• ত্রাণ বিতরণ

    জগন্নাথপুরে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি, দেড় শতাধিক পরিবার আশ্রয় কেন্দ্রে

      প্রতিনিধি ২৪ জুলাই ২০২০ , ৩:৪১:৫৫ অনলাইন সংস্করণ

    মোঃ হুমায়ূন কবীর ফরীদি, জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ জগন্নাথপুরে বন্যা পরিস্থিতি চরম অবনতি হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় দফা বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই তৃতীয় দফা বন্যায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। ভেঙে যাচ্ছে কাঁচা ঘর-বাড়ী ও রাস্তা -ঘাট। ফের বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ। ইতিমধ্যে নতুন ভাবে বন্যা কবলিত হয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে শতাধিক পরিবার।

    আজ ২৪ শে জুলাই সরেজমিনে ঘুরে খোঁজ নিয়ে জানাযায়, অতি বৃষ্টি আর উজান থেকে ধেয়ে আসা পাহাড়ী ঢলে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কুশিয়ারা, ডাউকা, নলজুর, রত্না নদী সহ বিভিন্ন নদ-নদী ও হাওরে বন্যার পানি বৃদ্ধি পেয়ে গত ২৪ শে জুন প্রথম দফা ও ১১ ই জুলাই দ্বিতীয় দফা বন্যায় জগন্নাথপুর পৌর সভা এলাকা সহ ৮ টি ইউনিয়ন এর প্রায় ৬৫ টি গ্রামের মানুষ বন্যার জলে পানি বন্দী হয়ে পড়ার পাশাপাশি ২৫/৩০ হাজার পরিবারের বাড়ী -ঘর, রাস্তা -ঘাট পানির নীচে তলিয়ে যায়। অনেকেই আত্মীয় -স্বজন সহ আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করেন। এই দুই বন্যার পানি কমতে থাকায় পানির নীচে তলিয়ে যাওয়া কাঁচা ঘর-বাড়ী ভাঙতে শুরু করে। পানি বন্দী মানুষ শিকার হয়ে পড়েছেন আরেক ভোগান্তির। পাগলা – জগন্নাথপুর – আউশকান্দী আঞ্চলিক মহাসড়কের নির্মাণাধীন ব্রীজের পাশ্ববর্তী বিকল্প রাস্তা পানির নীচে তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বানের জলে ভেসে যাওয়ায় সরাসরি যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে এবং গ্রমীন রাস্তা গুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এই দুই বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও গত ১৯ শে জুলাই থেকে ফের থেমে থেমে প্রবল বর্ষন আর উজান থেকে ধেয়ে আসা পাহাড়ী ঢলে উপজেলা সদর সহ বিভিন্ন হাট-বাজার ও গ্রামাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ নতুন করে বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছেন। নতুন বন্যার কবলে পড়ে উপজেলা ২৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে নতুন করে ১৫০ পরিবার আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন। বানের জলে ভেসে গেছে শতাধিক ছোট -বড় মৎস্য খামার। বীজতলা তৈরী করতে পারছেন না কৃষক কুল। হাওরপাড়ের গ্রাম দেখা দিয়েছে খাবার,বিশুদ্ধ পানি ও গোখাদ্যের। মরনব্যাধী করোনা ভাইরাস এর সংকটময় মুহূর্তে বন্যা দুর্গত মানুষ দিশে হারা হয়ে পড়েছেন। শহর ও শহর সংলগ্ন গ্রাম গুলোতে সরকারি ও বেসরকারি এমনকি ব্যক্তি উদ্যোগে বিতরণকৃত ত্রান সামগ্রী বিতরণ করা হলেও তা প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে নন্যুতম কম। বিদায় বন্যা কবলিত অসহায় মানুষের দুর্ভোগ লাগবে সরকারি ত্রাণ সহায়তা বৃদ্ধি করা একান্ত প্রয়োজন বলে মনে করছেন এলাকার সচেতন মহল।
    কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল হাসিম ও চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান মোঃ আরশ মিয়া বলেন, দুই দফা বন্যার দুর্ভোগ কেটে ওঠার আগেই আবারও তৃতীয় দফা বন্যায় সমগ্র উপজেলাবাসী দুর্ভোগে পড়েছেন।
    জগন্নাথপুর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ ইয়াসির আরাফাত বলেন, জগন্নাথপুরে ২৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে গতকাল পর্যন্ত ১৫০টি পরিবার নতুন করে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। আমরা তাদেরকে ত্রাণ সহায়তা চালিয়ে যাচ্ছি।
    সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোঃ আবদুল আহাদ বলেন, তৃতীয় দফা বন্য পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা বন্যা দুর্গতদের পাশে থেকে কাজ করছি। গত দুইদিনে জগন্নাথপুরে পানি বেড়েছে। আমরা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।

    আরও খবর

    Sponsered content