• করোনা ভাইরাস নিউজ

    করোনা ভীতিও থামাতে পারছেনা মানুষের ঢলঃ নাড়ির টানে ছুটছে গ্রামের দিকে!

      প্রতিনিধি ১০ মে ২০২১ , ১০:২৫:০২ অনলাইন সংস্করণ

    ভাটি বাংলা ডেস্ক: সরকারের বিধিনিষেধের কারণে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ। চলছে না ট্রেন, লঞ্চও। নিরূপায় ঘরমুখো মানুষ ঈদ করতে যে যেভাবে পারছে ছাড়ছে ঢাকা। নাড়ির টানে ছুটছে গ্রামের দিকে। আর এবছর ঈদযাত্রা যেন ভয়াবহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে দেশে, আরেকদিকে মানুষ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। নির্দেশনা, কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েও ঘরে রাখা যাচ্ছে না লোকজনকে। গত তিনদিন ধরে একই অবস্থা বিরাজ করছে দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার অন্যতম প্রবেশদ্বার শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে। দিনে ফেরি বন্ধ রেখে রাতে পণ্যবাহী যানবাহন পারের নির্দেশনার পর থেকে হাজার হাজার যাত্রী পড়েছেন ভোগান্তিতে। গত বৃহস্পতিবার থেকে মানুষ ছুটছে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে। সামর্থ্যবানরা ভাড়া করছেন প্রাইভেট কার-মাইক্রো। নিম্নবিত্তরা যাচ্ছেন ট্রাক, পিকআপে গাদাগাদি করে। অনেকে আবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছেন। মাঝে-মধ্যে মিলছে দূরপাল্লার বাসও। ঢাকার প্রবেশমুখের অদূর থেকে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে কৌশলে ছাড়ছে এসব বাস। ছোট ছোট বাহনে ঢাকা থেকে দেশের উত্তর, পূর্ব ও পশ্চিমের বিভিন্ন জেলার মানুষ মহাসড়ক ধরে ছুটে চলেছেন। রাতে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দূরের কিছু বাসও মহাসড়কে চলাচল করছে। সেই বাসেও যাচ্ছেন অনেকে। তাই ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে থেমে থেমে যানবাহন চলছে। কিন্তু দক্ষিণের বিভিন্ন জেলার যাত্রীরা বড় ধরনের বিপত্তির মুখে পড়েছেন। তার মূল কারণ হঠাৎ ফেরি চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আরোপ। এদিকে দুদিন বন্ধ রাখার পর পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে ফেরি চলাচলের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)। গতকাল সোমবার বিকেলে বিআইডব্লিউটিসির মহাব্যবস্থাপক আশিকুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
    এদিকে গাবতলী, হেমায়েতপুর ও সায়েদাবাদ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক হাজার মানুষ বাড়িতে যাওয়ার জন্য যানবাহন খুঁজছেন হন্যে হয়ে। অধিকাংশ মানুষই স্বাস্থ্যবিধি মানছিলেন না। গাবতলিতে গণপরিবহন না পেয়ে অনেককেই পায়ে হেঁটে বা অটোরিকশায় সেখান থেকে আমিনবাজারের দিকে রওনা হয়েছেন। আমিনবাজার এলাকায় ঘরমুখী মানুষের প্রচুর ভিড় দেখা গেছে। লেগুনা, ট্রাক কিংবা মোটরসাইকেলে চড়ে অনেকেই দুই বা তিনগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন। এমনকি অনেকে পায়ে হেঁটেও লম্বা পথ পাড়ি দিচ্ছেন।
    এদিকে লঞ্চ ও ফেরি বন্ধ থাকায় সবচেয়ে ভোগান্তি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। ভোর থেকেই মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে ভিড় করছেন ঘরমুখো হাজারো মানুষ। মাঝে-মধ্যে এম্বুলেন্স পারাপারের জন্য ফেরি ঘাটে ভিড়লেই হুড়মুড়িয়ে উঠে পড়ছেন তারা। গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় শিমুলিয়া ঘাট থেকে তিন সহস্রাধিক যাত্রী নিয়ে গাদাগাদি করে ফেরি যমুনা বাংলাবাজার ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
    ঢাকার জুরাইন চেয়ারম্যান বাড়ি থেকে শিমুলিয়া ঘাটে আসা মো. সজীব বেপারী জানান, তার বাড়ি মাদারীপুর। বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ করার জন্য খুব ভোরে রওনা হয়ে ঘাটে পৌঁছেছেন তিনি। কিন্তু ঘাটে এসে দীর্ঘ অপেক্ষার পরও পার হতে না পেরে হতাশ তিনি। তিনি বলেন, ভাই আমি ব্যাচেলর মানুষ। আমি একা কী করে ঢাকায় ঈদ করি? তাই বাড়ি যাচ্ছি বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ করার জন্য। ওদিকে পাটুরিয়া ঘাট থেকেও সকাল থেকে তিনটি ফেরি ঠাসাঠাসি করে কয়েক সহস্রাধিক যাত্রী ছেড়ে যায় দৌলতদিয়া ঘাটের উদ্দেশে। গত বছর ঈদুল ফিতরের সময় গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও ঈদুল আজহাতে নিষেধাজ্ঞা শিথিল হয়। এরপরই বাড়ি ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে সবাই।
    এবছর ১৯ এপ্রিল করোনায় দেশে ১১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটি দেশে এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। আর নতুন রোগী শনাক্ত হয় ৪ হাজার ২৭১ জন। গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্তের কথা জানায় সরকার। গত বছরের মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত শনাক্তের হার ২০ শতাংশের ওপরে ছিল। এরপর থেকে শনাক্তের হার কমতে শুরু করে। করোনার এই দ্বিতীয় ঢেউয়ের এই সময়ে সবচেয়ে সংকটময় অবস্থায় আছে বাংলাদেশ। গত বছর ২ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত হয়। এদিন শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ১৯ জন। এবছর ১৯ এপ্রিলে একদিনেনতুন রোগী শনাক্ত হয় ৪ হাজার ২৭১ জন।
    সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ২৯ মার্চ বিধিনিষেধসহ ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। এর মধ্যে ঘরের বাইরে গেলে মাস্কের ব্যবহার অন্যতম। কিন্তু সংক্রমণ আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে থাকলেও জনগণের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে এখনও উদাসীনতা দেখা গেছে। এরপর কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে চলাচল সীমিত করা হয়, অফিসসহ নানা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়। যদিও পরবর্তীতে শপিং মল থেকে শুরু করে শহরের মধ্যে গণপরিবহন চলাচল খুলে দেওয়া হয়। এখনও আন্তঃজেলা বাস বন্ধ আছে। তারপরও মানুষ ছুটছে। গত শনিবার ফেরি আটকানোর ঘোষণা এলেও ঘাটে ১১ হাজার মানুষ জড়ো হয়ে ফেরি চালাতে বাধ্য করে। গত রোববারও হাজার হাজার মানুষ ফেরি পার হয়ে ফরিদপুর-মাদারীপুর-ঝিনাইদাসহ বিভিন্ন জেলায় রওনা হয়। জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে হলে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার বিকল্প নেই। এই সময়ে বাড়ি যাওয়ার জন্য ফেরিতে যে গাদাগাদি হয়ে মানুষ পার হতে দেখা গেল তা আগামী ১৪ দিন পরে ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে।
    জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হয়েছে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। নিষেধাজ্ঞা দিলে নিম্নবিত্তের দুর্দশার কথা বলা হয়। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা শিথিল করলে সবাই মার্কেটে ভিড় করলেন। মানুষের ভেতর বেপরোয়া ভাব চলে এসেছে যা বিপদ বাড়াবে।
    প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান: করোনার সংক্রমণ রোধে ঈদে বাড়ি যাওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন,  প্রত্যেকে যার যার অবস্থানে থেকে ঈদ করুন। একটা ঈদ বাড়িতে না করলে কী হয়। তিনি সবাইকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানান। সবাইকে বলবো, নিজ নিজ অবস্থানে থেকে ঈদ করুন। কেননা বাড়ি যাওয়ার পথে কে ভাইরাস বহন করছেন, কে করছেন না, তা আমরা কেউ জানি না। কাজেই বাড়ি যাওয়ার পথে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই বলবো, বাড়ি যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কেননা যাওয়ার পথে আপনি ভাইরাস বহন করে নিয়ে যেতে পারেন আপনার পরিবারের কাছে।
    ফেরি চলাচলের অনুমতি: গত শুক্রবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে বিআইডব্লিউটিসি জানিয়েছিল, গত শনিবার থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে দিনে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে। রাতে শুধু পণ্যবাহী পরিবহন পারাপারের জন্য ফেরি চলবে। এদিকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটের পাশাপাশি বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌ-পথে ফেরি চলাচল চালুর ঘোষণা দিয়েছে বি আইডব্লিউটিসি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাবাজার ফেরিঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) জামিল আহমেদ। তিনি বলেন, বিকেল থেকে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। এর আগে এ বিষয়ে বি আইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ফেরি তো যাত্রী পরিবহনের জন্য নয়, যানবাহন পরিবহনের জন্য। প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন সবাই যেখানে আছেন সেখানে ঈদ করুন। কিন্তু কিছুতেই শুনছে না, কত বেপরোয়া মানুষ…।
    ফেরিঘাটে এবার ব্যাটালিয়ন আনসার মোতায়েন: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান বিধিনিষেধে রাজধানী ঢাকার সবকটি বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন ও সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তারপরও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেল, সিএনজি অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহনে যে যেভাবে পারছেন ঘরমুখী হচ্ছেন। ফেরি পার হতে অপেক্ষমান মানুষের যাত্রা ঠেকাতে শেষ পর্যন্ত বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। ফলে গত রোববার সকাল থেকেই শিমুলিয়া, বাংলাবাজার, কাঁঠালবাড়িসহ বিভিন্ন ঘাটে যাত্রীদের অপেক্ষার প্রহর বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে ভোগান্তিও বাড়ে। জরুরি প্রয়োজনে চলাচল করা বিভিন্ন যানবাহনও আটকা পড়ে।
    দক্ষিণ অঞ্চলে নৌপথে যাতায়াত করা যাত্রীরা বলছেন, ঈদযাত্রায় যত বিপত্তি যেন শুধুই তাদের। অন্য জেলার মানুষ গাড়িতে অনায়াসে বাড়ি যেতে পারছেন। শুধু তাদের ক্ষেত্রেই ফেরি বন্ধ যাত্রা ঠেকানোর চেষ্টা করছে সরকার। অথচ অন্যদিকে যাত্রা ঠেকাতে সরকারের তেমন কোনো নজরদারি নেই। রহমত উল্লাহ নামের এক যাত্রী বলেন, বাড়ি গিয়ে ঈদ করার আনন্দই অন্যরকম। যত কষ্টই হোক পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে চাই। তাই দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করছি ফেরি পেতে। তিনি আরও বলেন, এখন যেভাবেই হোক বাড়ি যাচ্ছি। কিন্তু ঢাকায় ফেরার সময় যেন এ সমস্যা না থাকে। সরকারের কাছে ফেরি চালু করার দাবি জানাই।
    অভিযোগ উঠেছে, প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা ঢাকা থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে যাত্রীদের ঠেকাতে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। তদুপরি ফেরি বন্ধ করে যাত্রীদের আটকে দেওয়া হচ্ছে।
    দৈনিক সংগ্রামের মুন্সীগঞ্জ ও এইচ এম হাসিবুল হাসান ঘিওর, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, বিজিবি মোতায়েন হলেও রোববার মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া থেকে দুটি ফেরি প্রায় দুই হাজার যাত্রী নিয়ে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটে পৌঁছে। ঈদে ঘরমুখো মানুষের চাপে জরুরি সেবায় নিযয়াজিত গাড়ি ফেরিতে উঠতে হিমসিম খাচ্ছে। মোট ১৬টি ফেরির মধ্যে এখন চলছে নয়টি। ফেরিগুলো ঘাটে ভিড়লেই শত শত যাত্রী উঠে পড়ছেন তাতে। ফলে ফেরিতে দুই-একটির বেশি জরুরি গাড়ির জায়গা হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে শত শত যাত্রী আর দুই-একটি জরুরি সেবার গাড়ি নিয়েই পদ্মা পারি দিচ্ছে ফেরিগুলো। এ দিন সকাল থেকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে ঘরমুখো মানুষের ঢল নামে। বিজিবির বাধা সত্ত্বেও জোর করে ফেরিতে ওঠেন যাত্রীরা। শিমুলিয়া ঘাট থেকে সকাল ১০টার দিকে প্রায় দুই হাজার যাত্রী নিয়ে বাংলাবাজারের দিকে ছেড়ে যায় ফেরি শাহপরাণ। এর আগে ১১টি অ্যাম্বুলেন্স ও কিছু যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যায় ফেরি ফরিদপুর। বাংলাবাজার ঘাট থেকে ফেরি দুটি আবার শিমুলিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। শিমুলিয়া ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় রোববার বিকেলেও বহু যাত্রী অপেক্ষায় ছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে লাশ ও রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স পারাপারের জন্য কয়েকটি ফেরি চলাচল করছে। এসব ফেরিতে যাত্রী এবং ছোট গাড়িও পারাপার হচ্ছে।
    বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, সরকারি বিধিনিষেধ কাগজপত্রেই আছে। বাস্তবে নেই। বাড়ি যাওয়া বন্ধ করতে হলে এতদিন ফেরি চালু রাখা হয়েছিল কেন?
    বাংলাদেশ আভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ফেরিতে দিনে শুধু অ্যাম্বুলেন্স চলাচল করতে পারছে। দেশে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরন পাওয়া গেছে- এ তথ্য জানার পর আমরা আরও তৎপর হয়েছি। এ অবস্থায় আমরা ঈদ করতে বাড়ি যেতে পারি না। আমি নিজেও তো বাড়ি যাচ্ছি না।
    মাওয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সিরাজুল কবীর এ খবর নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, শিমুলিয়া ঘাটের পার্শ্ববর্তী এলাকা, মাওয়া মৎস্য আড়ত, কান্দিপাড়া থেকে ১৩টি ট্রলার জব্দ করা হয়। এসময় ট্রলার চালকসহ ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। গত তিনদিন ধরে আমাদের অভিযান চলছে, যা চলবে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত।
    নয়টি ফেরি চলাচল করতে দেখা গেলেও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) পাটুরিয়া ঘাট শাখার বাণিজ্য বিভাগের সহকারী ম্যানেজার মহিউদ্দিন রাসেল গণমাধ্যমকে বলেন, এমনিতে দিনের বেলায় ফেরি চলাচল বন্ধ, তবে রোগী কিংবা লাশবাহী গাড়ি থাকলে দুই-একটি ফেরি চলাচল করে। জরুরি সেবায় নিয়োজিত গাড়িগুলো ফেরিতে তুলতে গেলে হুমড়ি খেয়ে মানুষ ফেরিতে উঠে পড়ছেন আর এতে করে অনেক সময় একটি অথবা দু’টি গাড়ি দিয়েই ফেরিগুলো দৌলতদিয়া ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে।

    সংগৃহীত

    আরও খবর

    Sponsered content