প্রতিনিধি ১১ অক্টোবর ২০২০ , ১২:৪৮:৩৬ অনলাইন সংস্করণ
বিপ্লব রায়, শাল্লা:: শাল্লা একটি হাওর অধ্যুষিত উপজেলা। এখানে ছয় মাস পানি আর ছয় মাস শুকনো মৌসুম। এটিকে হাওরাঞ্চলের প্রাণকেন্দ্র বললেই চলে। কারন চারটি জেলার মধ্যস্থলে শাল্লা। এর একপ্রান্তে নেত্রকোনা, আরেক প্রান্তে কিশোরগঞ্জ অন্যপ্রান্তে হবিগঞ্জ। সুনামগঞ্জসহ এই চারটি জেলা জুড়ে ভাটি অঞ্চল বিস্তৃত। আর ছোটোবেলা থেকেই নানা উৎসব-পার্বণ উপলক্ষ করে মেতে ওঠা হাওরবাসীর নির্মোহ আনন্দ-উচ্ছ্বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে। তাই বর্ষায় হাওরের উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গে বুক চিতিয়ে চলা ভাটির মানুষের কণ্ঠে গান অনেকটা আপনা-আপনিই ধ্বনিত হয়।
এজন্যই ধীরচিত্তে বলতে পারি ভাটির এই জনপদে অনেক জ্ঞানী গুণী ব্যাক্তি রয়েছেন। যাদের সংস্পর্শে থেকে নিজেকে আজ ধন্য মনে হচ্ছে। তেমনি হাওরের বুক থেকে নতুন আঙ্গিকে নতুন রুপে সঙ্গীত জগতে উদিত হল এক প্রতিভাবান শিল্পীর। তিনি হচ্ছেন বিজয় কৃষ্ণ সরকার। গ্রামের বাড়ি শাল্লা উপজেলার কল্লি গ্রামে। ছোট বেলা থেকেই ছিলেন সঙ্গীত প্রেমী। সঙ্গীতের মোহনায় নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে তৈরী করেছেন অসংখ্য গান। উনার গানের সুরের মুর্চনায় ফুটে উঠেছে ভাটির মানুষের জীবনমানের কথা। গানে গানে বুঝিয়ে দিয়েছেন মায়াময় এই জগতে মানুষের মধ্যে বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের কথা। বিজয় সরকারে প্রতিভার কথা এখন না বলেই পারছি না। তিনি হচ্ছে একজন হেল্থ ইন্সপেক্টর। মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখে এসব মানুষদের জীবনমান নিয়ে তৈরি করেছেন ১৪০টি গান। এর মধ্যে জনপ্রিয় গান হল, আমি যেদিন চলে যাব এই পৃথিবী ছেড়ে, সেদিন তোমরা রেখ মনে এই আমারে। এই গানটি জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে। তবে উনার প্রথম গানটি হচ্ছে, নিশ্বাসের নাইরে বিশ্বাস, করিস হায় হুতাশ। এই গানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় গীতিকারের জগত। উনার প্রায় আশিটি গানের সুর নিজেই দিয়েছেন। উনার এই প্রতিভার প্রতি আপ্লুত হয়ে হাওরপাড়ের মানুষের প্রানবন্ত ফিরে এসেছে। সঙ্গীত জগতের উজ্জল নকত্র হয়ে বিজয় সরকার একদিন দেশের শীর্ষ স্থানে অবস্থান নিবেন বলে আমি বিশ্বাসী। একজন লেখক হয়ে আমি বলতে পারি নিরহংকারী এই বিজয় সরকারের মনে সঙ্গীতের প্রতিভা জন্ম নিয়েছে। প্রচারে প্রসারের মধ্য দিয়ে সুরাকার ও গীতিকার হিসেবেও বিজয় সরকার একদিন আলোচিত ব্যাক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। তাই ভাটির এই সুর্য সন্তান উনার গানের মাধ্যমে হাওরাঞ্চলের মানুষের দু:খ দুর্দশা ফুটিয়ে তুলবেন।
এ বিষয়ে কথা হয় গীতিকার ও সুরাকার বিজয় সরকারের সাথে তিনি জানান, আমি ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীত প্রেমী ছিলাম। সঙ্গীতের মধ্য দিয়েই চলেছে সারাটি জীবন। তাই গানকে ভালবাসি বলেই আমি ২০১৮ সাল থেকে নিজের লিখা গান প্রতিনিয়ত সুর দিয়ে আসছি। গানের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই আমি সরকারি চাকুরি থেকে অব্যাহতি নিয়েছি। কারন আমার উপর দেয়া অর্পিত দায়িত্ব আমি আগামীতপ সঠিক ভাবে পালন করতে পারিনি বলে এমন উদ্যোগ নিয়েছি। আর সিদ্ধান্ত নিয়েছি গানের মধ্য দিয়েই বাকী জীবনটুকু কাটিয়ে দিতে চাই।