউথ ইস্ট এশিয়ায় অনেকেই পোষা প্রাণির মতো তক্ষক লালন করে বলে শোনা যায়। তারা মনে করেন, এই প্রাণি বাড়িতে থাকলে তাদের সৌভাগ্য বয়ে আনে। নিঃসন্তানদের সন্তানাদি হয়।’
তিনি আরো জানান, এর বৈজ্ঞানিক নাম ‘Gekko gecko’। ইংরেজিতে একে ‘Tokay gecko’ বলা হয়। বাংলাদেশ থেকে শুরু করে অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত কিছু কিছু দ্বীপাঞ্চলে এই প্রাণি রয়েছে।
উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়, ভারত ও বাংলাদেশসহ মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, লাওস, কাম্পুচিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চীন ও ফিলিপাইনসহ বিভিন্ন দেশে প্রায় ৬০০ প্রজাতির তক্ষকের বাস।
বণ্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণের খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বলেন, তক্ষকের বিষয়টি আমরা এখনো পরিষ্কার হতে পারিনি। বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে জানা গেছে, পূর্ব এশীয় দেশগুলোতে এই প্রাণি চড়ামূল্যে বিক্রি হয়। তক্ষকের ওষুধি গুণ রয়েছে বলে শোনা যায়। কোনো কোনো দেশে এ দিয়ে ওষুধ তৈরি করে থাকতে পারে।