প্রতিনিধি ২৫ মে ২০২১ , ১২:১৩:২৬ অনলাইন সংস্করণ
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার কাঠইর ইউনিয়নের কাঠইর গ্রামে দীর্ঘদিন যাবত ভিপি সম্পত্তিতে লীজমানি পরিশোধকৃত ৩টি হিন্দু সমাজচ্যূুত পরিবারের বাড়িঘরে ঢিল ছুড়ে হামলা করে এক নারীকে ইটের আঘাতে গুরুতর আহত হয়েছে। আহত নারীর নাম স্বপ্না দাস(২৫)। সে কাঠইর গ্রামের ভূমিহীন কলিন্দ্র দাসের সহধর্মিনী। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৩ মে রাতে। আহত নারীকে রাতেই সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের ৪তলার গাইনী ওয়ার্ডে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।
স্থানীয় ও ভূমিহীন পরিবার সূত্রে জানা যায়, কাঠইর গ্রামের একশ্রেণীর কয়েকজন ভূমিখেকোচক্রের মধ্যে কাঠইর নান্দনিক পাঠশালা একাডেমির সভাপতি তেরাব আলীর নেতৃত্বে তার সহোদর মকসুদ মিয়া তার ছেলে রাজন মিয়াসহ গ্রামের আরো কয়েকজন মিলে ভূমিহীন কলিন্দ্র দাসসহ তিনটি নিরীহ সমাজচ্যুত পরিবারের বাড়িঘরে হামলা করে টিনের চালে ইটের ঢিল ছুড়ে। এ সময় আওয়াজ শুনে ঘরে থেকে কলিন্দ্র দাসের সহধর্মিনী স্বপ্নাঁ রানী দাস বারান্দায় বেরিয়ে আসলে হামলাকারী রাজন স্বপ্নকে প্রাণে মারার উদ্দেশ্যে মাথায় একটি ইটের ঢিল ছুড়লে তার মাথা ফেটে অইেশ রক্ত খননের এক পর্যায়ে বারান্দায় লুটিয়ে পড়েন। তাৎক্ষনিক তার স্বজনরা ঐ নারীকে গুরুতর আহত অবস্থায় সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করার তিনি বতৃমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় গত ২৪ মে রাতে আহতের স্বামী কলিন্দ্র দাস বাদি হয়ে একই গ্রামের নান্দনিক পাঠশালা একাডেমির সভাপতি তেরাব আলী,মো. আবুল কালাম,মকসুদ আলী,তার ছেলে রাজন মিয়া, ঝনিক মিয়ার ছেলে সেতু তালুকদার ও মৃত অজয় তালুকদারের ছেলে সজ্ঞয় তালুকদার ও সজ্ঞিব তালুকদারকে আসামী করে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শহিদু রহমান লিখিত অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
উল্লেখ্য গ্রামের নামাংঙ্কিত ব্যক্তিরা ঐ তিনটি নিরীহ হিন্দু পরিবারের বসতভিটার জায়গাটুকু জোরপূর্বক দখলে নিতে তাদের বিভিন্নভাবে গ্রামছাড়ার জন্য হুমকি দমকী দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। গ্রামের এই তিনটি ভূমিহনি পরিবার তারা ৫০ বছর ধরে সরকারী ভিপি-এ জায়গার খাজনা পরিশোধ করে বসতবাড়ী নির্মাণ করে বসবাস করে আসছিলেন। কিন্তু গ্রামের পঞ্চায়েত নামধারী ঐ চক্রটি তাদের উচ্ছেদসহ তাদের গ্রাম ছাড়ার হুমকি ধমকী দিয়ে বসবাসরত ঐ সরকারী জায়গা দখল করে নিতে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
এই ঘটনা নিয়ে ভূমিহীন কলিন্দ্র দাস ও তার স্বজনরা বার বার জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে বিচার প্রার্থী হয়ে এবং লিখিত অভিযোগ দিয়েও বিচার পাচ্ছেন না গ্রামের ভূমিহীন তিন হিন্দু পরিবারের লোকজনেরা। লিখিত অভিযোগ ও এবং সরেজমিনে খোজঁনিয়ে যানা যায় সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ১৫৮নং জে.এল স্থিত নারকিলা মৌজার ৪৪৮নং খতিয়ানের এস.এ-৩০৩১, নং দাগে ০.১৫ + ০.১২ ও ০.২৩সহ মোট ০.৫০ একর ভূমি ’ক’তপশীল ভূক্ত অর্পিত ও অনাগরিক সম্পত্তি। ভি.পি-৭৩/৭২-৭৩ইং নং বন্দোবস্ত মোকদ্দমা মূলে ঐ তিনটি হিন্দু পরিবার প্রতিবছর সরকারের একসনা লীজমানি পরিশোধ পূর্বক বসত বাড়ি ও ঘর নির্মান করে পরিবার পরিজন নিয়ে বসত করে আসছেন প্রায় ৫০ বছর যাবত। কিন্তু ইদানিং বছর খানেক ধরে বিভিন্ন সময় গ্রামের পঞ্চায়েত নামধারী একটি ভূমিখেকোঁ চক্র ঐ তিনটি হিন্দু পরিবারের বসত ঘরে ভাংচুর, হামলাও গ্রাম ছাড়ার জন্য এবং প্রাণে মারার হুমকি প্রদান করে জোর পূর্বক ভাবে সরকারী জায়গা দখল করে নিয়ে যাচ্ছে। নিরুপায় হয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে গত ৪ মে ২০২১ইং তারিখে পঞ্চায়েতের ৫ জনের নাম উল্লেখ করে অসহায় ভূক্তভোগী পরিবারের বাসিন্দা কলিন্দ্র দাস একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন । কলিন্দ্র দাস কাঠই গ্রামের বাসিন্দা মৃত- জগাই দাসের পুত্র ।