প্রতিনিধি ২ জুন ২০২১ , ১২:১৪:১২ অনলাইন সংস্করণ
ঢাকা থেকে আজিজুল ইসলাম নিজস্ব প্রতিবেদকঃ উত্তরায় সর্টগান জুয়েলের খুটির জোর কোথায় তা জানতে চায় সুশীল সমাজ। তার অন্যায়ের বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস রাখেনা। কথায় কথায় সর্টগান অথবা পিস্তল বের করেন এই জুয়েল। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের আদর্শের সৈনিক পরিচয় থাকলেও এখন তিনি বঙ্গবন্ধুর সৈনিক পরিচয়ে অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
রাজউকের প্লট দখলে নিয়ে ফার্নিচার মার্কেট গড়ে মাসে লাখ লাখ টাকা আদায়। লোক মারফতে ফুটের চাদাঁ আদায়, তুরাগ নদীর পাড়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা দখল করে গরুর খামার নির্মাণ করাসহ নানা অপকর্মে এখন উত্তরায় আলোচিত-সমালোচিত নাম ইফতেখার জুয়েল।
জানাগেছে উত্তরায় তিনি নানা নামে পরিচিত কেউ বলেন,পালসার জুয়েল,কেউ বলেন, ঠেলাগাড়ী জুয়েল, কেউ বলে সর্টগান জুয়েল,কেউ বলে পিস্তল জুয়েল।
এক সময়ে ছিলেন বিএনপি ঘরানার রাজনীতিতে, সর্বক্ষন লেগে থাকতেন ছাত্রদল নেতা আজিজুল বারী হেলালের সঙ্গে। সে সময়ে উত্তরার মানুষ তাকে চিনতো বিএনপির বিশস্ত সৈনিক হিসেবে। ২০১৩ সালের নির্বাচনেও কাজ করেছেন বিএনপির পক্ষে। খোলস পাল্টিয়ে এখন তিনি নিজেকে বঙ্গবন্ধুর সৈনিক দাবী করে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হোসেন খান নিখিলের আস্থাভাজন হয়ে উঠছেন। পিস্তল ছাড়া নাকি জুয়েল রাজনীতি করতে পারেনা প্যান্টের পকেটে একটি পিস্তল হলেও তিনি রাখেন। এমনই কথা উত্তরার মানুষের মুখে মুখে।
উত্তরায় প্রচার আছে, উত্তরায় যুব লীগের পদ পেতে তিনি ইতিমধ্যে কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন যুব লীগের এক কেন্দ্রীয় নেতার পেছনে। ওই নেতার মেয়ের বিয়েতে দামী গাড়ী উপহার দিয়েছেন। যুব লীগের পদের জন্য অগ্রিম বিনিয়োগ করেই উত্তরায় দাপুটে হয়ে উঠেছেন তিনি। পদ পেতে হয়েছেন বেসামাল, এতে হতাশ যুবলীগের প্রকৃত নেতাকর্মীরা। যুবলীগের অনেক ত্যাগী নেতাই বলছেন নতুনদের অর্থের দাপটের কাছে আমরা কোনঠাসা। দলীয় বড় নেতারাও দেখছি এই সব টাকাওয়ালাদেরই বেশী প্রাধান্য দেন। নেতাদের কাছে আদর্শ এখন শুধু মুখের খইয়া ঝড়া বুলি মাত্র।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে রাজউকের প্লট দখল করে অবৈধভাবে দোকান বসিয়ে মাসে লাখ লাখ টাকা ভাড়া আদায় করছেন ইফতেখার জুয়েল। অবৈধ ফার্নিচার মার্কেটে তার দোকান নম্বর ৫৪ ও ২৯ এর অংশিক। এলাকার কিশোর গ্যাং আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। কিছু দিন আগে উত্তরা পশ্চিম থানায় কিশোর গ্যাং বিষয়ে তাকে পুলিশ আটকালেও এলাকার প্রভাশালী এক রাজনৈতিক নেতার হস্তক্ষেপে তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ। গরীবে নেওয়াজ এভিনিউর ফুটপাতের দোকান থেকে কথিত যুবলীগ নেতা ইফতেখারুল ইসলাম জুয়েলের নামে চাদাঁ আদায় করেন হুমায়ূন নামের এক যুবক। তুরাগ তীরে দখল করা জমিতে গরুর খামার করেছেন আবার রাত হলেই খামারের পাশে খোলা চত্বরে উদাম আড্ডা বসান তিনি। চলেন ফিরেন দামী গাড়ীতে সাথে অস্ত্র নিয়ে। তার ভয়ে তটস্থ থাকে এলাকার মানুষ জন। রাস্তা দিয়ে চলেন গাড়ী বহর নিয়ে সাধারণ মানুষ প্রথমে এমপি মন্ত্রীর গাড়ী বহর মনে করলেও তারা দেখেন জুয়েল বাহিনী। তার অস্ত্রের ঝনঝনিতে আকাশের পাখিও গাছে বসে পায়খানা করতে ভয় পায়।
যদিও ইফতেখার জুয়েল তার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগই অস্বীকার করে বলেছেন, এগুলো মিথ্যে, আমি চাদাবাজী করি না। আমি মাঈনুল ইসলাম নিখিল ভাইয়ের সৈনিক। মাসে ৭০ লাখ টাকা ভাড়া পাই। তিনি আরো বলেন আমার দুইটা অস্ত্র আছে একটা পিস্তল একটা সর্টগান। রাজউকের জায়গা আমি না কাউন্সিলর দখল করে পজিশন বিক্রি করেছে। তাকে জিজ্ঞেস করেন।
খোজ খবর নিয়ে জানা যায় ইফতেখার জুয়েলের বাবা ছিলেন একজন সামান্য দলিল লেখক মাত্র উত্তরার মতো এলাকায় কিভাবে এতো ধন-সম্পদের মালিক এটা নিয়েও প্রশ্ন সুশীল সমাজের।
জুয়েলের কাছের এক ব্যক্তি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, জুয়েলের সব বন্ধুদের জন্ম তারিখ ৮৭/৮৮ সালে হলেও জুয়েল অস্ত্রের লাইসেন্স পেতে জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্ম তারিখ পাল্টিয়ে ৮৩ সাল করেন। কোথাও কোনো বন্ধুদের সাথে সামান্য কথা-কাটাকাটি হলেই জুয়েল সর্টগান পিস্তল নিয়ে হাজির এই কারনেই বিভিন্ন নামে মানুষ তাকে চিনে।
মোটা অংকের টাকা দিয়ে যুবলীগের পদ কিনবেন ইফেখার জুয়েল এলাকায় এমন প্রচারণার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল ইসলাম খান বলেন এ ধরণের সুনির্দৃষ্ট কোনো অভিযোগ পেলে অভিযুক্ত ব্যক্তি কখনোই আমাদের কমিটিতে স্থান পাবেনা। তিনি বলেন আমরা সকলের সিভি নিচ্ছি যাচাই-বাছাই করছি। তিনি আরো বলেন কোনো বিতর্কিত ব্যক্তি আওয়ামী যুবলীগে স্থান পাবেনা।