প্রতিনিধি ১৭ জুলাই ২০২০ , ৫:৫৪:৩৫ অনলাইন সংস্করণ
ঠাকুরগাঁও থেকে মাহমুদ আহসান হাবিব: আসন্ন ঈদ উল আযাহা (কোরবানি) যতই ঘনিয়ে আসছে ঠাকুরগাঁয়ের পশু খামারিদের দুশ্চিন্তা ততই বাড়ছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ না কমায় খামারিদের যেন চিন্তার শেষ নাই।
করোনার এ দু,সময়ে পশু বাজারে নিতে পারবেন কিনা, বাজারে নিলেও ক্রেতা মিলবে কিনা, ক্রেতা মিললেও দাম সঠিক পাবেন কিনা এসব নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন গরু খামারিরা। আর এদিকে আবার গরুর লাম্পই রোগে ভুগছে খামারিরা।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সুত্রে জানায়, এবার ঠাকুরগাঁওয়ে জেলা-উপজেলা মিলে গরুর খামার ১১৭৮২। আর গরুর সংখ্যা ৮০ হাজার ৪৫৯। বাজারে উঠবে অনেক গরু কিন্তু গুটি রোগ এবং লম্পিং যে রোগ দেখা দিয়েছে তাতে ক্রেতা কম হতে পারে।
গরুর খামারি মাসুমা জানান, করোনা নিয়ে তারা এখনো দুশ্চিন্তামুক্ত হতে পারেননি। মূলত কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে সারা বছর গরু লালন-পালনে তারা মোটা অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করেন। তাই এখন পশু বিক্রি করতে না পারলে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়বেন মাসুমা। একই এলাকার বাচ্চু, হাবিব বলেন, সারাবছর গরু মোটাতাজা করে কুরবানির ঈদের অপেক্ষায় থাকি। কুরবানিতে লাখ টাকায় বিক্রির আশায় ভালো ভালো খাবার খাইয়ে লালন-পালন করি। তার ভালো দাম না পাই তাহলে লোকসান হবে অনেক।
অন্যদিকে ভাউলার হাট নাপিত পাড়া গরুর খামারি মোতাহার জানান, এবার তিনি ৫টি গরু মোটাতাজা করেছি। এত টাকা বিনিয়োগ করে যদি কুরবানির ঈদে দাম ভালো না পাই তাহলে আমাদের মতো খামারিদের দুঃখের সীমা থাকবে না।
তিনি আরও জানান, ঋণ করে কুরবানির আশায় গরু পালন করেছি। করোনার বর্তমান অবস্থায় এখন আতঙ্কের মধ্যে আছি। সারা বছর পরিশ্রম করে গরু পালন করি। কয়েক বছর ধরে ঢাকার বড় বড় ব্যবসায়ীরা আমাদের কাছ থেকে গরু কিনে অনলাইনে ছবি দিয়ে বিক্রি করে ফায়দা লোটে। তার মধ্যে এবার গো-খাদ্যের দাম অত্যধিক বেড়ে গেছে। এ কারণে গরু পালনে খরচও বেড়েছে।
এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কৃষিবিদ আলতাফ হোসেন বলেন, এ বছরও আমাদের দেশে যে পশু আছে তা কুরবানির জন্য যথেষ্ট। দেশের বাইরে থেকে গরু আনার কোনো প্রয়োজন নেই। গত বছর অমাদের কুরবানিযোগ্য পশু ছিল প্রায় এক লাখের উপরে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ঠাকুরগাঁও অসংখ্য গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া খামারও গড়ে উঠেছে। গ্রামের বিধবা মহিলা বা সাধারণ কৃষক থেকে শুরু করে লাখ লাখ মানুষ গরু, ছাগল, ভেড়া পালন করেন। এখন অনেক শিক্ষিত যুবক ডেইরি ফার্ম ও গরু মোটা তাজাকরণকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন