ধোবাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০শয্যা বিশিষ্ট থাকলেও কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে না রোগিরা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: আব্দুল মতিন( মাসুদ) ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ লাখ,লাখ মানুষের চিকিৎসার জন্য এক উপজেলা সরকারি হাসপাতালটি একমাত্র ভরসা ৫০ শয্যার এ হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে চলছে ডাঃ ও নার্সের সঙ্কট। ফলে অপেক্ষা করতে হয় দিনে পর দিন, ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে, দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের। হাসপাতালটিতে এক্সরে, ইসিজি ও আল্ট্রাসোনোগ্রাম মেশিন সহ সব কয়টি মেশিন বিকল। জনবল সংকট ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বিকল হয়ে পড়ায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কার্যক্রম। ফলে কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। রোগ নির্ণয়ের জন্য কোন পরীক্ষা নিরিক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য প্রাইভেট ক্লিনিক গোলোতে যেতে বাধ্য হচ্ছেন রোগীরা। হাসপাতালে ভর্তি হলে কোন ঔষধও পাওয়া যায়না।স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্সে বেহাল দশা! কাগজে কলমে কর্মরত চিকিৎসকগন থাকলেও হাসপাতালে উপস্থিত নেই।স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের চিকিৎসা করার দায়িত্বে কাগজে কলমে, পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তাসহ ১১ জন মেডিকেল অফিসার থাকলেও,প্রতিদিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপস্থিত থাকে ২ থেকে ৩জন। ৮জন চিকিৎসক’ই থাকেন অনুপস্থিত। এতে চরম বিপাকে পড়ছেন, দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা। ব্যহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশে সমালোচনার ঝড় বইলেও টনক নড়েনি ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের । দায়ীত্বরত ২ থেকে ৩ জন চিকিৎসকের উপস্থিতিতে মহামারী করোনায় সামাজিক দুরত্ব ছাড়াই চিকিৎসকের কক্ষের সামনে ভীড় করে চিকিৎসা নিচ্ছেন, সাধারণ মানুষ। অনেকেই চিকিৎসক না পেয়ে চাপা ক্ষোভ নিয়ে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, বা প্রাইভেট ক্লিনিকে, এছাড়াও বারবার অবমাননা করা হচ্ছে জাতীয় পতাকা।পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার দায়ীত্ব অবহেলার কারণে টানানো হচ্ছে না জাতীয় পতাকা। ত্রিশ লক্ষ শহিদে রক্তের বিনীময়ে অর্জিত এই লাল সবুজের জাতীয় পতাকা পেলে রাখা হয় ময়লা আবর্জনায়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় জরুরী বিভাগে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চলছে রোগীদের সার্জারী। আউটডোরে চিকিৎসকের কক্ষও রয়েছে তালাবদ্ধ। হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডে ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত চাদ ও বালিশে শুয়ে আছেন বেশীরভাগ রোগী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালে ডেলিবারী করা এক রোগী অভিযোগ করে বলেন, লেবার ওয়ার্ডে ডেলিভারী করতে আসা রোগীদের কাছ থেকে ডাক্তার গণ নিচ্ছেন হাতিয়ে নিচ্ছেন, মোটা অংকের টাকা দাবীকৃত টাকা না দিলে চিকিৎসায় অবহেলা করাও অভিযোগ উঠেছে । এনিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত এক কর্মচারী জানান, সপ্তাহে ২-৩ দিন হাসপাতালে আসেন পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু হাসান শাহীন। এছাড়াও কর্মরত মেডিকেল অফিসার ডাঃ কনক দে, ডাঃ মিজানুর রহমান, ডাঃ আতাউর রহমান খান সবুজসহ ডাঃ মাহবুবা আজমেরী জেরিন, মাঝে মধ্যে সপ্তাহে দু-একবার আসেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এসে হাজিরা খাতায় একদিনে সব স্বাক্ষর দিয়েই চলে যায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬টি ইউনিয়নে দায়ীত্বে থাকা ৬ জন মেডিকেল অফিসার মাসে একবারও যান না ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলোতে। স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতেও পাচ্ছে না সরকারি স্বাস্থ্য সেবা। চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দরিদ্র অসহায় মানুষ গোলো, কর্মরত চিকিৎসকদের অনুপস্থিতির বিষয়টি জানতে পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা আবু হাসান শাহীন এর অফিস কক্ষে গিয়ে দেখা যায় অফিসে নেই। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,মাঠে কাজ করার জন্য অফিস থেকে বের হয়েছেন। সত্যতা যাচাই করতে তার ব্যক্তিগত গাড়ীর ড্রাইবারকে কল দেওয়া হলে ড্রাইবার জানায়, ময়মনসিংহে নিজ বাসায় যাচ্ছেন তিনি, এ ঘটনায় সিভিল সার্জন ডা. মশিউল আলম এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে ব্যস্ততা দেখিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান। এ নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ডেভিড রানা চিসিম বলেন, জাতীয় পতাকার অবমানার বিষয়টি আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছি! তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।