ছাতকের উজ্জ্বল চৌধুরীর খুনীদের ফাঁসির দাবীতে জগন্নাথপুরে মানববন্ধন

মোঃ হুমায়ুন কবীর ফরীদি, জগন্নাথপুর( সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ জগন্নাথপুর এর পল্লীতে সরকারি ভূমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত উজ্জ্বল চৌধুরী (২৯) এর খুনিদের ফাঁসির দাবীতে এলাকাবাসীর আয়োজনে মানববন্ধন কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর ও ছাতক উপজেলার সীমান্তবর্তী জগন্নাথপুর উপজেলার আওতাধীন মোহাম্মদগঞ্জ বাজার এলাকার সরকারি ভূমি নিয়ে বিরোধ এর জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণকারী ছাতক উপজেলার পূর্ব বসন্তপুুর গ্রামের নিহত তরুণ সমাজসেবক উজ্বল চৌধুরীর হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে ফাঁসির দাবীতে ২৩ শে মে বিকাল ৫ ঘটিকার সময় স্থানীয় মোহাম্মদগঞ্জ বাজারে জগন্নাথপুর ও ছাতক এলাকাবাসীর আয়োজনে মানববন্ধন কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এলাকার বিশিষ্ট সমাজ সেবক মোঃ বাবুল মিয়ার সভাপতিত্বে ও নিহত উজ্জ্বল চৌধুরীর বন্ধু ইসলাম জসিম উদ্দিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন ছাতক উপজেলার দোলাবাজার ইউনিয়ন শায়েস্তা মিয়া, পাটলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল হক,পাটলী ইউনিয়ন আওোযামী লীগের সভাপতি হাজী জমশেদ আলী, মিরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আতিকুর রহমান,, নিহতের বড় ভাই আজাদ চৌধুরী, ইউপি সদস্য আব্দুস শহীদ, খালিদ হাসান, উপজেলা যুবলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আবুল জিলানী, সিলেট মহানগর ছাত্রলীগ নেতা রাকিব আহমদ, সমাজকর্মী রফিক মিয়া, সাইদুর রহমান, মুক্তাদির হোসেন, কয়েছ মিয়া, কমলা মিয়া ও পাটলী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার আহমদ ইমন প্রমুখ।
বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, নিহত উজ্জ্বল চৌধুরী একজন তরুন সমাজসেবক হিসেবে অত্র এলাকার মানুষের কাছে পরিচিত।একইভাবে জগন্নাথপুরের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে রয়েছে তাঁর সুখ্যাতি। সন্ত্রাসীরা অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে নৃশংসভাবে তাকে হত্যা করে। আমরা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারে করে আইনের আওতায় এনে খুনিদের ফাঁসি দাবী করছি।
নিহতের বড় ভাই আজাদ চৌধুরী বলেন, আমার ছোট ভাই বের হয়ে স্থানে বাজারে যায়। এসময় আগ থেকে উৎপেতে থাকা একদল সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করেছে। ছোট ভাইয়ের খুনের ফাঁসি চাই আমরা।
এসময় মিরপুর পাটলী, ছাতক ও বিশ্বনাথ সহ জগন্নাথপুরের বিভিন্ন এলাকার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জগন্নাথপুর থানার এসআই মির্জা শাখাওয়াত জানান, ইতিমধ্যে আমরা মামলার প্রধান আসামিসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছি। অপরাপর আসামিকে ধরতে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, জগন্নাথপুর উপজেলা ও ছাতক উপজেলার সীমান্তবর্তী জগন্নাথপুর উপজেলার মীরপুর মোহাম্মদগঞ্জ বাজার এলাকার সরকারি ভূমি নিয়ে জগন্নাথপুরের কচুরকান্দি গ্রামের ফয়জুল ইসলাম ও ছাতক উপজেলার পূর্ব বসন্তপুর গ্রামের খালিছ মিয়া, ছালিক মিয়ার মধ্যে সরকারি জায়গা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এনিয়ে বিগত ১৭ই মে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের প্রায় ১৩ জন আহত হন। তমধ্যে খালিছ মিয়ার ভাতিজা উজ্জ্বল চৌধুরী (২৯) এর অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় সোমবার রাতে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। সেখানে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ মে সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। এঘটনায় পুলিশ ২০ মে রাতে রফিকুল ইসলাম হালিমসহ তিনজনকে আটক করে। নিহতের ঘটনায় উজ্জ্বল চৌধুরীর ভাই আজাদ চৌধুরী বাদি হয়ে সাত জনের নাম উল্লেখ করে জগন্নাথপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।