প্রতিনিধি ২২ জুলাই ২০২০ , ৭:১৫:২৮ অনলাইন সংস্করণ
বিপ্লব রায়, জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক।। ২০১১ সালে শুরু হয় দিরাই শাল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজ। শুরু থেকেই আশ্বাস আর প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ ছিল শাল্লাবাসী। মনে হয়েছে স্বপ্ন পুরনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছা হয়েছে।
তখনকার সাংসদ ছিলেন প্রয়াত জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। উনি থাকাকালীন অবস্থায়ও রাস্তার কাজের শুরু থেকেই বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগও উঠেছে। তাই বিভিন্ন আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারনেই মাঝ মধ্যে এসে থমকে যায় দিরাই শাল্লা সড়কের কাজ। ভেঙ্গে যায় উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষের স্বপ্ন।
এরপর থেকেই রাস্তাটি বেহালদশায় পরিণত হয়। কিন্তু বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মৃত্যুর পর দিরাই শাল্লার সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হন উনার সহধর্মীনি ড. জয়া সেনগুপ্তা। সাংসদ হিসেবে শপথ গ্রহনের পর থেকেই উনার উদ্দেশ্য ছিল স্বামীর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার। এমনকি সংসদ অধিবেশনেও দিরাই শাল্লা সড়ক নিয়ে কথা বলেছেন ড. জয়া সেনগুপ্তা।
কিন্তু এর ফলশ্রুতি এখনো কিছু পায়নি শাল্লাবাসী। যেটুকু সড়কের কাজ হয়েছিল তাও এখন বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ১১ বছর আগে দিরাই শাল্লা সড়কের যে কাজ হয়েছিল তা ৩ দিনের বন্যায় ভেঙ্গে গিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ। সড়ক ও জনপথ বিভাগের অবহেলার কারনেই এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এমনকি সরকারের কোটি কোটি টাকার কাজ বন্যার পানিতে ভেঁসে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন এলাকার সাধারন জনগন।
সরজমিনে দেখা গেছে শাল্লা ব্রীজের পর থেকেই সুখলাইন যাওয়ার পথে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। সুখলাই থেকে নওয়াগাঁ গিরিধর উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্তও সড়কের একই অবস্থা। আবার মাঁদারিয়া থেকে আনন্দপুর পর্যন্ত মুল সড়ক ভেঙ্গে গিয়ে ১১ বছরের আগের মত পরিনত হয়েছে।
এলাকাবাসীর ধারনা এই বর্ষার মধ্যেই দিরাই শাল্লা সড়ক ভেঙ্গ গিয়ে ১১ বছরের আগের মত পরিনত হবে। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও দিরাই শাল্লা সাংসদ ড. জয়া সেনগুপ্তার দৃষ্টিগোচর কামনা করছেন শাল্লাবাসী।
তবে শাল্লার ইউএনও আল মোক্তাদির হোসেন যোগদান করার পর উপজেলা চেয়ারম্যান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ও ৪টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের নিয়ে কানেকটিং শাল্লার মাধ্যমে সড়কের রুপ পাল্টিয়ে দিলেও ৩ দিনের ভয়াবহ বন্যায় অচেনারুপে পরিনত করেছে। সেই সময়ে সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের কিছুটা সহযোগীতা পেলে আজ দিরাই শাল্লা সড়কে এমন ভয়াবহতা সৃষ্টি হত না।
স্থানীয়রা বলছেন দিরাই শাল্লা সড়কের এমন পরিস্থিতির জন্য দায়ী সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
এই বিষয়ে সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও উনার বক্তব্য দেয়া সম্ভব হয়নি। কারন উনি ফোন রিসিভ করেননি।
বুধবার (২২ জুলাই) বিকেল ৫টায় দিরাই শাল্লা সড়কের ভাঙ্গনগুলো পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল মোক্তাদির হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন মৎস্য কর্মকর্তা মামুনুর রহমান।
উপজেলা চেয়ারম্যান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ( আল আমিন) জানান, দিরাই শাল্লা সড়কে যে ভাবে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে তাতে মনে হয়েছে ১১ বছরের আগের মত পুনরায় পরিনত হবে। তাই ভাঙ্গনের এই কবল থেকে উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়নে জরুরী ভাবে কার্যকরী ভুমিকা গ্রহনের জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের সহযোগীতা কামনা করেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মোক্তাদির হোসেন জানান, দিরাই শাল্লা সড়কের ভাঙ্গনের বিষয় নিয়ে আমি ডিসি স্যারের সাথে আলাপ করেছি। এমনকি ভাঙ্গনের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগকে চিঠি পাঠানো হবে।