• লিড

    ঢাকার পল্লবীতে কিশোর গ্যাং প্রধান মাহাবুবের তান্ডব!

      প্রতিনিধি ৮ মার্চ ২০২১ , ৬:১৩:৩৩ অনলাইন সংস্করণ

    আজিজুল ইসলাম, মিরপুর থেকে। সারা দেশে কিশোর গ্যাং কালচার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে কিশোররা ব্যবহৃত হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের অপরাধের ধরনও পাল্টে যাচ্ছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, চুরি-ছিনতাই থেকে শুরু করে খুনাখুনিসহ নানা অপরাধে কিশোর-তরুণরা জড়িয়ে পড়ছে। মাদক ব্যবসা ও দখলবাজিতেও তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে।
    রাজধানীর  পল্লবী থানাধীন বাউনিয়াবাধ এলাকায় “মরহুম হারুন মোল্লাহ স্মৃতি ক্রীড়া সংঘ” ক্লাবের ভিতরে রাতদিন চলে মাদক বেঁচাকেনা ও সেবন। বেশির ভাগ তারা কিশোর। সন্ধ্যার পর কোনো অপরিচিত লোকজন সেখান দিয়ে হাঁটাচলা করতে পারেনা।
    নামে হারুন মোল্লাহ স্মৃতি ক্রীড়া সংঘ হলেও সেখানে মুলত ইয়াবা মাদক, হিরোইন, গাজা মদ পাইকারি ও খুচরা বিক্রির আড়ৎ বলেই এলাকায় বেশ পরিচিত। সেখান দিয়ে থানা পুলিশের টহল গাড়ী চলাচল করলেও তা তাদের নজরে পড়েনা। এরা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে হারুন মোল্লাহ স্মৃতি ক্রীড়া সংঘকে ব্যবহার করে সকল অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। নামধারী যুবলীগ নেতা রাসেল ও সুজন মুলত এলাকায় চাঁদাবাজ হিসেবে চিহ্নিত। তাদের সকল অপরাধ মুলুক কর্মকান্ড চালাতে গড়ে তুলছে এলাকায় বিশাল এক কিশোর গ্যাং বাহিনী। প্রায়ই ১০০/১৫০ জনের উঠতি বয়সের কিশোরদের নিয়ে বাহিনী বানিয়েছেন।  সেই বাহিনীর প্রধান সেনাপতি হলো মাহাবুব ওরফে জুতা মাহাবুব।  তাদের দিয়ে পল্লবী এলাকায়  চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, দখল, সড়কে দোকান থেকে চাঁদা আদায়,বাড়ী নির্মাণে চাঁদা আদায় সহ ইয়াবা ট্যাবলেট বিভিন্ন স্থানে পাইকারী ও খুচরা বিক্রির জন্য তাদের ব্যবহার করা হয়। নারীদের ইভটিজিং করাসহ সীমাহীন অপরাধ করেও বার বার তারা পার পেয়ে যাচ্ছে। আশ্চর্যজনক হলো যারা মাদক সেবনকারী ও ব্যবসায়ী  তাদের দিয়েই জনপ্রতিনিধি ও নেতারা  মাদক নির্মুল কমিটি করে এলাকায় মাদক মুক্ত শ্লোগান করায়। শুধু মাত্র হারুন মোল্লাহ স্মৃতি ক্রীড়া সংঘ সাইনবোর্ডের উছিলায়।
    সুজনের এক ঘনিষ্ঠজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, নামধারী যুবলীগ নেতা সুজন ও রাসেলকে যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে বেশি মাল কড়ি এনে দিবে সেই হবে দলের প্রধান। ফলে দলের প্রধান হতে গিয়ে এ সকল কিশোররা প্রতিযোগিতা করে  বিভিন্নভাবে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এমনকি তাদের আগামী সোনালী দিন গুলি ধ্বংসের দিকে ।
    জানাগেছে, মাত্র পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা না পেয়ে ফুটপাতের এক গরুর কলিজা ব্যাবসায়ী রিয়াজ আলীকে কুপিয়ে যখম করেছে। আসামীরা হলো মাহাবুব ওরফে জুতা মাহাবুব, রাজন সরদার জয়, মোঃ রজ্জব, রনি, আরিফ ওরফে মাইচ্ছা আরিফ, ছেরু মিয়া ওরফে সেরু, রুবেল ওরফে আদু রুবেল, আল আমিন সহ আজ্ঞত আরো ৭/৮ জন। তাদের বিরুদ্ধে গত  ০৬ই মার্চ ২০২১ইং তারিখে পল্লবী থানায় মামলা হলেও এজাহার ভুক্ত আসামীদের এখন পর্যন্ত কাউকেই আটক করতে পারেনি পুলিশ। তথ্য রয়েছে: এদিকে প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করছে থানার তালিকা ভুক্ত আসামী মাহাবুব সহ অন্যরা। এজাহার সুত্রে জানা যায় আহত রিয়াজ আলী পল্লবীর এভিনিউ-৫ সবুজ বাংলা গেটের সামনে দীর্ঘদিন ধরে ভ্যান-গাড়ীতে ফেরি করে গরুর কলিজা ও মাথার গোস্ত বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
    মামলা করে এখন অসহায় রিয়াজ আলীসহ তার পরিবার চরম ভীতিকর অবস্থায় পড়েছে। কিছুক্ষণ পর পর মাহাবুব বাহিনীর সদস্যরা ভুক্তভোগীদের মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। মামলার তদন্ত অফিসার এসআই সোহেল শিকদার বলেন, মামলা হয়েছে আসামীদের আটকের চেষ্টা চলছে।
    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের এক নেতা বলেন, সুজন ও রাসেল মরহুম হারুন মোল্লাহ স্মৃতি ক্রীড়া  সংঘ ক্লাবটিকে নিজেদের আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করছে। তারা আওয়ামী অঙ্গসংগঠনের কেউ না। সেখানে কোনো কার্যক্রম নেই’ মাদক সেবন ও বিক্রি ছাড়া। তারা সেখানে অবৈধ অনৈতিক কার্যকলাপ করে আসছে। কিন্ত আমরা প্রতিবাদ করতে পারিনা। ঢাকা-১৬ আসনের এমপি আলহাজ্ব ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লার বাবা মরহুম হারুন মোল্লাহ”র নামে সাইনবোর্ড লাগিয়ে তারা এগুলো করে। থানা পুলিশও জানে বাউনিয়াবাঁধে কারা কি করে। এলাকার উঠতি বয়সের তরুণদের মাদকের নেশায় জড়িয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণে রেখে অপরাধ করায়। তিনি আরো বলেন  এগুলো পরিস্কার করতে হলে আমাদের এমপি ও পল্লবী থানার ওসি সাহেবের কঠোর ভুমিকা রাখতে হবে। যেমন পল্লবী থানার সাবেক ওসি দাদন ফকির সাহেব মাদক মুক্ত এলাকা গড়েছিলেন।
    পল্লবী থানার ওসি বলেন, মাদকের বিষয়ে সব সময় আমরা সতর্ক রয়েছি। তথ্য পাওয়া মাত্রই তাদের আটক করছি।

    আরও খবর

    Sponsered content