প্রতিনিধি ১৮ অক্টোবর ২০২০ , ১০:৪৮:০৮ অনলাইন সংস্করণ
বিপ্লব রায়, শাল্লা: ২০১৭ সাল। তখনকার এমপি ছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। উনার তত্ত্ববধায়নে সরকার দেশের বৃহত্তম সৌর প্রকল্পের সৌর বিদ্যুৎ সরবরাহের এই স্টেশনটি প্রত্যন্ত উপজেলা শাল্লা উপজেলার শাসখাই গ্রামে উদ্বোধন করেন। কিন্তু উদ্বোধনের তিন বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত এই প্রকল্পটি গ্রাহকের কোনো কাজে আসছে না। ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই প্রকল্পটি নিমোজ্জিত হয়ে গেছে। শর্তসাপেক্ষ ছিল সৌর প্রকল্পের আওয়াতাভুক্ত কোনো এলাকায় পল্লী বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া যাবেনা। ফলে পল্লী বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন ৪ টি গ্রামের ৫শ জন গ্রাহক। বিদ্যুতের এই ভোগান্তি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে।
সৌর সোলার কর্তৃপক্ষ প্রথম চুক্তি ছিল ৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকবে। কিন্তু কথা দিয়ে কথা রাখেননি তারা। এখন প্রতিদিন ২ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকেনি বলে জানান এলাকাবাসী। মৌরাপুর গ্রামের শিশু দাস বলে, এখন দিনে ২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ দিচ্ছে। তাও আবার মাঝে মাঝে নিয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্তায় থাকলে ছেলেমেয়েদের পড়ালেখা নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় আছি। এদিকে গত বুধবার গ্রাহকরা সৌর সোলার ছেড়ে পল্লী বিদ্যুতের বিদ্যুৎ নেওয়ার জন্য সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করেছে।
তাই এই আবেদনের প্রেক্ষিতে বোঝা যাচ্ছে সরকারের দেয়া ৩০ কোটি টাকার প্রকল্পটি এখন গচ্ছা যাবে।
তবে অন্যদিকে, স্থানীয় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, ৩০ কোটি টাকার এই প্রকল্প বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সমঝে নেবার আগেই অকার্যকর হয়ে গেছে।
দিরাই শাল্লার আবাসিক প্রকৌশলী মো. হায়দার আলী বললেন, সৌর সোলার প্রকল্প থেকে গ্রাহকরা প্রথম দিকে যেভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ পেয়েছিলে, এখন সেভাবে পাচ্ছেন না। আবার ৪৪৮ জন গ্রাহকের কাছে প্রকল্প কর্তৃপক্ষের ১২ লাখ ৬০ হাজার টাকা বকেয়াও রয়েছে। পল্লী বিদ্যুতের লাইন এসব গ্রাহকদের গ্রামের কাছে আছে এটিও সঠিক। এখন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে কী করতে হবে। এই প্রকৌশলী বললেন, বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে ফেব্রুয়ারি মাসে এই প্রকল্প বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে সমঝে নেবার জন্য। আমার মতামত চাইলে আমি বলবো, এই প্রকল্প রূগ্ন, অসুস্থ। এরা এখনই বিদ্যুৎ দিতে পারছে না। অনেক কিছুই তাদের ডেমেজ হয়ে আছে ।
সৌর সোলার প্রকল্পের স্থানীয় টেকনেশিয়ান ইমন আলী’র কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা বিদ্যুৎ দিতে পারছি না একথা সত্য। যা পারছি দিচ্ছি। এ বিষয়ে জানতে হলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করতে হবে।
সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ইকরাম হাসান চৌধুরী জানালেন, প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে শুনেছি শাল্লার সৌর সোলার প্রকল্পে। সোলারের গ্রাহকদের অনেক বকেয়া পড়েছে। আবার তারা দাবি করছেন চাহিদামত বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না। আগামী ফেব্রুয়ারিতে এই প্রকল্প আমাদের সমঝে নেবার কথা। সকল বিষয়েই দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। এরপর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবেন।