• ক‌্যাম্পাস

    দারিদ্রতার কাছে ডুমুরেরফুল “অনলাইন শিক্ষা”–ফারজানা মৃদুলা

      প্রতিনিধি ২৮ জুন ২০২০ , ৯:০১:২০ অনলাইন সংস্করণ

    ফারজানা মৃদুলা

    করোনা মহামারির ভয়াবহতা দেশের সর্বস্থরের মানুষ আজ আতংকিত। এই মহামারির রুখতে প্রানপনে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে সরকার ও দেশবাসী। কভিড-১৯-এর কারণে অর্থনীতি, ব্যবসা, পর্যটন এবং শিক্ষা যেন পুরোপুরিভাবে থমকে গেছে।
    ইতিমধ্যেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি আগস্টের ৬ তারিখ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
    করোনা কারনে সরকারের পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক এই ব্যবস্থা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা ক্লাস এবং পরীক্ষার অনিশ্চয়তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে অলস সময় পার করতে করতে লেখাপড়ায় অনাগ্রহ তৈরী হচ্ছে। প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
    করোনাভাইরাস মাহমারী শুরু হওয়ার পর অনলাইন বা ডিজিটাল লেখাপড়া নিয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম । কিন্তু আমাদের দেশে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বর্তমানে ব্যয়বহুল যেখানে কিনা বেশীরভাগ উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত পরিবার গুলোর সন্তানরা ভর্তি হয়ে লেখাপড়ার সুযোগ পায়।
    এই মহামারীর কালে বড় শহরে কিছু স্কুল অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও গ্রামের শিশুরা তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তা হয়ত বা আমাদের নজরেই পড়ছে না। আবার সরকারি টেলিভিশনে পাঠদান অনুষ্ঠান হলেও অনেকে এখনো তা জানেনই না।ফলে এই অনলাইন ভিক্তিক লেখাপড়ার সুযোগ থেকে অনেক শিশুরাই পিছিয়ে আছে। আমাদের দেশে বহু পরিবার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাস করে, অনলাইন শিক্ষা সেখানে পৌঁছানোও বেশ কঠিন।এছাড়া গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সর্বরাহও শহরের মতো এতো উন্নত নয়।একবার বিদ্যুৎ চলেগেলে আসতে অনেকটা বিলম্ব হয়।
    হয়ত বা এই প্রযুক্তির ছোঁয়া তাদের কাছে ডুমুরেরফুল!
    আমাদের দেশে অনেক শিশুরাই দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করে, তাই তারা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত বরাবরই।এসব শিশুদের বাবা-মায়েরা দরিদ্র আর চিরাচরিত নিয়মের চাদরে তাদের সন্তানও এই দারিদ্রের ছকের মধ্যে আটকে যায়।
    বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখন অনলাইন এর মাধ্যমে তাদের পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছে। সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশের ছাত্র-ছাত্রীরা যেন অবহেলিত ভাবে ছিটকে পড়ছে। এই মূহুর্তে বিশেষ ভাবে দৃষ্টি দেওয়া অতিজরুরি কর্তৃপক্ষের।অনলাইনে পাঠদানের ক্ষেত্রে তাদের কথা সবার আগে বিবেচনায় নিতে হবে। এই ডিজিটাল যুগে এসে মনে হয় না অনলাইন ক্লাসে কারও অনীহা বা আপত্তি
    থাকাবে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের আর্থিক দিক টা ভালোভাবে পরোখ করে দেখা উচিত।

    আমাদের দেশে যারা লেখাপড়া করে, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় সব পর্যায়ে এখনো অবদি ধনীর চেয়ে দরিদ্রর সংখ্যা বেশি। শহরের চেয়ে বেশি শিক্ষার্থী গ্রামে থাকে,এবং তাদের বেশীরভাগ পরিবারগুলো কম্পিউটার বা স্মার্টফোন কেনার ক্ষমতা নেই হয়ত বা তাদের কাছে এইটা বিলাসিতা ।
    স্কুল কবে খুলবে তার কোনো নিশ্চয়তা না থাকায় অনেকগুলো স্কুলে অনলাইনে শিক্ষাদান করা হচ্ছে সরাসরি। এইদিক দিয়ে বিবেচনা করলে সেই সকল শিক্ষার্থীরা তাল মিলাতে পারছে না। এছাড়া ও টিভিতে তৃতীয় শ্রেণী থেকে একাদশ শ্রেণী পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠদান করা হয়।কিন্তু তার সত্বেও বহু শিক্ষার্থী বঞ্চিত।
    সরকারি হিসেবে দেশে প্রাথমিক স্কুল আছে ৬৪ হাজার আর অন্যদিকে সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে মাধ্যমিক স্কুল আছে আরও সতের হাজারের মতো। আর কলেজ বা মহাবিদ্যালয় আছে প্রায় আড়াই হাজার।

    আর সব মিলিয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় পাঁচ কোটি।
    করোনায় স্বল্প একটি অংশই অনলাইনে শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে!টিভি দেখার সুযোগ আছে সব মিলিয়ে ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থীর।

    অর্থাৎ এখনো বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ডিজিটাল শিক্ষা কার্যক্রমের আওতার বাইরেই রয়ে গেছে।তবে কি অনলাইন শিক্ষার কাছে দারিদ্র্য তা অসহায়?

    আরও খবর

    Sponsered content