প্রতিনিধি ৯ অক্টোবর ২০২০ , ১১:৪৪:১৭ অনলাইন সংস্করণ
মোঃ হুমায়ুন কবীর ফরীদি, জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ জগন্নাথপুরের কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এর ৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বার ইকবাল হোসেন সাজাদ এর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ সহ রাস্তার মাটি ভরাটের সরকারি টাকা আত্মসাত করেছেন এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপার জেলা প্রশাসক সুনামগঞ্জ মহোদয় বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পাশা-পাশি জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জগন্নাথপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), জগন্নাথপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ও কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ পত্রের অনুলিপি প্রদান করেছেন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী ও অভিযোগ পত্র থেকে জানাযায়, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার নাদামপুর গ্রাম নিবাসী মৃত মোঃ আব্দুল খালিক এর ছেলে উপজেলার ১নং কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এর ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার ইকবাল হোসেন সাজাদ অনিয়ম- দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে আছেন। ইউপি সদস্য হওয়ার সুবাদে তিনি এলাকার নিরীহ জনসাধারণকে নানা ভাবে নির্যাতন করে আসছেন। এমনকি গ্রামে দাঙ্গা- হাঙ্গামার সৃষ্টি করে নিরীহ লোকজন এর কাছে হতে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পায়তারায় লিপ্ত রয়েছেন। গ্রামের আইন শৃঙ্খলা অবনতির কারণে ইকবাল হোসেন সাজাদ ও তাঁহার লোকজন এর বিরুদ্ধে জগন্নাথপুর থানার এসআই মির্জা সাফায়তে,এসআই ফিরোজ মিয়া,কং/৯৯৭ শাহেল এবং কং/৮৪৮ মোঃ আরিফুর হক বাদী হয়ে নন জিআর ৩৯/২০২০(জগঃ) এবং নাদামপুর গ্রাম নিবাসী কাওছার আহমদ বাদী হয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, সুনামগঞ্জ বিবিধ মোকদ্দমা নং ২৬২/২০২০ ইং মামলা দায়ের করেন। আরো জানাযায়, উপজেলার ১ নং কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এর ৯ নং ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত নাদামপুর জামেমসজিদ সংলগ্ন পশ্চিম এর ব্রীজ হইতে শাহজাহান এর বাড়ী পর্যন্ত রাস্তার মাটি ভরাটের জন্য ২০০০০০( দুই লাখ) টাকা, মজিদপুর মেইন সড়ক হইতে ১৬ নং হিজলা নাদামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রাস্তা নির্মাণ এর জন্য ২০০০০০( দুই লাখ) টাকা, নাদামপুর হইতে ফরিদপুর পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ এর জন্য ৪০০০০০ (চার লাখ) টাকা ও হিজলা গ্রামের পাকা রাস্তা হইতে আনছার এর বাড়ী পর্যন্ত রাস্তায় মাটি ভরাটের জন্য ৫০০০০( পঞ্চাশ হাজার) টাকা, সর্ব মোট ৮৫০০০০( আট লাখ পঞ্চাশ হাজার) টাকা রাস্তা নির্মাণ ও মাটি ভরাটের জন্য ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বরাদ্দ নেন ইউপি মেম্বার ইকবাল হোসেন সাজাদ । তিনি এই বরাদ্দ নিয়ে নাম মাত্র কাজ করেই মোটা অংকের টাকা আত্মসাত করেছেন। এছাড়াও তিনি সরকারি জমি ও খাল দখল করে অবৈধ ভাবে লীজ দেওয়ার কারণে নাদামপুর, মজিদপুর ও উত্তর নাদামপুর এর জনসাধারণের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে মর্মে গতকাল ৬ ই অক্টোবর অত্র এলাকার জনসাধারণ জেলা প্রশাসক সুনামগঞ্জ মহোদয় বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পাশাপাশি লিখিত অভিযোগ এর অনুলিপি জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জগন্নাথপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), জগন্নাথপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ও কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান বরাবরে প্রদান করেছেন। জনস্বার্থে উপরোক্ত বিষয় গুলোর ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী ।
এ ব্যাপারে স্থানীয় একাধিক ব্যাক্তি তাদের অভিপ্রায় ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ইউপি সদস্য ইকবাল হোসেন সাজাদ এর নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। গ্রামে দাঙ্গা- হাঙ্গামা হরহামেশা লেগেই আছে। ইউনিয়ন পরিষদ হতে রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য টাকা বরাদ্দ পেয়েও রাস্তা গুলো নির্মাণ ও সংস্কার না হওয়া চরম ভোগান্তির মধ্যে আছি। ইকবাল হোসেন সাজাদ রাস্তা সংস্কারের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা নাম মাত্র কাজ করেই আত্মসাত করেছেন। জনস্বার্থে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগ পত্রে উল্লেখিত বিষয় গুলোর ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ইকবাল হোসেন সাজাদ বলেন, আমার জনকল্যাণ মূলক কাজে ঈর্ষান্বিত হয়ে আমাকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। গ্রামে দুটি পক্ষ রয়েছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকল্পে প্রশাসনিক মামলায় উভয় পক্ষের লোকজনই আসামী। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক বরাদ্দকৃত টাকায় রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কারের কাজ সঠিক ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন তদন্ত করে এর সত্যতা পেয়েছেন।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মেহেদী হাসান বলেন, অভিযোগ পত্রের অনুলিপি পেয়েছি। আইনানুগ ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।