প্রতিনিধি ১১ জুন ২০২১ , ৮:৪৮:৩৪ অনলাইন সংস্করণ
মাহমুদ আহসান হাবিবঃ প্রকল্পের আওতায় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ক্ষেতে প্রয়োজনীয় সেচ দিতে পারলে বাৎসরিক প্রায় ১৫ হাজার ৭১৭ মেট্রিক টন অতিরিক্ত খাদ্য শস্য উৎপাদন করা যাবে। ফলে রবি মৌসুমের বোরো ধানসহ অন্যান্য ফসলের খরা মোকাবেলায় কৃষকের কাছে আশীর্বাদে পরিণত হবে একনেকে অনুমোদন পাওয়া ঠাকুরগাঁওয়ের সম্মিালত সেচ প্রকল্প।
ঠাকুরগাঁও সদরের টাঙ্গন ব্যারেজ, বুড়ি বাঁধ ও ভুল্লি বাঁধ সেচ প্রকল্প পুনর্বাসন, নদীর তীর সংরক্ষণ ও সম্মিলিত পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো নির্মাণে প্রকল্প ‘বাস্তবায়নে ২৯৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকার বরাদ্দ একনেকে অনুমোদন করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সেচ প্রকল্পগুলো পুনর্বাসন ও সম্মিলিত পানি নিয়ন্ত্রণ কাঠামো নির্মাণ করে ১৩ হাজার হেক্টর জমি সেচের আওতায় আনা যাবে। ফসলের নিবিড়তা ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা এবং মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা ও জীববৈচিত্র রক্ষাসহ সার্বিকভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সেচ খালগুলো সংস্কার করা হলে সেচ দেওয়া এলাকা ৩ হাজার হেক্টর হতে প্রায় ৭ হাজার হেক্টরে উন্নীত হবে। এছাড়াও ঠাকুরগাঁও জেলায় ৪টি সম্মিলিত পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো নির্মাণ করা হলে প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমি সেচ সুবিধাসহ মাছের অভয়ারণ্য হবে।
বিগত ৩০ বছর পর ঠাকুরগাঁও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব এই প্রকল্পটির মাধ্যমে কৃষিতে বিপ্লব ঘটবে বলে মনে করছেন এই অঞ্চলের কৃষকেরা।
ঠাকুরগাঁও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো রবিউল ইসলাম বলেন, সেচ খাল গুলো মেরামত ও পুনর্বাসন এবং নতুন সেচখাল ও সেচ কাঠামো নির্মাণ করে নিরবচ্ছিন্নভাবে সেচের পানি সরবরাহ করে সেচযোগ্য এলাকা বৃদ্ধি ও ফসলের নিবিড়তাসহ উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে। প্রকল্পটির ভৌত কাজ চলতি বছর জুলাই হতে আরম্ভ হবে।
এছাড়া কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি শুকানো ধান ক্রয়, সংরক্ষণ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধাদিসহ আধুনিক ধানের সাইলো নির্মাণের পাইলট প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। দেশে আধুনিক ৩০টি সাইলোর মাঝে একটি নির্মাণ করা হবে ঠাকুরগাঁও সদরের রুহিয়া খাদ্যগুদামে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) প্রকল্পটি অনুমোদন করেছে। গত মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একনেকের বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে সাইলো প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
সূত্র জানায়, ধান ঝাড়াই, বাছাই, শুকানো, আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা ও আনুষঙ্গিক সুবিধাদিসহ আধুনিক এই ধানের সাইলো নির্মাণ করা হবে। সাইলোতে ট্রাক ও বাল্ক ওজন যন্ত্র, কনভেয়িং বাকেট এলিভেটর সিস্টেম সংযোজন থাকবে। সাইলোর সিভিল ফাউন্ডেশন, মাল্টিপারপাস ভবন নির্মাণ, বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন স্থাপনসহ সাইলোতে থাকবে সীমানা প্রাচীর। প্রকল্পটি সঠিকভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই অঞ্চলের কৃষকরা ধানের ন্যায্যমূল্য পাবে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষ্ণ রায় বলেন, রুহিয়ায় সাইলো নির্মাণ হলে কৃষি তথা খাদ্যশস্য সংরক্ষণ উন্নয়নের এক মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে। এছাড়াও যে কোনো দুর্যোগকালে খাদ্য নিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে।