প্রতিনিধি ১৯ মার্চ ২০২১ , ১:১১:০৮ অনলাইন সংস্করণ
সুনামগঞ্জপ্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের শাল্লার উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের সংখ্যালঘু নোয়াগাঁও গ্রামে হিন্দু যুবক ঝুমন দাস আপন এর ফেসবুকে আল্লামা মামুনুল হক কে নিয়ে কটুক্তির প্রেক্ষিতে একদল উশৃংখল লোকদের হামলা লুটপাট ও ভাংচুরের অভিযোগে থানায় বৃহস্পতিবার দুটি পৃথক মামলা হয়েছে। একটি মামলার বাদী শাল্লা থানার এসআই আব্দুল করিম। অন্য মামলার বাদী স্থানীয় হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল।
মামলায় আসামী করা হয়েছে দিরাই থানার সরমঙ্গল ইউনিয়নের চন্দ্রপুর ও নাচনী এবং শাল্লা থানার হবিবপুর কাশিপুর গ্রামের ১৫০০ জনকে। মামলার প্রধান আসামী করা হয়েছে, ঘটনার উস্কানীদাতা নাচনী গ্রামের বাসিন্দা সরমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য স্বাধীন মিয়াকে।
পুলিশ বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ২০/২৫ জনকে আটক করেছে বলে নানা সূত্রে খবর পাওয়া গেছে। তবে শাল্লা থানার ওসি নাজমুল হক জানিয়েছেন, এ যাবত ২২ জনকে আটক করা হয়েছে।
আটককৃতদের মধ্যে ১৮ জনকে তাড়ল ইউনিয়নের ধল গ্রাম থেকে নাচনীর ১৮ জনকে গভীর রাতে পুলিশ ধরে নিয়ে আসে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে আটককৃতদের ২২ জনের মধ্যে মাত্র ২ জন এজহারভুক্ত আসামি।
আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের আটক করার অভিযান চলছে। অভিযান পরিচালনার স্বার্থে আটককৃতদের নাম প্রকাশ করেননি তিনি।
পুলিশ জানায়, গ্রামবাসীর পক্ষে দায়ের করা মামলার বাদী হয়েছেন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নোয়াগাওঁ গ্রামের বাসিন্দা বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল। এই মামলায় ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে ও ১৫০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে আসামী করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা ১৫০০ জন আসামী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান।
এ ব্যাপারে শাল্লা থানার ওসি নাজমুল হক জানান, পুলিশ বাদী হয়ে দায়ের করা মামলার বাদী সাব-ইন্সপেক্টর আব্দুল করিম। এই মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে এবং গ্রামবাসীর পক্ষে আরেকটি মামলায় ৫০ জনের নাম উল্লেখ ও অনেককে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে।
এর আগে ১৮ই মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে র্যাবের মহাপরিচালক শাল্লার সন্তান চৌধুরী আব্দুল্লাহ্ আল মামুন ক্ষতিগ্রস্ত নোয়াগাঁও গ্রাম পরিদর্শন ও প্রেসব্রিফিং করে ঘটনার সাথে জড়িতদের কঠোর শান্তি ও গ্রামবাসীকে নিরাপদে বসবাসের আশ্বাস দিয়েছেন। তাঁর নির্দেশে গ্রামে অস্থায়ী র্যাব ও পুলিশ ক্যাম্প বসানো হয়েছে।
প্রসঙ্গতঃ নোয়াগাঁও গ্রামের যুবক ঝুমন দাস আপন নামের এক তরুণের ফেসবুক আইডি থেকে মাওলানা মামনুল হককে কটাক্ষ করে কথিত স্ট্যাটাসের প্রতিক্রিয়ায় ১৭ই মার্চ বুধবার সকাল ৯ টায় এই তাণ্ডব চালানো হয় তবে স্থানীয়রা বলছেন এই ঘটনার সুযোগে জলমহাল কেন্দ্রিক বিরোধের প্রতিশোধ নিয়েছে একটি পক্ষ।