প্রতিনিধি ১৪ জানুয়ারি ২০২১ , ১২:০৭:২৮ অনলাইন সংস্করণ
কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ কানাইঘাটের দনাসহ বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবাধে আসছে রোগাক্রান্ত আর অস্বাস্থ্যকর ভারতীয় গরু। আর এসব গরু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। ফলে এ গরুর মাংসতে যেমন স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকছে, তেমনিভাবে দেশীয় প্রজাতির গবাদিপশুতে ছোঁয়াছে ক্ষুরাসহ নানা রোগও ছড়িয়ে পড়ছে। এজন্য চোরাচালান বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও তৎপর হতে আহ্বান জানিয়েছেন সচেতন মহল।
সীমান্তবর্তী একাধিক সূত্র জানায়, করোনা মহামারির কারণে কয়েক মাস ভারত থেকে অবৈধ পথে গরু আসা বন্ধ ছিল। তবে মাস দিন থেকে ফের আসতে শুরু করেছে গরু। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি না থাকায় সম্প্রতি গরু চোরাচালান বেড়ে গেছে। প্রতিদিন রাতেই আসছে গরু। আর অবৈধভাবে আনা এসব গরু স্থানীয় সড়কের বাজারের পশুর হাটে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয়। আর সেখান থেকেই ট্রাকে করে তা নিয়ে যাওয়া হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
সড়কের বাজারের একাধিক বাসিন্দা জানান, মধ্যরাত থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত ভারতীয় গরু এই বাজারে আসে। আর দুপুরের আগেই সব গরু সেখান থেকে ট্রাকে করে সরিয়ে নেয়া হয়। তাদের কথার প্রমাণ মিলেছে সরেজমিনেও। গতকাল বুধবার সকাল ৮টার দিকে সেখানে গিয়ে প্রায় ৫ শতাধিক ভারতীয় গরু বেঁধে রাখা অবস্থায় দেখা গেছে। আর এসব গরু নিতে ছোট পিকআপ এবং ট্রাকের সারিও ছিল বেশ লম্বা।
জানা যায়, গরু চোরাচালানের সাথে জড়িতদের বেশিরভাগই রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী। মূলত রাজনৈতিক প্রভাবের মাধ্যমেই তারা প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে অবাধে ভারতীয় গরুর ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলতেও চান না।
উপজেলা দূর্নীতি দমন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মাস্টার মহিউদ্দিন জানান, ‘ভারতীয় গরুর মাংস মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। আর চোরাচালানে অবৈধভাবে গরু নিয়ে আসার কারণে দেশের খামারিরাও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এ কারণে চোরাচালান বন্ধে প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে।’
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ইকবাল হোসেন জানান, ভারত থেকে বৈধ পথে পশু আমদানি করা হতো খাটালের মাধ্যমে। কিন্তু কয়েক বছর থেকে খাটাল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আর অবৈধ পথে চোরাচালানের মাধ্যমে যেসব পশু আসে, তার বেশিরভাগই রোগাক্রান্ত এছাড়া বিভিন্ন স্টেরয়েড দিয়ে এসব পশু মোটাতাজাও করা হয়। ফলে এর মাংস মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ। পাশাপাশি চোরাচালানে আসা পশু থেকে দেশী গবাদিপশুতে ক্ষুরাসহ বিভিন্ন ছোঁয়াছে রোগ ছড়ায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। চোরাচালান বন্ধের বিষয়ে উপজেলা সমন্বয় বৈঠকে তার বক্তব্য তুলে ধরবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) জাহিদুল হক জানান, সীমান্ত দিয়ে পশু আসা বন্ধে পুলিশ তৎপর রয়েছে। এ কারণে বেশ কয়েক মাস ধরে চোরাইপথে পশু নিয়ে আসা বন্ধ ছিল। তবে নতুন করে পশু আসার বিষয়টি তার জানা নেই। তিনি এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেও জানান