• ফিচার

    একান্ত সাক্ষাৎকারে বসির উদ্দিন তালুকদার: বঙ্গবন্ধু ও বাউল কামাল পাশা ভাটি অঞ্চলে এ দুটি নাম খুব জনপ্রিয় ছিল

      প্রতিনিধি ২৭ আগস্ট ২০২০ , ১১:৩৫:০৫ অনলাইন সংস্করণ

    আল-হেলাল: “জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও গানের সম্রাট বাউল কামাল পাশা (কামাল উদ্দিন) এ দুটি নাম ভাটি অঞ্চলে একসময় খুব জনপ্রিয় ছিল। একজন ছিলেন জাতির অবিসংবাদিত নেতা অনলবর্ষী বক্তা,স্বাধীনতা স্বায়ত্বশাসন গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মূল কারিগর ও বাংলার চিরসম্রাট আর অন্যজন ছিলেন মানুষের মুক্তির কথা নিয়ে গান রচনা ও পরিবেশনের মাধ্যমে ভাটি অঞ্চলের মানুষকে মুক্তির মহামন্ত্রে উজ্জীবিত করতে নিরলস সাধনার পথে নিজেকে উৎসর্গ করা একজন মহান সাধক। আমি তাদেরকে একমঞ্চে দেখেছি। তাদের সাথে সামান্য হলেও আমার জীবনের কিছুটা স্মৃতি আছে। ১৯৭০ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ নির্বাচন (এমএনএ) ও প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচন (এমপিএ) উপলক্ষে সপ্তাহব্যপী গণ সংযোগে ভাটি অঞ্চলে আসেন তৎকালীন পাকিস্তান আওয়ামীলীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শাল্লা থেকে ধর্মপাশা পর্যন্ত তৎকালীন যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম লঞ্চযোগে ভাটি অঞ্চল সফর করেন বঙ্গবন্ধু। এই সময় ভাটি অঞ্চলের রাজনীতি ব্যবসা বাণিজ্য সবকিছুই ছিল নদীর পাড়ে গড়ে উঠা হাটবাজার কেন্দ্রিক। যেখানে লোক সমাঘম থাকতো প্রচুর। প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পথসভা ও জনসভা করেন বঙ্গবন্ধু। এর মধ্যে দিরাই বাজারে স্মরণকালের সবচেয়ে বৃহত্তম জনসভাটি হয়। বর্ষা মৌসুমে হাজার হাজার ছোট বড় নৌকায় দিরাই শাল্লা জামালগঞ্জ থেকে প্রায় অর্ধ লক্ষ মানুষের সমাঘম ঘটেছিল সেই ঐতিহাসিক সভায়। তৎকালীন এমএনএ প্রার্থী আব্দুস সামাদ আজাদ ও এমপিএ প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী অক্ষয় কুমার দাশের সমর্থনে নৌকা প্রতীকের পক্ষে ঐ জনসভাটি অনুষ্ঠিত হয়। ঐ জনসভায় বঙ্গবন্ধুর লঞ্চ বহরের সাথে মাইক বাধা ছিল। কিন্তু দিরাই বাজারের জনসভায় আমার মালিকানাধীন “মডেল মাইক” নামের প্রতিষ্ঠানের মাইক ছিল। আমি নিজে মঞ্চে থেকে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে মাইক পরিচালনা করি। ২য় বার ১৯৭৩ সালে যখন বঙ্গবন্ধু দিরাই আসেন তখন তিনি শুধু জাতির জনক বঙ্গবন্ধুই নন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবেই রাষ্ট্রীয় ও সরকারী সফরের অংশ হিসেবে দিরাই উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আওয়ামীলীগের নির্বাচনী জনসভায় আসেন এবং প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। সকাল ১১টায় যথারীতি জনসভা শুরু হয়। জনসভা উপলক্ষে মাইক আনা হয় সুনামগঞ্জ মহকুমা শহর থেকে। সম্ভবত তৎকলীন এসডিও ও তথ্য অফিসের ব্যবস্থাপনায় মাইক আনা হয়েছিল। কিন্তু মহকুমা সদর থেকে মাইক আনা হলেও জনসভার মাইক পরিচালনার জন্য দিরাই থানা আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ ও সরকারী কর্মকর্তাদের নির্দেশে মাইকের অপারেটিং এর জন্য আমাকে মঞ্চে রাখা হয়। তাই দুইবারই আমি জাতির জনককে অত্যন্ত কাছে থেকে দেখার এবং তার বক্তব্য শুনার সুযোগ পেয়েছি। দিরাই থানায় দুবারের সফরেই বঙ্গবন্ধুর জনসভার অন্যতম আকর্ষণ ছিল ভাটি অঞ্চলের বাউল গান। বিশেষ করে নৌকা,আওয়ামীলীগ,বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে জনসভাগুলোতে গান পরিবেশন করেছিলেন গানের সম্রাট বাউল কামাল পাশা ও বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম। শুধু তারা দুজনেই নন বাউল কামাল পাশার শিষ্যদের মধ্যে জামালগঞ্জের আব্দুল মান্নান,দক্ষিণ সুনামগঞ্জের মজনু পাশা,রন্নারচরের আব্দুর রব এবং শাহ আব্দুল করিমের শিষ্য আয়লাবাজের তকবুল মিয়াসহ নাম না জানা আরো অনেক বাউল শিল্পী জনসভার শুরুতে গান গেয়েছিলেন। ১৯৭৩ সালে তাদের পাশাপাশি মুজিব বাইয়া যাওরে নির্যাতিত দেশের মধ্যে জনগনের নাও মুজিব বাইয়া যাওরে বাউল কামাল পাশা রচিত এই গানটি পরিবেশন করেছিলেন দিরাই উপজেলার জগদল গ্রামের আরেক বিখ্যাত লোককবি বাউল শফিকুন নূর। গত ২রা আগস্ট রোববার রাত ১০টায় সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলা সদরের রাধানগর গ্রামস্থিত নিজ বাসভবনে একান্ত সাক্ষাৎকারে একথাগুলো বলেছেন,বিশিষ্ট সংস্কৃতানুরাগী,ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার রাধানগর নিবাসী অধুনালুপ্ত মডেল মাইক হাউজের স্বত্তাধিকারী আলহাজ্ব বসির উদ্দিন তালুকদার। এসময় জনাব বসির উদ্দিন তালুকদারের জেষ্টপুত্র সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা হাফিজুর রহমান তালুকদার ও পাথারিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বিপ্লব মিয়া উপস্থিত ছিলেন। বাউল কামাল পাশাকে তার জীবনের শেষ সায়াহ্নে বার্ধক্য অবস্থায় অত্যন্ত কাছে থেকে দেখেছেন উল্লেখ করে আলহাজ্ব বসির উদ্দিন তালুকদার বলেন,আমি যৌবনকালের প্রথমে দিরাই থানার উজান ধল গ্রামে দর্শক শ্রোতা হিসেবে কামাল পাশাকে প্রথম একটি পালাগানের আসরে দেখতে পাই। তিনি সুশিক্ষিত উচুমানের সংগীত সাধক ছিলেন। যুক্তিতর্কে তাকে কেউ হারাতে পারতোনা। আরেকবার দিরাই বাজারে একটি বাউল গানের আসরে দেখি তাকে। সর্বশেষ সিলেট থেকে বাসে চড়ে জয়কলস আসার পথে জাউয়াবাজারে একটি আসরে গান গাইতে দেখি তাকে। তিনি ছাতকের গোবিন্দগঞ্জে সাধক রশিদ উদ্দিন,উকিল মুন্সী,উকিল মুনশীর পুত্র সাত্তারের সাথে পালাগান গেয়েছেন বলে লেটার প্রেসে ছাপা পোষ্টারে তাঁর নাম পড়েছি। শেষ সময়ে যখন তিনি দিরাই বাজারে আসা যাওয়া করতেন তখন আমার দোকানে প্রায়ই আসতেন। আমাকে একনজর না দেখে যেতেননা। বাউল কামাল পাশার ১০টি গান কিভাবে কোন পরিস্থিতিতে রেকর্ডিং করলেন জানতে চাইলে বশির উদ্দিন তালুকদার বলেন,আমি নিজে এগুলো রেকর্ডিং করিনি। আমাকে এই মহৎ কাজে সহযোগীতা করতেন দিরাই থানার কুলঞ্জ ইউনিয়নের তারাপাশা গ্রামের সৈয়দ ইউসুফ আলী। তিনি তার ব্যক্তি মালিকানাধীন টেপ রেকর্ডারে গানগুলো রেকর্ডিং করে আমাকে এনে দেন। আমি এগুলো এডিটিংসহ কপি করে বাজারজাত করি। তারাপাশা গ্রামের সৈয়দ ইউসুফ আলী বলেন,সম্ভবত ১৯৭৮ সাল বা এর আগে হতে পারে। আমাদের তারাপাশা গ্রামের তৈয়ব উল্লাহ লন্ডনী সাহেব এর সাথে বাউল কামাল পাশা সাহেবের সমধুর সম্পর্ক ছিল। তিনি প্রায়ই কামাল উদ্দিন সাহেবকে তার বাড়ীতে নিয়ে আসতেন। তার বাড়ীতে অনেকবার গানের আসর হয়েছে। সেখানে কামাল সাহেব গান গাইতেন। এসময় আমি আমার নিজ উদ্যোগে কামালগীতির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে গানগুলো রেকর্ডিং করি। এবং আমার রেকর্ডিং এর মাস্টার ভয়েজ কপিটি আমি বশির উদ্দিন তালুকদার সাহেবকে এনে দেই যাতে তিনি এগুলো কপি করে বাজারজাত করেন।
    টেপ টেলিভিশন ও পুরাতন রেকর্ডিং এর স্থলে ডিজিটাল পদ্ধতিতে নতুনমাত্রায় রেকর্ডিং সিস্টেম প্রবর্তন হওয়ায় ২০১৩ সালে তার মডেল মাইক হাউজ নামের প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেন আলহাজ্ব বসির উদ্দিন তালুকদার। ব্যবসা গুটিয়ে নিলেও থেকে যায় তার হৃদয়ের মনিকোটায় অনেক পুরনো স্মৃতি। ১৯৯০ সালে তার প্রতিষ্ঠানে পাওয়া যায় গানের সম্রাট বাউল কামাল পাশার একটি অডিও ক্যাসেট। ঐ ক্যাসেটে রয়েছে ১০টি গান। গানগুলো হচ্ছে “আমারে তরাইওগো অকূলে কেউ নাই আমার,একে আমার ভাঙ্গা তরী আরো জানিনা সাঁতার”,“ভাঙ্গা তরী উঠে ভারী তরী কেমন করিয়া অকূল সাগর ঢেউ ভয়ংকর ভয়েতে কাপে হিয়া”,“মুছমুছিয়া বিড়ালে কয় কুনি ব্যাঙ্গে দুধ খাইছে টেমটুম লইয়া বাছাবাছি হিজল আর বরুন গাছে” “আল্লাহ ডাকিহে তোমারে বারেবার/তুমি করুণার সিন্ধু দয়া করো বিন্দু/জানাই মুনাজাত আমি গুনাহগার”,“আমারে জ্বালাইয়া মারে শাশুড়ি ননদীরা তুমি কেন থাকো দুরা দুরা কঠিন বন্ধুরে”,“যৌবনরে ঠেকছি তরে লইয়া আমি অভাগিনীরে যৌবন আমি অভাগিনী/আর কটা দিন থাকো যৌবন দেখি আমার প্রাণবন্ধু আসেনিরে যৌবন”,“কবরেতে শুয়াইবে গহীনও জঙ্গলেগো বুঝিবে মরিলে ভাবনা তোমার নাইগো চিন্তা তোমার নাইগো বুঝিবে মরিলে”,“রহমতের নদীয়া তুমি পাপীর কর্ণদার উদ্ধারিয়া লও আমারে জানিনা সাঁতার”,“রাত পোহালে বউয়ে বলে করো গিয়া কামাই সোনা মাইগো মাই বিয়া করাইয়া মোরে বানাইলায় জামাই”,“সখীনার কান্দনে কান্দে আরশ কুরছি ভুমি বিধি কলমে নাই কি কালি”। শুধু মডেল মাইক হাউজের রেকর্ডিং সেন্টারের এই ১০টি গানই নয় কবি কামাল উদ্দিন স্মরণে বাউল নিউ শফিকুন নূর এর কন্ঠে সিলেটের বিশিষ্ট অডিও রেকর্ডিং ব্যবসায়ী জনাব গিয়াস উদ্দিন আহমদ এর শাহজালাল রেকর্ডিং সেন্টারের “পিরীতে আমারে চাইলোনা” শিরোনামের আরেকটি অডিও এ্যালবামও পাওয়া যায় তার দোকানে। ঐ এ্যালবামে বাউল কামাল পাশার ৭টি গান পাওয়া যায়। গানগুলো হচ্ছে, (১)“বাজনার ভেতরে আছে এবাদত আর বন্দেগী,গানের বিচার করে মানুষ হইয়া যায় সংসারত্যাগী” (২)“হীরামন মানিকের দেশে আমার মুর্শিদ আছে,সাত সমুদ্র তেরো নদী কেমনে যাই তার কাছে”, (৩) “মুর্শিদ তোমায় আদর করে রাখবো আমার দিল পিঞ্জিরায়” (৪)“মনপাখি থাকিতে চায়না আমার মাটির পিঞ্জিরায়,কোনদিন পাখি দিবে লুকি গিয়া নিবিড় জঙ্গলায়” (৫) “নগরে বাজারেরে বন্ধু বন্ধু তোমায় পাইলামনা খুজিয়া,মেহরাজে গেলেন নবী বোরাকও চড়িয়া বেদবাতিনি শিখাইলেন আদরও করিয়ারে বন্ধু”, (৬) “পিরীতে আমারে চাইলোনা সবার পিরীত হইলো সোহাগ আমার কেন লাঞ্চনা” (৭) “তিমির রাত্রি কেগো যাত্রি মদীনার পথে হয় করোনা নিয়ে যাওনা আমারে সাথে”। আলহাজ্ব বসির উদ্দিন তালুকদারের সকল বক্তব্যকে সমর্থন করে তার জেষ্টপুত্র দিরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা হাফিজুর রহমান তালুকদার বলেন,বাউল কামাল পাশার সকল গানগুলো সংগ্রহ প্রচার ও প্রসার করতে পারলে ময়মনসিংহ গীতিকার মতো ভাটি অঞ্চলের কয়েকটি বড় গীতিকা প্রণয়নের কাজ তরান্বিত হবে। বাউল কামাল পাশাকে ব্যক্তিগতভাবে নয় রাষ্ট্রীয় ও সরকারী পৃষ্টপোষকতায় মূল্যায়ন করা দরকার। দিলকী দয়া হয়না,প্রেমের মরা জলে ডুবেনা,আমার কাঙ্কের কলসী জলে গিয়াছে ভাসি,চাইনা দুনিয়ার জমিদারী,সাজিয়ে গুজিয়ে দে,মুজিব বাইয়া যাওরে ইত্যাদি জনপ্রিয় গানের মূল গীতিকার যে তিনি তা বর্তমান প্রজন্মকে জানাতে হবে। কলকাতার পবন দাস,ভাটিয়ালি গানের বিখ্যাত শিল্পী আব্দুল আলীম,নির্মলেন্দু চৌধুরী,আব্বাস উদ্দিনসহ দেশের নামকরা শিল্পীরা বাউল কামাল পাশার গান গেয়েছেন। মানুষ শুধু কন্ঠশিল্পীকে চেনে জানে কিন্তু এই শিল্পের অর্জিনেল ফাউন্ডার বাউল কামাল পাশাকে জানানোর দায়িত্ব সকল সাহিত্যপ্রেমীদেরকেই নিতে হবে। তিনি বলেন একটি বা দুটি নয় স্বরচিত প্রায় অর্ধশত গানে বাউল কামাল পাশা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু,বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ,নৌকা প্রতীক ও মুক্তিযুদ্ধকে তুলে ধরেছেন তার গানে। এই গানগুলোর প্রচার প্রসারেও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়,টেলিভিশন ও শিল্পকলা একাডেমীকে এগিয়ে আসতে হবে। ভাষা আন্দোলন,৬ দফা আন্দোলন,গণ অভ্যত্থান ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এতগান আর কোন বাউল শিল্পী লিখেছেন বলে আমার জানা নেই। আমি যতদুর জানি, ১ (মাতৃভাষার গান) “ঢাকার বুকে গুলি কেন ? নুরুল আমিন জবাব চাই ২ (যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের গান) মুসলিম লীগের ভাঙ্গা লেন্টন দে নিভাইয়া দে ৩ (দেশাত্ত¡বোধক) নৌকা বাইয়া যাওরে বাংলার জনগন যুক্তফ্রন্টের সোনার নাও ভাসাইলাম এখন ৪ (দেশাত্ত¡বোধক) সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা সোনার বাংলা আমার পরিল দুর্দিনে সয়না প্রাণে \ ৫ (দেশাত্ত¡বোধক) অগ্নিকুন্ড নর হত্যা চালাইলো পাঞ্জাবী এসে/স্বাধীন বাংলা দেশে আমার সোনার ৬ (দেশাত্ত¡বোধক) বাঙ্গালীর স্বাধীনতা যেমন ভাই নিশার স্বপন স্বপ্নের মতোন ৭ (দেশাত্ববোধক) নৌকা আগে আগে চলেরে সেই নৌকাটা শেখ মুজিবের ৮ (দেশাত্ত¡বোধক) নৌকা বাইয়া যাওরে বাংলার জনগণ বঙ্গবন্ধুর সোনার নাও ভাসাইলাম এখন\ ৯ (শহীদ আসাদ স্মরণে গান) আমার পূর্ব পাকিস্তান,হইতেছে স্মশান/আর কতকাল থাকবে ঘরে বসেরে ১০ (আঞ্চলিক) ও পচা জারমুনি ৬ দফার বাতাসে তুমি ঠিকবায়নি/ধান খাইলে পাট খাইলে হইয়া তুই ১১ (আঞ্চলিক) হাজার হাজার নেতার জন্ম বাংলাদেশের ঘরে ঘরে/ভাবলে মাথা ঘুরেরে মন ভাবলে মাথা ১২ (আঞ্চলিক) আওয়ামীলীগ নাম নিয়া ছয় দফা এগিয়া/জাগো জাগো বাঙ্গালী ভাই মুজিব বাতায়া।। ১৩ (আঞ্চলিক) মুজিব বাইয়া যাওরে তোমার ছয় দফারী নাও/নিপীড়িত দেশের মধ্যে জনগনের নাও ১৪ (আঞ্চলিক) মুজিব বাইয়া যাওরে/ নির্যাতিত দেশের মধ্যে জনগনের নাও মুজিব বাইয়া যাওরে।। ১৫ (দেশাত্ত¡বোধক) তোমরা অস্ত্র ধররে ওরে আমার বীর বাঙ্গালী ভাই/পাঞ্জাবী আসিলো দেশে বাঁচার ১৬ (পল্লীগীতি) পূর্বে ছিল এই বাংলা আইয়্যুবের অধীন/বঙ্গবন্ধু আনিয়াছেন বাঙ্গালীর স্বাধীন ১৭ (দেশাত্ত¡বোধক) বাংলা মায়ের শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধু নামরে/বাংলা মায়ের শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধু নাম\ ১৮ (দেশাত্ববোধক) হায়রে আমার ভাষা আন্দোলন/সালাম জব্বার রফিক ভাইয়ের হইলো মরণরে ১৯ (দেশাত্ববোধক) আমি ভেবেছিলাম কোনদিন দেশটা হবে স্বাধীন/চিরশান্তি ভোগ করিবো বসিয়া ঘরে। ২০ (১৫ আগস্ট এর শহীদদের স্মরণে) বন্ধু সদায় জলে গাও/প্রেমাগুনে পুড়া অঙ্গ কেনবা জ্বালাও/ ১ (পদাবলী সুর) বলে বাংলার সব জনতা,বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা/বাংলায় আর কি জন্ম নেবেরে এমনও আদর্শ নেতা।। ২২ (সুনামগঞ্জে জাতির জনকের সংবর্ধনা মঞ্চে) ধন্যবাদ হে জাতির পিতা বাঙ্গালীর নয়নমনি,ধন্য নজরুল-তাজ উদ্দিন,সামাদ কর্ণেল ওসমানী।। ২৩ (জাতির জনকের শানে) ধন্য নেতা শেখ মুজিবুর বাঙ্গালীর নয়নমনি,ধন্য নেতা সামাদ আজাদ আরো কর্ণেল ওসমানী।। ২৪ (নৌকা প্রতীকের সমর্থনে ভোটের গান) নৌকা চিহ্নে ভোট করিও দান হিন্দু মুসলমান/আদমকে গন্দম খাওয়াইতে ভাবে বুঝি আসিতেছে,দূরে নয় নিকটে শয়তান।। ২৫ (স্বাধীনতার গান) শোন দেশের জনগন লাগলো মজার নির্বাচন,মাছে মাছে করে কীর্ত্তন স্বাধীনের আশায়” ইত্যাদি গানের এক একটি বাক্যে শব্দে ও ছন্দে তিনি বঙ্গবন্ধুকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। ১৯৭০,১৯৭৩ সালে সুনামগঞ্জ ও দিরাই উপজেলায় জাতির জনকের সভামঞ্চে তিনি ও তার শিষ্যরা এসব গান পরিবেশন করেছেন। মাছের দ্বারা রচিত “দেশে আইলো নতুন পানি ঘুচে গেল পেরেশানী মাছের বাড়লো আমদানী”গানটির মাধ্যমে পাকিস্তান সরকারের দু:শাসনের চিত্রকে রোমান্টিক অর্থে মাৎস্যনায় এর মতো ফুটিয়ে তুলেছেন। ফরিদপুর ঢাকায় বিভিন্ন পালাগানের প্রোগ্রামে আসা যাওয়ার পথে তিনি বঙ্গবন্ধু ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলহাজ্ব আব্দুস সামাদ আজাদের সাথে দেখা করতেন। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে দিরাই শাল্লা ও জগন্নাথপুর আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আব্দুস সামাদ আজাদের বিজয়ে তাঁর কন্ঠসাধনা মাইলফলক হিসেবে কাজ করেছে। দিরাই-শাল্লা আসনের ৭ বারের নির্বাচিত এমপি সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত ১৯৭৯ সালে ঢাকার পিজি হাসপাতালে নিজের গাড়ীতে করে নিয়ে ভর্তি করে চিকিৎসাসেবা দিয়ে বাউল কামাল পাশাকে সুস্থ করে তুলেছিলেন। অন্ততপক্ষে এসব বিষয়ের প্রতি গুরুত্বারোপ করে হলেও বাউল কামাল পাশাকে মরণোত্তর স্বীকৃতি প্রদানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আন্তরিক হবেন বলে আমি আশাবাদ ব্যক্ত করছি। উল্লেখ্য ১৯২৯ ইং সনের ১৪ মার্চ দিরাই থানার রাধানগর গ্রামে জন্মগ্রহন করেন আলহাজ্ব বশির উদ্দিন তালুকদার। তার পিতার নাম হাজী ছালিম উদ্দিন তালুকদার মাতার নাম খতিজা বানু। ৪ পুত্র ও ১ কন্যার জনক তিনি। তার জেষ্ট পুত্র হাফিজুর রহমান তালুকদার দিরাই উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর পূর্বে দিরাই উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় অর্জন করেন খ্যাতি ও সুনাম।

    আরও খবর

    Sponsered content