প্রতিনিধি ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ৫:৩৭:২৯ অনলাইন সংস্করণ
মাহমুদ আহসান হাবিব ঠাকুরগাঁও॥ বৈশি^ক মহামারি করোনার মাঝেই করলা চাষে ঝুঁকেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের চাষিরা। অল্প সময়ে কম পুঁজিতে বেশি লাভ হয় বলেই তারা এতে আগ্রহী হয়েছেন। চলতি মৌসুমে জেলায় এবার গতবারের তুলনায় করলার ফলনও হয়েছে দ্বিগুণ। পাশাপাশি এবার চাষিরা দামও পেয়েছেন ভালো ।
চাষিদের কাছ থেকে সংগৃহিত করলা এ অঞ্চলের সবজির স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম বরিশালসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সদর উপজেলার রাজাগাঁও, আসান নগর, চাপাতি, রাজারামপুর খড়িবাড়ী, দক্ষিন বঠিনা, উত্তর বঠিনা, ঝলঝলি, ফরিদপুর, বড়দেশ্বরী, ধর্মপুর, বোয়ালিয়া চোপড়াপাড়া সহ রুহিয়ার বিভিন্ন এলাকার প্রায় ২শ চাষি চাষ করেছেন করলা । সাধারণত বছরে এক জমিতেই দুবার করলা চাষ করা যায় বলে জানান চাষিরা ।
সদর উপজেলার পাইকারি সবজি ব্যবসায়ী হামিদুর রহমান, মসলেম মিঞা সহ অন্য সবজি ব্যবসায়ীরা জানান, জেলার বাসিন্দাদের চাহিদা মেটাতে কয়েক বছর আগেও অন্য জেলা থেকে করলা আনতে হতো। কয়েক বছর ধরে এ জেলার উৎপাদিত করলাই বিক্রি হচ্ছে বাজারে। আগে প্রতি কেজি করলা ৭০ থেকে ৮০ কিংবা ১শ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। পাইকারি বাজারে প্রতি মণ করলা বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার টাকায়। শহরের পুরাতন বাসস্টান্ড বাজার, রোড বাজার ও কালীবাড়ি বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হচ্ছে এসব করলা।
ঠাকুরগাঁও কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, আগস্ট থেকে অক্টোবর ও অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসে জমিতে দুবার করলা চাষ করা যায়। সাধারণত রোপণের ৪০ থেকে ৫০ দিনের মধ্যে ফলন পাওয়া যায়। মাত্র দেড় মাসে ফলন পাওয়া যায় বষষলে এই ফসলের জনপ্রিয়তা বাড়ছে চাষিদের মধ্যে। তাই এ জেলায় করলা চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
ঠাকুরগাঁওয়ের বড়দেশ্বরী গ্রামের বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক প্রাপ্ত ও বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনকারী নিরাপদ কৃষি খামারের করলা বাজারজাত শুরু হয়েছে। পদক প্রাপ্ত মেহেদী হাসান উল্লাহ জানান, চার পাঁচ বছর ধরে করলা চাষ করে লাভবান হচ্ছি। আমার দেখাদেখি গ্রামের অন্য চাষিরাও করলা চাষে ঝুঁকছেন।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আফতাব হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে সদর উপজেলায় ২৩০ হেক্টর জমিতে করলা চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ফলন হয়েছে প্রায় ১৭০০০ কেজি। এবার ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় আগামীতে এর চাষ আরো বাড়বে বলে আশা করছি। এর ফলন আরো ভালো করার লক্ষ্যে কৃষি কর্মকর্তারা চাষিদের প্রয়োজনীয় সহায়তাসহ পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।