প্রতিনিধি ১৬ জানুয়ারি ২০২১ , ১০:৫৫:২৫ অনলাইন সংস্করণ
পৌরসভা নির্বাচনে মারামারি, গাড়ি ভাঙচুর এবং ককটেল বিস্ফোরণ। ছবি সংগৃহীত
ভাটি বাংলা ডেস্ক।। নিয়ম ও ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে তিনটি পৌরসভায় বিএনপির প্রার্থী ভোট বর্জন করেছে। এছাড়া ভোট হচ্ছে এমন কয়েকটি কেন্দ্রে হাতাহাতি, মারামারি, গাড়ি ভাঙচুর এবং ককটেল বিস্ফোরণের মতো ঘটনাও ঘটেছে।
দ্বিতীয় ধাপে আজ শনিবার দেশের ৬০টি পৌরসভায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকাল ৮টায় শুরু হয়েছে ভোট গ্রহণ, চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
এদিকে বেলা ১১টার পরে মেয়র পদে নির্বাচন করা বিএনপির তিনজন প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। তারা হলেন- রাজশাহীর ভবানীগঞ্জের বিএনপি প্রার্থী আবদুল রাজ্জাক, বাগেরহাটের মোংলা এবং কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর পৌরসভার বিএনপি মনোনীত প্রার্থী।
মারামারি হয়েছে ফেনীর দাগনভূঞা পৌরসভার একটি কেন্দ্রে। সেখানে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
এতে চারজন আহত হন। বাগেরহাটের মোংলায় দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। ঝিনাইদহের শৈলকুপায় সংঘর্ষে দুজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সেখানে এক মেয়রপ্রার্থীর গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে।
বাংলাদেশ জার্নালের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, সকাল ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরু হলে অনেক কেন্দ্রে ভোটারদের লম্বা লাইন দেখা গেছে। শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট গ্রহণ চলে। তবে বেলা ১১টার পর কোথাও কোথাও বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেওয়া, কেন্দ্রে এজেন্টকে মারধর, বিএনপির চিন্থিত ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ আসতে থাকে।
রাজশাহী আড়ানী পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে গত দুদিন ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও আজ সেখানে শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট গ্রহণ হচ্ছে। তবে ভোটের আগের রাতে সেখান থেকে ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
একই অবস্থা নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভায়ও। সেখানকার ভোট নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই ও মেয়র পদপ্রার্থী আবদুল কাদের ধারাবাহিক অভিযোগ করলেও আজকের ভোট নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় এই নেতা।
এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে ২৪টি পৌরসভায় ভোট গ্রহণ হয়। এর মধ্যে ১৯টি পৌরসভায় আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী এবং তিনটিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা জয়ী হন। বাকি দুটি পৌরসভায় জয় পেয়েছেন বিএনপির প্রার্থী।
দ্বিতীয় ধাপে ৬১টি পৌরসভা তফসিল ঘোষণা করলেও নীলফামারীর সৈয়দপুরের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। এ এলাকার মেয়র পদের স্বতন্ত্র প্রার্থী (নারিকেল গাছ প্রতীক) মো. আমজাদ হোসেন সরকারের মৃত্যুতে এ পৌরসভার ভোট স্থগিত করে ইসি।
ফেনীর দাগনভূঞা পৌরসভার একটি কেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণ
৬০ পৌরসভাতে মেয়র প্রার্থী ২২১ জন, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর ৭৪৫ এবং সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে ২ হাজার ৩২০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এসব পৌরসভায় মোট ভোটার ২২ লাখ ৪০ হাজার ২২৬ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ১১ লাখ ৮ হাজার ৪৩১ জন এবং নারী ১১ লাখ ৩১ হাজার ৮৩১ জন। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১ হাজার ৮০টি এবং ভোটকক্ষ ৬ হাজার ৫০৮টি।
ইভিএমে ভোট- দিনাজপুরের বীরগঞ্জ, বগুড়ার সারিয়াকান্দি ও সান্তাহার, নওগাঁর নজিপুর, রাজশাহীর কাঁকনহাট ও আড়ানী, নাটোরের নলডাঙ্গা, সিরাজগঞ্জের কাজীপুর, পাবনার ফরিদপুর, মেহেরপুরের গাংনী, কুষ্টিয়ার কুমারখালী, ঝিনাইদহের শৈলকুপা, বাগেরহাটের মোংলা, মাগুরা সদর, পিরোজপুর সদর, টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া, নেত্রকোনার কেন্দুয়া, কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর, ঢাকার সাভার, নরসিংদীর মনোহরদী, নারায়ণগঞ্জের তারাবো, শরীয়তপুর সদর, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর, কুমিল্লার চান্দিনা, ফেনীর দাগনভূঞা, নোয়াখালীর বসুরহাট, খাগড়াছড়ি সদর ও গাজীপুরের শ্রীপুর।
ব্যালট পেপারে ভোট- চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ, নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ, কুষ্টিয়া সদর, কুষ্টিয়ার মিরপুর, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, দিনাজপুর সদর, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা, গাইবান্ধা সদর, দিনাজপুরের বিরামপুর, পাবনার ভাঙ্গুড়া, সাঁথিয়া, সুজানগর, সুনামগঞ্জ সদর, হবিগঞ্জের মাধবপুর, নবীগঞ্জ, ফরিদপুরের বোয়ালমারী, পাবনার ঈশ্বরদী, বগুড়ার শেরপুর, রাজশাহীর ভবানীগঞ্জ, সিরাজগঞ্জের বেলকুচি, উল্লাপাড়া, সুনামগঞ্জের ছাতক, নাটোরের গোপালপুর, গুরুদাসপুর, বান্দরবানের লামা, সিরাজগঞ্জ সদর, রায়গঞ্জ, কিশোরগঞ্জ সদর, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা।
দ্বিতীয় ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত চার মেয়র
মেয়র পদে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর, পাবনার ভাঙ্গুরা, পিরোজপুর সদর এবং নারায়ণগঞ্জের তারাব পৌরসভায় মেয়র পদে একক প্রার্থী হওয়ায় তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। সাতজন সাধারণ কাউন্সিলরও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
দেশের ৩২৯টি পৌরসভার মধ্যে প্রথম ধাপে ২৪টি পৌরসভায় ইভিএমে ভোট হয় ২৮ ডিসেম্বর। তৃতীয় ধাপে ৬৪টি পৌরসভায় ৩০ জানুয়ারি এবং চতুর্থ ধাপে ৫৬টি পৌরসভায় ১৪ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।